কোটা আন্দোলনকারীদের খুঁজতে শাহবাগে মোবাইল চেক করেছে ছাত্রলীগ

শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ছবি: রাফিউল ইসলাম/স্টার

শাহবাগের পুলিশ স্টেশনের বিপরীতে হেলমেট পরে লাঠিসোঁটা হাতে অবস্থান নিতে দেখা যায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের।

আজ বুধবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সরেজমিনে এই চিত্র দেখা যায়।

শাহবাগে পুলিশের ব্যারিকেডের কাছে দেখা যায়, ওইদিক দিয়ে ব্যাগ নিয়ে যাওয়া এক তরুণের পথ আটকে মোবাইল ফোন দিতে বলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ছাত্রলীগের একজন তাকে চড়ও মারেন। এরপর ওই তরুণকে ঘিরে ধরে তাকে মোবাইল ফোনের লক খুলে দিতে বাধ্য করেন।

এরপর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ওই তরুণের ফোন চেক করার পর তাকে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন এবং টেনেহিঁচড়ে পুলিশ স্টেশন প্রাঙ্গণে নিয়ে যায়।

এই ঘটনার সময় শাহবাগে অন্তত ১০০ জন পুলিশ ও আনসার সদস্য ছিলেন।

শুধু এই ঘটনাই নয়, ৪০ মিনিট শাহবাগে অবস্থান করে একই ধরনের ছয়টি ঘটনা দেখা গেছে।

শাহবাগে পুলিশের ব্যারিকেড দিয়ে যারাই ঢাবি ক্যাম্পাসে প্রবেশ বা বেরোবার চেষ্টা করেছে, কোটা আন্দোলনকারী সন্দেহে তাদের অনেকেরই মোবাইল ফোন এভাবেই চেক করছিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

যে তরুণকে টেনেহিঁচড়ে শাহবাগ থানা প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয়, তার খোঁজ নিতে গিয়েও পাওয়া যায়নি।

কিছুক্ষণ পর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আরও এক তরুণকে আটকায়। তারা এই তরুণের ফোনও চেক করে এবং একজন তার পেছনে ঘুষি মারে। তবে, কিছুক্ষণ মোবাইল চেক করার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ওই সময় ডেইলি স্টারের প্রতিবেদককে দেখে তার পরিচয় জানতে চায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এরপর সাংবাদিক পরিচয় দিলে তারা সেখান থেকে চলে যেতে বলেন এবং ক্যাম্পাসের ভেতর গিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে বলেন।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মোবাইল চেক করতে দেখার আগে কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে দেখা হয় এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কবি জসিম উদ্দীন হলের ওই শিক্ষার্থী বলেন, 'শুনেছি শিক্ষার্থীদের যারা ক্যাম্পাস ছাড়ছেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের হয়রানি করছেন। সেজন্য বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত হল প্রাঙ্গণেই অপেক্ষা করেছি।'

'বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে পাবলিক লাইব্রেরির সামনে গিয়ে দেখি শাহবাগ মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেডের কাছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে আছেন। পরে ক্যাম্পাসে ফিরে আসি। তাদের দেখে ভয়ে পেয়েছি। এখন বিকল্প পথে কীভাবে যাওয়া যায়, সেটা ভাবছি', বিকেল ৪টার দিকে বলেন এই শিক্ষার্থী।

Comments

The Daily Star  | English
Yunus, Charter, and Our Future

Yunus, Charter, and Our Future

Can the vision for 'New Bangladesh' ignore the poor, farmers, workers, youth, women, or employment and climate crises?

8h ago