রাখাইনে গোলাগুলি-বিস্ফোরণ, টেকনাফ সীমান্ত এলাকায় আতঙ্ক

মিয়ানমারে গোলাগুলি শুরু হলে হোয়াইকং সীমান্ত এলাকার মানুষ গ্রামের ভেতরে আশ্রয় নেয়। ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের রাখাইনে সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারী গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের ঘটনায় কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। 

আজ শনিবার ভোর থেকে প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় দফায় দফায় মর্টারশেল বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দ শোনা গেছে।

হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ও উপপরিদর্শক খোকন কান্তি রুদ্র দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, সকাল ১০টা পর্যন্ত মিয়ানমারের দিক থেকে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। একইসঙ্গে সীমান্তবর্তী কয়েকটি বাড়িতে গুলি এসে লেগেছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।

বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা খোকন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। 

তাদের ভাষ্য, নবি হোসেনের নেতৃত্বাধীন আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ) ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ চলছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) ভেরিফায়েড নয় এমন একটি আইডি থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এআরএ দাবি করেছে, শনিবারের সংঘর্ষে আরাকান আর্মির ৫ সদস্য নিহত হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সংঘর্ষের একপর্যায়ে একটি মর্টারশেল নাফ নদীতে পড়ে, এতে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা যায়। এ ঘটনায় সীমান্ত এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক আরও বেড়ে যায়।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সিরাজুল মোস্তফা লালু জানান, এলাকার বাজার সংলগ্ন মোহাম্মদ হোসেন ও আবদুল কুদ্দুসের বাড়ির টিনের ছাউনি ভেদ করে একাধিক গুলি ঢুকে পড়ে।

একইভাবে বালুখালী গ্রামের সারোয়ার আলমের বাড়িতেও গুলি লাগে। তবে এসব ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

লালু আরও জানান, নিরাপত্তার আশঙ্কায় সীমান্তবর্তী এলাকার অনেক বাসিন্দা বাড়িঘর ছেড়ে গ্রামগুলোর ভেতরের দিকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইনামুল হাফিজ নাদিম বলেন, সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনার বিষয়ে প্রশাসন খোঁজখবর নিচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ব্যাটালিয়ন ৬৪ এর অধিনায়ককে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

Comments