দামে ধস: চট্টগ্রামে রাস্তা থেকে ১০ টন পচা চামড়া অপসারণ

চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট মোড়ে বুলডোজার দিয়ে চামড়া অপসারণ করছে সিটি করপোরেশন। ছবি: স্টার

ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়ার দামে বিপর্যয় নেমেছে চট্টগ্রামে। সরকার নির্ধারিত মূল্যের অনেক কমেও চামড়া বিক্রি করতে না পেরে অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ী অবিক্রিত ও পচে যাওয়া চামড়া ফেলে দিয়েছেন নগরীর বিভিন্ন রাস্তায়। 

আজ রোববার বিকেল পর্যন্ত রাস্তা থেকে প্রায় ১০ টন পচা চামড়া অপসারণ করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)।

ঈদের দিন থেকেই নগরীর আতুরার ডিপো, আগ্রাবাদ-চৌমুহনী ও দেওয়ানহাটের মতো প্রধান চামড়ার বাজারগুলোতে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েন। ন্যায্য দাম না পাওয়ায় এবং সংরক্ষণের অভাবে চামড়া পচে যেতে শুরু করলে অনেক ব্যবসায়ী তা রাস্তায় ফেলে চলে যান।

চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগের প্রধান কমান্ডার আই ইউ এ চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসায়ীরা রাস্তার মোড়ে মোড়ে গরু ছাগলের চামড়া ফেলে চলে যাওয়ায় আজ সকাল থেকেই দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে। এত পচা চামড়া অপসারণ করতে বুলডোজারের মত ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হয়েছে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১০ টন পচা চামড়া অপসারণ করে সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত দুই ময়লার ভাগাড়ে ফেলা হয়েছে।' 

হাটহাজারী থেকে ১৬০টি পশুর চামড়া নিয়ে আসা মৌসুমি ব্যবসায়ী আবুল হোসেন জানান, ৯৭ হাজার টাকায় কেনা ১৩০টি পশুর চামড়া মাত্র ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পেরেছেন তিনি। বাকি ৩০ পশুর চামড়া রাস্তায় ফেলে দিয়েছেন।

'রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন ও লবণের দাম কম থাকায় এবার আড়তে ভালো দাম পাওয়ার আশা ছিল। কিন্তু এবার আরও খারাপ অবস্থা,' বলেন এই ব্যবসায়ী।

সরকার ঢাকায় লবণ দেওয়া গরুর চামড়ার দাম ঢাকায় প্রতি বর্গফুটে ৬০–৬৫ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৫৫–৬০ টাকা নির্ধারণ করলেও চট্টগ্রামে বাস্তব পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। 

চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি মো. মুসলিম উদ্দিনের দাবি, 'সরকার যেসব দাম ঘোষণা করেছে তা শুধুমাত্র "লবণযুক্ত" ও "ভালো মানের" চামড়ার জন্য। কিন্তু মৌসুমি ব্যবসায়ীরা তা বুঝতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আবার অনেকে ভালোভাবে চামড়া সংগ্রহ করতে পারেননি তাই দাম পাচ্ছেন না।' 

চট্টগ্রামে এবার চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন লাখ, যা গত বছরের (সাড়ে তিন লাখ) তুলনায় ১৪ শতাংশ কম। গত কয়েক বছরে এই সংখ্যা ক্রমান্বয়ে কমেছে। ২০২৩ সালে চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছিল তিন দশমিক নয় লাখ, ২০২২ সালে চার দশমিক এক লাখ, ২০২১ সালে চার দশমিক সাত লাখ, ২০২০ সালে সাড়ে পাঁচ লাখ ও ২০১৯ সালে পাঁচ দশমিক সাত পাঁচ লাখ।

চট্টগ্রামে বর্তমানে প্রায় ২০০টি কাঁচা চামড়ার আড়ত রয়েছে। এই খাতে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ কাজ করছেন।

Comments

The Daily Star  | English
Local gold price hiked

Gold hits all-time high

From tomorrow, each bhori of 22-carat gold will cost Tk 181,487

53m ago