বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাফল্য

দেশে বিলুপ্তপ্রায় বাতাসী মাছের পোনা উৎপাদন

বাতাসী মাছ। ছবি: সংগৃহীত

কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে বিলুপ্তপ্রায় বাতাসী মাছের পোনা উৎপাদনে সফল হয়েছে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই)।

বগুড়া জেলার সান্তাহারে অবস্থিত ইনস্টিটিউটের ‘প্লাবনভূমি উপকেন্দ্রে’ এই সফলতা অর্জিত হয়।

বিএফআরআই’র মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ আজ রাতে দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দেশে এবারই প্রথমবারের মতো কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে বিলুপ্তপ্রায় বাতাসী মাছের উৎপাদন করা হয়েছে বলেও দ্য ডেইলি স্টারকে জানান তিনি।

এ সাফল্য বিলুপ্তপ্রায় বাতাসী মাছ চাষের জন্য মাঠ পর্যায়ের চাষিরা ব্যাপকভাবে আগ্রহী হবেন এবং বাতাসী মাছ বাজারে সহজলভ্য হবে বলে আশা করছেন মৎস্য গবেষকরা।

বিএফআরআই সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে আইইউসিএন’র তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে স্বাদুপানির ২৬০টি মাছের মধ্যে ৬৪টি প্রজাতি বিলুপ্তপ্রায়। এরমধ্যে ৯টি অতিবিপন্ন, ৩০টি বিপন্ন এবং ২৫টি বিপন্নের পথে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ২৫টি বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রজনন ও চাষাবাদ কৌশল উদ্ভাবনে সক্ষম হয়েছে। গত ১৯ মে ওই তালিকায় সংযোজন হলো বাতাসী মাছ। এই প্রজাতির মাছ সাধারণত বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল এবং মিয়ানমারে বেশি দেখা যায়।

মৎস্য বিজ্ঞানীরা জানান, এক সময় ময়মনসিংহ অঞ্চলের খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্র নদে চেলা, গাঙমাগুর, বাছা, গাউড়া, বাতাসী ও কাজলিসহ অনেক প্রজাতির ছোট মাছ পাওয়া যেত। বর্তমানে ব্রহ্মপুত্র নদসহ কয়েকটি নদী ও হাওর অঞ্চলে বাতাসী মাছ খুব কমই পাওয়া যায় এবং হাটবাজারে প্রতি কেজি ৬০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়।

বাতাসী মাছের গবেষকদলের প্রধান ড. ডেভিড রিন্টু দাস দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বাতাসী মাছ একটি পুষ্টিসমৃদ্ধ মাছ। প্রতি ১০০ গ্রাম খাবার উপযোগী বাতাসী মাছে পটাশিয়াম ৬১০ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৪০০ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ২০০ মিলিগ্রাম, জিংক ১৪.৪ মিলিগ্রাম, আয়রন ৩৩.০মিলিগ্রাম এবং ম্যাঙ্গানিজ ২০০ মিলিগ্রাম আছে। যা অন্যান্য দেশীয় ছোট মাছের তুলনায় অনেক বেশি। জিংক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

করোনাকালে বাতাসী মাছ বেশি করে খাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন তিনি।

বিএফআরআই’র মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বিলুপ্তপ্রায় মাছ পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্যে ইনস্টিটিউটের গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। বর্তমানে পিয়ালী, কাজলী, কাকিলা, রাণী ও গাং টেংরাসহ আরও আটটি মাছ নিয়ে গবেষণা চলছে। ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ায় দেশীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল বিলুপ্তপ্রায় মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল উদ্ভাবনের মাধ্যমে চাষি পর্যায়ে চাষাবাদের মাধ্যমে দেশীয় সকল ছোট মাছ ফিরিয়ে আনা হবে।’

দেশীয় মাছ সংরক্ষণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ময়মনসিংহের স্বাদুপানি কেন্দ্রে ২০২০ সালে একটি ‘লাইভ জীন ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে জানান মহাপরিচালক।

Comments

The Daily Star  | English

Dozens of zombie firms still trading as if nothing is wrong

Nearly four dozen companies have been languishing in the junk category of the Dhaka Stock Exchange (DSE) for at least five years, yet their shares continue to trade on the country’s main market and sometimes even appear among the top gainers. 

1h ago