'ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রশ্নবিদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র-নৈতিকতা'

ডোনাল্ড ট্রাম্প । ছবি: ফাইল ফটো রয়টার্স

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন—এটা এখন পুরনো খবর। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তিনিই প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হলেন। বিশ্লেষকদের মতে, এ ঘটনায় শুধু রিপাবলিকান দলই নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সমগ্র মার্কিন জাতি।

আজ শুক্রবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে, এ ঘটনায় গোটা বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হতে পারে।

সর্বশেষ ১৮৭২ সালে সে আমলের তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউলিসিস এস. গ্রান্টকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার অপরাধ, সর্বোচ্চ গতিসীমার ঊর্ধ্বে ঘোড়ায় টানা গাড়ি হাঁকিয়েছিলেন তিনি। তবে এ ঘটনার কিছুদিন আগেই মার্কিন গৃহযুদ্ধে (সিভিল ওয়ার) জয়ী ইউনিয়ন বাহিনীকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি, যার ফলে এই অভিযোগ ধোপে টেকেনি।

বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই সাবেক রাষ্ট্রপ্রধানের অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত হওয়া ও হাজতবাসের ঘটনা শোনা যায়। এটা কোনো নতুন ঘটনা নয়। শত শত রাষ্ট্রপ্রধান, প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও সামরিক শাসককে তাদের রাজপ্রাসাদ বা রাষ্ট্রীয় কার্যালয় থেকে ধরে-বেঁধে সরাসরি কারাগারে পাঠানোরও নিদর্শন রয়েছে।

তবে এতদিন যুক্তরাষ্ট্র এ দিক দিয়ে নিজেদেরকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে দাবি করে এসেছে। ওয়াশিংটনকে সারা বিশ্বের নৈতিকতা ও গণতন্ত্র চর্চার আলোকবর্তিকা হিসেবে দেখা হয় এবং যুক্তরাষ্ট্রও এই ভাবমূর্তি রক্ষায় অনেক সচেষ্ট থাকে। 

এ ক্ষেত্রে প্রচলিত রীতি ভেঙে 'সাবেক রাষ্ট্রপ্রধানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ আনা' দেশের দলে যোগ দেওয়ার বিষয়টি শুধু ট্রাম্পের জন্যই সমস্যা নয়—এটি মার্কিন জাতির আত্মপরিচয় ও আত্মবিশ্বাসের ওপর একটি বড় আঘাত বলেই ভাবছেন বিশ্লেষকরা।

'গণতন্ত্রের সর্বোচ্চ প্রতীক' হিসেবে পরিচিত ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিল ইতোমধ্যে ২০২১ এর ৬ জানুয়ারিতে আক্রান্ত হয়েছে। সে সময় দেখা যায়, মার্কিন পার্লামেন্ট সদস্যরা উত্তেজিত জনতার হামলা থেকে বাঁচতে প্রাণ নিয়ে পালাচ্ছেন। এখনো এ ঘটনার দায় স্বীকার করেননি ট্রাম্প এবং তাকে কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচনে হারানো হয়েছে, এ যুক্তিতেও অটল তিনি। 

এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চীনের আক্রমণাত্মক মনোভাব ও ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখন নানামুখী ভূরাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, যার সম্মিলিত প্রভাবে দেশটির বৈশ্বিক ভাবমূর্তি হুমকির মুখে।

ইতিহাসবিদরা বিংশ শতাব্দীকে 'যুক্তরাষ্ট্রের শতাব্দী' বলে আখ্যায়িত করেছিলেন—আসলেই কী তা ঘটছে?

এখনও এ প্রশ্নের উত্তর নেই।

Comments

The Daily Star  | English

‘This fire wasn’t an accident’: Small business owner’s big dreams destroyed

Once a garment worker, now an entrepreneur, Beauty had an export order ready

5h ago