'এটিপি ট্যুরে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই'

জারিফ আবরার, একজন ১৭ বছর বয়সী কিশোর, অল্প সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশের টেনিসে আশার আলো হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। একাদশ শ্রেণির এই শিক্ষার্থী সম্প্রতি জাতীয় টেনিস প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন এবং ইতোমধ্যে জুনিয়র ও সিনিয়র উভয় স্তরে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থিত হবসন পারফরম্যান্স টেনিস একাডেমিতে খ্যাতনামা কোচ অ্যাশলে হবসনের অধীনে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন জারিফ। সম্প্রতি তিনি ডেইলি স্টারের আনিসুর রহমানের সঙ্গে তার বর্তমান প্রশিক্ষণ, টেনিসের যাত্রা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ নিচে তুলে ধরা হলো।

ডেইলি স্টার: জাতীয় টেনিস প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরপরই আপনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণের জন্য পাড়ি জমিয়েছেন। কেমন চলছে প্রশিক্ষণ?

জারিফ আবরার: প্রশিক্ষণ চমৎকার চলছে। এখানে একটু কঠিন, তবে আমি মনে করি, উন্নতির জন্য এটি জরুরি। আমি এখানে ছয় মাস থাকবো।

ডেইলি স্টার: আপনি ২০২৩ সালে একই একাডেমিতে দু'বার প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। কেন এই একাডেমি বেছে নিলেন?

জারিফ: আমার বাবা (মো. সাজমুল হক) কোচ অ্যাশলে হবসনের সম্পর্কে বিশদ গবেষণা করেছিলেন। আন্তর্জাতিক টেনিস অঙ্গনে তার অসাধারণ অভিজ্ঞতা রয়েছে, যা আমাকে এগিয়ে নিতে পারফেক্ট।

ডেইলি স্টার: আপনার চূড়ান্ত লক্ষ্য কী?

জারিফ: আমার লক্ষ্য আন্তর্জাতিক পেশাদার টেনিস সার্কিট, এটিপি ট্যুরে অংশগ্রহণ করা এবং বাংলাদেশকে গর্বিত করা।

ডেইলি স্টার: অ্যাশলে হবসনের অধীনে প্রশিক্ষণের খরচ কত এবং এতে আপনার পারফরম্যান্স কতটা উন্নত হয়েছে?

জারিফ: প্রশিক্ষণের খরচ অনেক বেশি—প্রতি মাসে প্রায় পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার। স্পনসরশিপের মাধ্যমে বেশিরভাগ খরচ সামলেছি, বাকিটা আমার বাবা, যিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা, বহন করেছেন। কোচ হবসনের টেকনিক্যাল জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা আমার খেলার মান অনেক উন্নত করেছে, যার ফলে আমি ফ্লোরিডায় পাঁচটি চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা জিতেছি।

ডেইলি স্টার: টেনিসে আপনার আগ্রহ কীভাবে তৈরি হলো?

জারিফ: আমার বাবা একজন দুর্দান্ত টেনিস খেলোয়াড় ছিলেন। তাকে বিভিন্ন ট্রফি জিততে দেখে আমার আগ্রহ জন্মায়। আমি আট বছর বয়সে যশোর ক্যান্টনমেন্টে বিকেএসপির কোচ শরিফুল ইসলাম টিনকুর অধীনে টেনিস শেখা শুরু করি।

ডেইলি স্টার: আপনি বিভিন্ন বয়সভিত্তিক জাতীয় প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ১২ বছর পর অনুষ্ঠিত জাতীয় টেনিস প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন। কেমন অনুভূতি ছিল?

জারিফ: এটি এক অসাধারণ মুহূর্ত ছিল। আমি আমার পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সমর্থনে কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনকে (বিআইএফ) এত বছর পর প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য ধন্যবাদ জানাই।

ডেইলি স্টার: বাংলাদেশের ঘরোয়া প্রতিযোগিতা ও ফ্লোরিডার ইউএসটিএ ইভেন্টের মধ্যে পার্থক্য কী?

জারিফ: আমাদের ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় উন্নতির অনেক সুযোগ আছে। ইউএসটিএ প্রতিযোগিতার মতো মানসম্মত প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞ কোচ দরকার।

ডেইলি স্টার: আপনি ডেভিস কাপে জুনিয়র ও সিনিয়র উভয় স্তরে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। কেমন ছিল অভিজ্ঞতা?

জারিফ: বাংলাদেশের জার্সি পরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে খেলা সবসময়ই গর্বের বিষয়। তবে স্ট্যামিনা, টেকনিক, মানসিক শক্তি ও ম্যাচ টেম্পারামেন্টে আমরা এখনো পিছিয়ে।

ডেইলি স্টার: আপনার শক্তির দিক কোনটি এবং কোথায় উন্নতির দরকার?

জারিফ: আমার মানসিক দৃঢ়তা আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। ম্যাচে প্রবেশের সময় আমি আত্মবিশ্বাসী থাকি। তবে কৌশলগত ও শারীরিক দিকগুলোতে উন্নতির প্রয়োজন।

ডেইলি স্টার: আপনার আদর্শ টেনিস খেলোয়াড় কে?

জারিফ: নোভাক জোকোভিচ।

Comments

The Daily Star  | English
How artistes flamed cultural defiance in July

How artistes flamed cultural defiance in July

From stage to street, artistes and activists led a cultural revolt against brutality and censorship

7h ago