এফডিসিতে ফুলে-কান্নায় অঞ্জনাকে বিদায়, বনানীতে সমাহিত

বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হয় অঞ্জনা রহমানের মরদেহ। ছবি: স্টার

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমানকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আজ শনিবার দুপুরে এফডিসি প্রাঙ্গণে এসেছিলেন তার সহশিল্পীরা। দুপুর সাড়ে ১২টায় তার মরদেহ এফডিসিতে আনা হয়, প্রথম জানাজা শেষে দুপুর ২টায় নেওয়া হয় চ্যানেল আইতে। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বিকাল ৩টা ১৫ মিনিটে বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হয় সোনালি দিনের এই নন্দিত অভিনেত্রীকে।

এফডিসিতে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন নায়ক আলমগীর, উজ্জ্বল, নতুন,  পরিচালক মতিন রহমান, মিশা সওদাগর, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস, মুক্তি, সুব্রত, মেহেদী। এছাড়া, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি ও চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

চ্যানেল আইয়ে এসেছিলেন কন্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন, ইলিয়াস কাঞ্চনসহ অনেকেই।

তারা অঞ্জনা রহমানকে শ্রদ্ধা জানান ফুল দিয়ে, কেউ ভেঙে পড়েন কান্নায়।

কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, 'আমার খুব কাছের বান্ধবী অঞ্জনা।  কোনোদিন তাকে অসুস্থ হতে দেখিনি। দারুণ হাসিখুশি একজন মানুষ ছিলেন। কী থেকে কী হয়ে গেলো বুঝতে পারছি না! এটা মানা আমার জন্য খুব কষ্টের।'

নায়ক উজ্জ্বল বলেন, 'অঞ্জনাকে হারালাম। এখানে "হারালাম" শব্দটি অবশ্য সঠিক হবে না। আমরা যারাই জন্ম নেই, তারা কর্ম করে চলে যাওয়ার জন্যই পৃথিবীতে আসি। শিল্পী হিসেবে অঞ্জনা প্রচুর কাজ করে গেছেন। অনেক বড় প্রতিভাবান একজন শিল্পী ছিলেন তিনি। সবার সঙ্গে তার আন্তরিক সম্পর্ক ছিল। আমি মনে করি, এটা অঞ্জনার সরলতার অনেক বড় একটা প্রাপ্তি। তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।'

পরিচালক মতিন রহমান বলেন, 'খুব সহজ-সরল ছিলেন অঞ্জনা। জীবনধারা খুব সহজ ছিল। অনেক হাসিখুশি একজন মানুষ ছিলেন। তার হাসিখুশি মুখটা আর দেখতে পাবো না।'

চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস বলেন, 'ঠিক কী বলবো বুঝতে পারছি না। অনেক সিনেমায় তার সঙ্গে অভিনয় করেছি। অনেক কথা মনে আসছে। আমি তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি। ভালো থাকুক, যেখানেই থাকুক।'

অভিনেতা মিশা সওদাগর বলেন, 'তিনি একজন মানবিক শিল্পী ছিলেন। কোনো দিন কারো বিরুদ্ধে তাকে কিছু বলতে শুনিনি। গতকাল রাতেও হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম। খুব কষ্ট হচ্ছে তার জন্য।'

অভিনেত্রী অঞ্জনা ১৯৮১ সালে 'গাংচিল' ও ১৯৮৬ সালে 'পরিণীতা' চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য দুইবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

চলচ্চিত্র জগতে আসার আগে তিনি একজন নামী নৃত্যশিল্পী ছিলেন। অঞ্জনার অভিনয় জীবন শুরু হয় ১৯৭৬ সালে বাবুল চৌধুরী পরিচালিত 'সেতু' দিয়ে। তবে তার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র শামসুদ্দিন টগর পরিচালিত 'দস্যু বনহুর' (১৯৭৬)।

১৯৭৮ সালে তিনি আজিজুর রহমান পরিচালিত 'অশিক্ষিত' চলচ্চিত্রে নায়ক রাজ রাজ্জাকের বিপরীতে লাইলি চরিত্রে অভিনয় করেন। রাজ্জাকের বিপরীতেই ৩০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।

অভিনেত্রী অঞ্জনা বিএসএমএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোররাত ১টা ১০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

ডিসেম্বরের শুরুতে জ্বরে আক্রান্ত হন অঞ্জনা। জ্বর না কমায় গত ২২ ডিসেম্বর তাকে বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কয়েক দিন করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।

Comments

The Daily Star  | English
Strategies we can employ in tariff talks with the US

US tariff talks: Bangladesh writes to USTR, seeking date

The negotiation team from Bangladesh will fly to America once the USTR fixes a date for the talks

9h ago