আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

বাংলাদেশের ইনিংস জুড়ে সেই হতাশা আর আক্ষেপের গল্প

কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে মঙ্গলবার আগে ব্যাটিং নিয়ে পাকিস্তানকে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি দিতে পারল না সাকিব আল হাসানের দল।  স্রেফ ২০৫  রান করে বোলারদের জন্য লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি করতে পারলেন না ব্যাটাররা।

কলকাতা থেকে

বাংলাদেশের ইনিংস জুড়ে সেই হতাশা আর আক্ষেপের গল্প

বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান

শুরুতেই এলোমেলো হয়ে যাওয়া টপ অর্ডারের বিপর্যয় সামলে দারুণ জুটি গড়েছিলেন লিটন দাস আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। থিতু হয়েও দুজনেই ফেরেন অসময়ে। ধুঁকতে থাকা অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এক পর্যায়ে দাঁড়িয়েও শেষ করতে পারেননি। ফের হতাশা আর আক্ষেপের গল্প হয়েই থাকল বাংলাদেশের ইনিংস।

কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে মঙ্গলবার আগে ব্যাটিং নিয়ে পাকিস্তানকে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি দিতে পারল না সাকিব আল হাসানের দল।  স্রেফ ২০৪  রান করে বোলারদের জন্য লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি করতে পারলেন না ব্যাটাররা।

উইকেট ছিলো ব্যাট করার জন্য বেশ ভালো। এমন পিচে টস ভাগ্য পক্ষে আসায় ব্যাটিং বাছতে দ্বিধা ছিল না বাংলাদেশ অধিনায়কের। কিন্তু শুরুটা হলো চরম বাজে।

পঞ্চম বলেই শাহিন আফ্রিদির বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তানজিদ হাসান তামিম। তিনে নেমে ফের ব্যর্থ নাজমুল হোসেন শান্ত। বিশ্বকাপের আগে দারুণ ছন্দে থাকা ব্যাটার বিশ্বকাপে এসে একদম অচেনা। বাজে ছন্দের চক্রে থাকায় কোন কিছুই ঠিকঠাক হচ্ছে না তার। শাহিনের সাধারণ এক ডেলিভারি ফ্লিক করতে গিয়ে শর্ট মিড উইকেটে দিয়ে দেন ক্যাচ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ফিফটি করার পর টানা ছয় ম্যাচে তিনি থামলেন দুই অঙ্কের আগে।

মুশফিকুর রহিম চারে নেমে ভরসা হতে পারেননি। হারিস রউফের বলে এক চার পেলেও তার গতিতেই পরাস্ত কিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।

২৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়া দলকে উদ্ধারে নামেন লিটন দাস আর মাহমুদউল্লাহ। লিটন দেখেশুনে খেলছিলেন। আলগা বল পেলেই বাউন্ডারি বের করতে দ্বিধা করেননি। পুরো নিয়ন্ত্রণ রাখা ইনিংসটির সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত করছিলেন মাহমুদউল্লাহ। বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারি বের করে রানে বল তাল রেখে ছুটছিল তার ব্যাট।

দুজনের জুটি জমে উঠে চিন্তাও বাড়াচ্ছিল পাকিস্তানি বোলারদের। মাঝের ওভারে খুব ভালো স্পিনার না থাকায় একটু চিন্তা ছিল বাবর আজমের কপালে।

এই জুটি যখন পাকিস্তানকে চাপ তৈরি করছিল তখনই সফট ডিসমিসালের শিকার লিটন। ইফতেখার আহমেদের সাদামাটা এক বল লেগ সাইডে ঠেলে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে গড়বড় করে ফেলেন তিনি। সফট হ্যান্ডে মারা শট ব্যাটের উপরের দিকে  লেগে লোপ্পা ক্যাচ চলে যায় মিড অনে।

এমন আউটের শিকার হয়ে ক্রিজেই ২৫ সেকেন্ডের মতো দাঁড়িয়ে থাকেন লিটন। ভার হয়ে আসা শরীর টেনে মাঠ ছাড়েন ধীরলয়ে।  মাহমুদউল্লাহ এমন ভুল করেননি। ৫৮ বলে ৬ চার, ১ ছক্কায় স্পর্শ করেন ফিফটি।

নিজের ব্যাটিং অর্ডার ছয়ে নামিয়ে সাকিব ক্রিজে এসে শুরুতে ছিলেন জড়োসড়ো। কোনভাবেই বল কানেক্ট করতে পারেননি। অন্য দিকে থিতু থাকা মাহমুদউল্লাহকে ফাঁদে ফেলে তুলে নেয় পাকিস্তান। অ্যারাউন্ড দ্য উইকেটে বল করতে এসে তাকে বোল্ড করে দেন শাহিন। ৭০ বলে ৫৬ রান করে ফেরেন তিনি।

মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর আরও খোলসে ঢুকে যান সাকিব। পুরো ক্যারিয়ারে তাকে শেষ কবে এত অচেনা লেগেছে বলা মুশকিল। সাকিবকে অবশ্য থিতু করে দেয় পাকিস্তানের আলগা বোলিং। কিছু বাউন্ডারি পেয়ে যাওয়ার পর মনে হচ্ছিল সামলে নেবেন বাকিটা। কিন্তু চল্লিশ পেরিয়ে হারিসের গতিতে পুল করতে গিয়ে তুলে দেন সহজ ক্যাচ।

তার আগেই বিদায় নিয়েছিলেন তাওহিদ হৃদয়। দু'ম্যাচ বসিয়ে একাদশে ফেরানো ডানহাতি ব্যাটার সাতে নেমে উসামা মীরকে এক ছক্কা মারলেও পরের বলেই ধরা দেন স্লিপে। 

এরপর মিরাজকে নিয়ে ৪৮ বলে ৪৫ রানের জুটিতে দলকে খেলায় ফিরিয়েছিলেন। সাকিবের আউটে সেটা আবার বাধাগ্রস্ত হয়। আটে নেমে মিরাজ থিতু হয়ে কাবু হন স্লগ করতে গিয়ে। মোহাম্মদ ওয়াসিমের বল উড়াতে গিয়ে তার স্টাম্পই উড়ে যায়। ওসাসিম একই রকম ইয়র্কারে বোল্ড করে দেন তাসকিন আহমেদকে, মোস্তাফিজ তার বল সামলাতে গিয়ে বোল্ড হন অদ্ভুতভাবে। 

Comments

The Daily Star  | English

BNP opposes RPO amendment requiring alliance parties to use own symbols

Salahuddin says the change will discourage smaller parties from joining coalitions

1h ago