বর্ষার আগমনীতে ব্যস্ততা বেড়েছে ‘চাঁই’ কারিগরদের

বর্ষার আগমনীতে কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে বাঁশের ‘চাঁই’ তৈরির কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়েছে। ছবি: স্টার

পঞ্জিকার পাতা অনুসারে তপ্ত গ্রীষ্মের কাল ফুরিয়ে আসছে। জ্যৈষ্ঠের শেষভাগে এখন প্রায় প্রতিদিনই ঝুম বৃষ্টির পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়া জানান দিচ্ছে বর্ষা ঋতুর আগমনী বার্তা। বর্ষার নতুন পানিতে মাছ ধরা পড়ে বেশ। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে মৎস্যজীবীদের তৎপরতা। তাই বর্ষার আগমনীতে কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে বাঁশের ‘চাঁই’ তৈরির কারিগরদের ব্যস্ততাও বেড়েছে।

দুই জেলার ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও ধরলা নদীর পাড় এবং চরগুলোতে বসবাসরত অনেক মানুষ বর্ষায় মাছ ধরার ফাঁদ হিসেবে এসব চাঁই ব্যবহার করেন। তাই ব্যাপক চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক কারিগর বর্ষা ঋতুকে সামনে রেখে আগে-ভাগেই নেমে পড়েছেন চাঁই তৈরির কাজে।

এমন একজন ব্যক্তি হচ্ছেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার খাদেম আলী (৪৮)। বর্ষাকাল সামনে রেখে এক মাস আগ থেকেই তিনি নানা আকারের চাঁই তৈরির কাজ করছেন।

দ্য ডেইলি স্টারকে খাদেম আলী জানান, এলাকার হাট-বাজারে তার তৈরি চাঁইগুলো আকারভেদে ৭০ থেকে  দেড় শ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়। প্রতিটি  চাঁইয়ে ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মতো লাভ থাকে।

তিনি বলেন, ‘এখন প্রতিদিন গড়ে ১০টার মতো চাঁই বিক্রি হচ্ছে। ভরা মৌসুমে বিক্রি আরও বাড়বে।’

আবার দেখা যায়, সারা বছর অন্য কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করলেও বর্ষা মৌসুমে চাঁই তৈরি ও বিক্রির কাজে যুক্ত হন অনেকে। যেমন চিলমারীর আতিয়ার রহমান (৫০)।

এখন ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে জোড়গাছ হাটে চাঁই বিক্রি করছেন আতিয়ার। তিনি মূলত একজন কৃষি শ্রমিক। পাশাপাশি দিনমজুরের কাজ করেন।

আতিয়ার বলেন, ‘নদী পাড়ের মানুষের কাছে চাঁইয়ের ভালো চাহিদা আছে। তাই বর্ষা আসার আগে-পরের পুরোটা সময়  চাঁই তৈরির কাজই করি।’

লালমনিরহাট সদরের রাজপুর বাজারের চাঁই বিক্রেতা রঞ্জিত চন্দ্র দাসের (৪৫) ভাষ্য, বাঁশের দাম বেড়ে যাওয়ায় চাঁই তৈরির কাজে আগের মতো লাভ নেই। আর বর্ষা ছাড়া বছরের বাকি সময়ে এর তেমন চাহিদা থাকে না।

কুড়িগ্রাম সদর এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের বুকে জেগে ওঠা চর পার্বতীর কৃষক দিলবর হোসেন (৫৬) মাছ ধরার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে এর মধ্যেই দুটি চাঁই কিনে ফেলেছেন।

চর যাত্রাপুরের আরেক কৃষক সপোত আলী (৫৭) বলেন, ‘একটা চাঁই এক মৌসুমের বেশি ব্যবহার করা যায় না। তাই প্রতি বছরই নতুন করে কিনতে হয়।’

Comments

The Daily Star  | English

Shibir-backed candidates Shadik, Farhad leading in top two Ducsu posts

Counting going on till 6:00am; turnout 78% in polls marked by festivities

4h ago