আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

হারের ব্যবধান কমিয়ে মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি

মুম্বাইর ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৪৯ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। প্রোটিয়াদের ৩৮২ রানের জবাবে মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরির পরও দলের সংগ্রহ স্রেফ ২৩৩।

মুম্বাই থেকে

হারের ব্যবধান কমিয়ে মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি

মাহমুদউল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৮২ রান করার পরই ম্যাচের ফল অনেকটা অনুমিত হয়ে পড়েছিল। জবাব দিতে নেমে টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় ১৫ ওভারের মধ্যেই সকল সম্ভাবনাও মিইয়ে যায়। বাদ বাকি সময়ে হারের ব্যবধান কমাতে কেবল লড়ে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টেল এন্ডারদের নিয়ে সেঞ্চুরিও পেয়ে যান তিনি। তার সেঞ্চুরির পরও অবশ্য বিশাল ব্যবধানেই হেরেছে বাংলাদেশ।

মুম্বাইর ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৪৯ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। প্রোটিয়াদের ৩৮২ রানের জবাবে মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরির পরও দলের সংগ্রহ স্রেফ ২৩৩। প্রথম ম্যাচ জেতার পর সাকিব আল হাসানের দল হারল টানা চার ম্যাচ।

পুরো ম্যাচে বোলিংয়ে প্রথম ১০ ওভার ছাড়া কোন পর্যায়েই জেতার কোন পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেনি বাংলাদেশ। খেলার বেশিরভাগ সময় কে জিতবে তা ছিল স্পষ্ট। চরম এক পেশে ম্যাড়ম্যাড়ে লড়াইয়ে ব্যক্তিগত অর্জন ছাড়া লাভ হয়নি কিছু।

বাংলাদেশের নির্মম বাস্তবতা প্রথম ভাগেই মূলত করে দেন কুইন্টেন ডি কক, এইডেন মার্করাম, হেনরিক ক্লাসেন আর ডেভিড মিলার। ১৪০ বলে ১৭৪ রানের ইনিংস খেলেন ডি কক। মার্করাম ৬০ করার পর ক্লাসেন ৪৯ বলে খেলেন ৯০ রানের ইনিংস। মাত্র ১৫ বলে ৩৪ করে দলকে চূড়ায় নিয়ে যান মিলার।

পাহাড়ের জবাব দিতে নেমে কুঁকড়ে থাকা বাংলাদেশ একের পর এক উইকেট হারাতে থাকায় ম্যাচের আয়ু হয়ে যায় সীমিত।  লিটন দাস আউট হতেই প্রেসবক্সে দক্ষিণ আফ্রিকান সাংবাদিকদের পরিসংখ্যান ঘাটাঘাটি শুরু। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জেতার রেকর্ড গড়া তখন বেশ সম্ভব দক্ষিণ আফ্রিকার। '

মাহমুদউল্লাহর লড়াকু ইনিংসে যদিও সেই ফল আর হয়নি। তবে ম্যাচের ফলে তাতে ছিল না বিন্দুমাত্র প্রভাব। দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৮২ রান করার পরও যদি কেউ আশাবাদ জারি রাখেন বাংলাদেশের ইনিংসের ১৫ ওভারের মধ্যেই তাও হাওয়া। ৫৮ রানে ৫ উইকেট পড়ার পর খেলা ওখানেই শেষ।

দক্ষিণ আফ্রিকাও এরপর পেসারদের বিশ্রাম দিতে শুরু করে। টানা ১০ ওভারের স্পেল করেন বাঁহাতি স্পিনার কেশব মহারাজ।

রেকর্ড রান তাড়ায় দুই ওপেনার করেন সতর্ক শুরু। প্রথম কয়েক ওভার পার করে দেওয়ার মানসিকতা দেখা যায় তাদের। তা যদিও হয়নি। সপ্তম ওভারে তানজিদ হাসান তামিম মার্কো ইয়ানসেনের বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন কিপারের হাতে। ১৭ বলে ১২ করে তিনি ফেরার পরের বলেই নাজমুল হোসেন শান্তকে হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ।

ইয়ানসেনের লেগ স্টাম্পের বাইরের বল ফ্লিকের মতো খেলতে গিয়ে কিপারের হাতে জমা পড়েন তিনি। বিশ্বকাপে দুটি গোল্ডেন ডাকের অভিজ্ঞতা হয়ে যায় শান্তর। 

অধিনায়ক সাকিব চারে নেমে ভরসা হবেন কি! তার বিদায় খানিক পরই। লিজার্ড উইলিয়ামসের বলে ব্যাট ছুঁইয়ে তিনিও ধরা পড়েন কিপারের হাতে।

এক প্রান্তে লিটন তখনো অবিচল। তবে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম তার সঙ্গে জুটি বাঁধতে পারেননি। জেরল্ড কোয়েটজেকে আপার কাট করতে গিয়ে থার্ড ম্যানে ক্যাচ দেন ৮ রান করা মুশফিক।

লিটন টিকে থাকলেও বারবারই ধুঁকছিলেন। কাগিসো রাবাদা ভেতরে ঢোকানো বলে বারবার পরীক্ষা নিচ্ছিলেন তার। পুলে এক ছক্কা পেলেও ভেতরে ঢোকা এক বলেই এলবিডব্লিউতে বিদায় লিটনের। ৪৪ বলে থামেন ২২ করে।

এরপরে আর খেলার বাকি ছিল আনুষ্ঠানিকতা। সেটা দেরি করানোর প্রাণপণ চেষ্টা করে গেছেন মাহমুদউল্লাহ। মেহেদী হাসান মিরাজ না পারলেও নাসুম আহমেদ তাকে অনেকটা সঙ্গ দেন।

নাসুমের পর মোস্তাফিজুর রহমানকে এক পাশে রেখে সেঞ্চুরির দিকে এগুতে থাকেন তিনি।

সপ্তম উইকেটে নাসুম আহমেদকে নিয়ে ৪১, হাসান মাহমুদকে নিয়ে ৩৭ আর মোস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে গড়েন অভিজ্ঞ ব্যাটার। জুটিতে অগ্রণী ছিলেন তিনিই। রান যা বাড়িয়েছেন তাতে হারের ব্যবধান কমানো ছাড়া কখনই জেতার অবস্থা তৈরি হয়নি। ৪৬তম ওভারে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১১১ বলে ১১১ রান করা ডানহাতি ব্যাটার।

টস হেরে এর আগে বোলিংয়ে দারুণ শুরু পরে ধরে রাখতে পারেনি সাকিব আল হাসানের দল। ডি কক-ক্লাসেনদের সামনে তাল খুঁজে পাননি মোস্তাফিজ-হাসানরা। প্রথম দশ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৪৪ ছিল দলের পুঁজি। শেষ দশ ওভারে ১৪৪ রান নিয়ে নেয় তারা। 

Comments

The Daily Star  | English

A budget without illusions

No soaring GDP promises. No obsession with mega projects. No grand applause in parliament. This year, it’s just the finance adviser and his unemotional speech to be broadcast in the quiet hum of state television.

8h ago