অ্যামাজন কি ক্যাশিয়ারবিহীন স্টোর বন্ধের পথে হাঁটছে

অ্যামাজন কি ক্যাশিয়ারবিহীন স্টোর বন্ধের পথে হাঁটছে
রয়টার্স ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম ইন্টারনেটভিত্তিক খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন ঘোষণা দিয়েছে তারা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে দুটি, সিয়াটলে দুটি এবং সান ফ্রান্সিসকোতে ৪টি ক্যাশিয়ারবিহীন স্টোর বন্ধ করে দিচ্ছে। ওই স্টোরগুলো 'অ্যামাজন গো স্টোর' নামে পরিচিত। 

কয়েক বছর ধরে অ্যামাজন এই স্টোরগুলো চালু করছে যেখানে ক্রেতারা স্টোরে ঢুকে পছন্দমতো জিনিস নিয়ে চলে যেতে পারেন আর ক্রেতার অ্যামাজন ওয়ালেট থেকে স্বয়ংক্রিভাবে পণ্যের দাম কেটে রাখা হয়। উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন এই স্টোরগুলোতে বিভিন্ন সেন্সরের মাধ্যমে ক্রেতা কোন জিনিসটি নিচ্ছেন সেটি লক্ষ্য রাখা হয় এবং সেভাবেই ক্রেতার ডিজিটাল ওয়ালেট থেকে অর্থ কেটে রাখা হয়। গতানুগতিক দোকানের মতো এখানে কোনো ক্যাশিয়ার ব্যবস্থা ও চেকআউটের জন্য ক্রেতাদের দীর্ঘ সারি নেই। 

ইন্টারনেট রিটেইলের ক্ষেত্রে মহিরুহ এই প্রতিষ্ঠানটি যেদিন ৮টি অ্যামাজন গো স্টোর বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে, একই দিন ভার্জিনিয়ার আর্লিংটনে তাদের নতুন সদরদপ্তরের কাজও সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। 

অ্যামাজন জানিয়েছে, করোনা মহামারি-পরবর্তী পরিস্থিতিতে যেহেতু প্রচুর কর্মী বাসা থেকে কাজ করতে আগ্রহী, তাই নতুন সদর সপ্তর নিয়ে তাদের আরও বিবেচনা করতে হবে। 

অ্যামাজনের বিক্রির গতি কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে প্রতিষ্ঠানটি খরচের ক্ষেত্রে যেসব কাট-ছাঁট করছে, এটি হচ্ছে তর সবশেষ উদাহরণ।  

জানুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠানটি ১৮ হাজার কর্মী ছাঁটাই করে, যদিও প্রাথমিকভাবে ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।  

প্রতিষ্ঠানটির একজন মুখপাত্র জেসিকা মার্টিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একটি বিবৃতিতে বলেন, 'যেকোনো ফিজিক্যাল রিটেইলারের মতো আমরাও সময়ে সময়ে আমাদের কর্মদক্ষতা ও চিত্র বিবেচনা করি এবং সে অনুসারে সিদ্ধান্ত নেই। অ্যামাজন গো স্টোরের ব্যাপারে আমরা এখনো প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আমাদের এমন ২০টি স্টোর আছে। কোনো কোনো স্থানে এই স্টোরগুলো বেশি উপযুক্ত, সেটি নিয়েও আমরা ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি।'

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এখন অ্যামাজনের ২০টি 'গো স্টোর' চালু থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি শুরু থেকেই ফিজিক্যাল স্টোর নিয়ে সংগ্রাম করছে, যার ফলে খুব দ্রুতই এ সম্পর্কিত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ৮৭টি রিটেইল কিয়স্কও স্থাপন করেছিল অ্যামাজন, কিন্তু ফলপ্রসু না হওয়ায় করোনা মহামারির আগেই সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। 

২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে অ্যামাজন তাদের সবগুলো ফিজিক্যাল বইয়ের দোকান, পপ-আপ লোকেশন এবং 'ফোর স্টার শপ' বন্ধ করে দেয়। 

তবে ইন্টারনেটের বাইরে কীভাবে ব্যবসার প্রসার বাড়ানো যায়, অ্যামাজন সেটি নিয়ে ভাবছে। গত মাসে ফিনান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক স্বাক্ষাৎকারে অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যান্ডি জেসি বলেন, 'ফিজিক্যাল স্টোর নিয়ে তারা যে পরিকল্পনা করেছেন, তার বড় বাস্তবায়ন দেখা যাবে চলতি বছর।' 

সূত্র: সিএনবিসি, ফিনান্সিয়াল টাইমস

গ্রন্থনা: আহমেদ হিমেল
 

Comments

The Daily Star  | English

‘Polls delay risks return of autocracy’

Says Khandaker Mosharraf after meeting with Yunus; reiterates demand for election by Dec

38m ago