‘খেলতে না পারলে মানুষ ভুলে যায়’

এনসিএল টি-টোয়েন্টি চলাকালীন এক ইনজুরি মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধর পুরো ঘরোয়া মৌসুমটাই প্রায় শেষ করে দিচ্ছিল। তবে মাঠে ফিরেই লাল বলের এনসিএলে রংপুর বিভাগের শিরোপা জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, মাত্র চার ম্যাচে ২৯ উইকেট নিয়ে হয়েছেন টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি এবং সেরা খেলোয়াড়।

দ্য ডেইলি স্টারের সামসুল আরেফিন খানের সঙ্গে আলাপে ২৫ বছর বয়সী মুগ্ধ কথা বলেছেন দলের অবিশ্বাস্য ঘুরে দাঁড়ানো, নিজের চোট সেরে ওঠার পথ এবং সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে। সাক্ষাৎকারের নির্বাচিত অংশ তুলে ধরা হলো—

ডেইলি স্টার: আপনার জন্য এবং রংপুর বিভাগের জন্য দুর্দান্ত একটি এনসিএল কেটেছে। খুলনার বিপক্ষে শেষ ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ১৩৪ রানের লিড দেওয়ার পরও আপনারা দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ালেন। এমন প্রত্যাবর্তন কীভাবে সম্ভব হলো?

মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ: দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা প্রথম ইনিংসে ছয়টা ক্যাচ ফেলেছিলাম, আর কয়েকটা ভুল আম্পায়ারিং সিদ্ধান্তও হয়েছিল, যা তাদের ভালো রান তুলতে সাহায্য করে।

তারপর আমরা নিজেদের ইনিংসে হোঁচট খেলাম। আমি যখন ব্যাটিংয়ে গেলাম, তখন (ক্যাপ্টেন) আকবর ভাই আমাকে বললেন, 'যতক্ষণ পারো টিকে থাকো। আমরা যদি ফলো–অন এড়াতে পারি, ম্যাচ এখনো ঘুরে যেতে পারে।' বাবু ভাই ব্যাটিং করছিলেন আমার সঙ্গে, আমরা মিলে ফলোঅন এড়াতে পেরেছিলাম।

ইনিংস শেষে পুরো দল একসঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিল, হারানোর কিছু নেই। সবাই নিয়ন্ত্রিত বোলিং করল, আর আমরা খুলনাকে ৯৬ রানে অলআউট করতে পারলাম। এরপর ব্যাটাররা দুর্দান্তভাবে কাজটা শেষ করে দিল।

ডেইলি স্টার: ইনজুরির কারণে আপনি এনসিএল টি-টোয়েন্টির বেশিরভাগ ম্যাচ মিস করেছেন। ফিরে আসার পথ কতটা কঠিন ছিল?

মুগ্ধ: প্রথম এনসিএল টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাউন্ডারি বাঁচাতে গিয়ে গ্রেড-টু হ্যামস্ট্রিং টিয়ার হয়েছিল। বিসিবির ডাক্তাররা বলেছিলেন কমপক্ষে এক মাস লাগবে। রিহ্যাব শেষ করলেও পুরোপুরি ঠিক হয়নি।

আমি ফিরতে চাইছিলাম, কিন্তু পুনরায় ইনজুরির ঝুঁকির কারণে মেডিক্যাল টিম প্রথমে অনুমতি দেয়নি। তাই দীর্ঘ ভার্সনের প্রথম দুই ম্যাচ মিস করেছি। পরে আমি জানালাম আমি প্রস্তুত মনে করছি, শেষ পর্যন্ত তারা ক্লিয়ারেন্স দিল। তবে এখনো পুরোপুরি ঠিক হইনি, আলতো ব্যথা আছে।

ডেইলি স্টার: পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আগে কেন ঝুঁকি নিলেন?

মুগ্ধ: ফিজিওরা আগেই বলেছিলেন ফেরাটা ঝুঁকিপূর্ণ হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আপনি যদি খেলতে না পারেন, মানুষ আপনাকে ভুলে যায়। এনসিএল টি-টোয়েন্টি মিস করেছি, সামনে বিপিএল, ভাবলাম যদি এনসিএলেই পারফর্ম করতে না পারি, হয়তো বিপিএলেও দল পাব না। তাই নিজেকে বলেছি মানসিকভাবে শক্ত থাকতে হবে। যাই হোক, কঠোর পরিশ্রম করে খেলতে হবে।

ডেইলি স্টার: একসময় আপনাকে জাতীয় দলের দুয়ারে কড়া নাড়তে দেখা যাচ্ছিল, এখন যেন অনেক দূরে। কী হলো?

মুগ্ধ: সত্যি বলতে আমি জানি না। আমার কাজ পারফর্ম করা, সুযোগ পেলেই চেষ্টা করি সেরাটা দিতে। নির্বাচন আমার হাতে নেই।

ডেইলি স্টার: আপনি এখন বিসিবির কোনো প্রোগ্রামেই নেই। এটি কতটা চ্যালেঞ্জিং?

মুগ্ধ: গত দুই বছর কোনো ক্যাম্পে নেই। ক্যাম্পে থাকলে অনেক সাহায্য পাওয়া যায় -কোচ, ফিজিও, ট্রেনার সবাই নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করেন। গঠনমূলক ট্রেনিং ফিটনেসের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাইরে থাকলে সবকিছু নিজের মতো করে সামলাতে হয়। কঠিন, কিন্তু খেলোয়াড়রা তবুও চেষ্টা করে।

ডেইলি স্টার: এনসিএল থেকে বিপিএলের মাঝে দুই সপ্তাহ বিরতি আছে। এটি আপনার পুনরুদ্ধারের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

মুগ্ধ: আলহামদুলিল্লাহ, খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিসিবিতে গিয়ে আবার হ্যামস্ট্রিং চেক করাব। ফিজিওরা অবস্থা দেখে পরের ১০ দিনের জন্য একটি প্রোগ্রাম দেবেন, সেটাই অনুসরণ করব।

ডেইলি স্টার: বিপিএলে চট্টগ্রাম রয়্যালসের হয়ে খেলবেন। লক্ষ্য কী?

মুগ্ধ: আমার প্রথম লক্ষ্য ফিট থাকা। আমি যদি ফিট থাকতে পারি, বিশ্বাস করি যেকোনো জায়গায় পারফর্ম করতে পারব। বিপিএল খুব প্রতিযোগিতামূলক, সুযোগ কখনোই নিশ্চিত নয়। আল্লাহ যদি নসিবে রাখেন, সুযোগ এলে সেরাটা দিতে চেষ্টা করব।

Comments

The Daily Star  | English

Protests held in Sylhet over Hadi’s death, Prothom Alo office attacked

Protests held in Sylhet over Hadi’s death, Prothom Alo office attacked

10m ago