বিজ্ঞাপন ছাড়া ইউটিউব দেখবেন যেভাবে

ইউটিউবের লগো। প্রতিকী ছবি: রয়টার্স
ইউটিউবের লগো। প্রতিকী ছবি: রয়টার্স

বিনোদনের উদ্দেশ্যে হোক বা খুঁটিনাটি তথ্য জেনে নেয়ার জন্যই হোক– ইউটিউবে একটু ঢুঁ মেরে আসাটা আমাদের অনেকেরই নিত্যদিনের  অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে কিছুক্ষণ পরপর বিজ্ঞাপনের অত্যাচার বেশ যন্ত্রণাদায়ক হয়ে পড়ে।

এ ভোগান্তি থেকে রক্ষা পেতে কী কী কৌশল অবলম্বন করা যায়, তা নিয়েই এই লেখাটি।

যেকোনো বিষয়ে একটি প্রাথমিক ধারণা পেতে হলেও যে প্ল্যাটফর্মের কথা সবার আগে মাথায় আসে, তা বোধহয় ইউটিউব। কিন্তু যদি কাজের ভিডিও দেখার মাঝে বা প্রিয় গান চলার সময় কাপড় ধোয়ার সাবান বা রান্নার মশলার বিজ্ঞাপন এসে বাধা দেয়, তবে মনোযোগ আর মেজাজ--দুইটারই ১২টা বেজে যায়।

ইউটিউবে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা এসব বিজ্ঞাপনের বিভিন্ন ধরন রয়েছে। এর মাঝে 'স্কিপ' করা যায় এমন বিজ্ঞাপন যেমন আছে, তেমনি আছে 'নন স্কিপেবল' বিজ্ঞাপনও। এছাড়াও থাকে 'মাস্টহেড', 'আউটস্ট্রিম' ইত্যাদি বিজ্ঞাপন। সব 'অ্যাড ব্লকিং' সমাধান কিন্তু সব ধরনের বিজ্ঞাপন আটকাতে সক্ষম হয় না, তাই কিছু বিজ্ঞাপন আলাদা করে 'স্কিপ' বাটন ক্লিক করার মাধ্যমেই সরাতে হবে।

অ্যাড ব্লকিং অ্যাপ

অনলাইন বাজারে বিভিন্ন অ্যাড ব্লকিং সমাধান আছে, তবে এর মধ্যে স্কাই টিউব ও নিউপাইপ অন্যতম কার্যকর অ্যাড ব্লকিং অ্যাপ। এছাড়াও রয়েছে অ্যাডওয়ে, অ্যাডব্লক প্লাস, অ্যাডগার্ড ইত্যাদি অ্যাপ। এই অ্যাপগুলো 'রুটেড' ও 'নন-রুটেড', উভয় ধরনের ডিভাইসেই কাজ করে থাকে। এগুলো মূলত ডিভাইসের ব্যাকগ্রাউন্ডে চালু করা থাকে এবং একপ্রকার ব্রাউজার এক্সটেনশনের মতোই এদের কার্যকারিতা। অ্যাপগুলো একবার চালু করার পর অ্যাড ব্লকের কাজ নিজে থেকেই করতে থাকে। ইউটিউব বা ওয়েব ব্রাউজারের বিজ্ঞাপনের আগ্রাসন থেকে বাঁচতে বিনামূল্যে এবং সাবস্ক্রিপশন ফিসহ, দুভাবেই এসব অ্যাপ ফোন বা কম্পিউটারে ইন্সটল করে নিতে পারেন।

অ্যাড ব্লকিং ওয়েব ব্রাউজার এক্সটেনশন

সরাসরি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার না করে ব্রাউজার এক্সটেনশেনও ব্যবহার করে পারেন। তবে ব্রাউজারের ধরন অনুযায়ী এর কার্যকারিতায় তারতম্য আসে। অ্যাড ব্লকিং ব্রাউজার এক্সটেনশনগুলোর মধ্যে অ্যাডব্লক অন্যতম। কীভাবে বিজ্ঞাপন 'ব্লক' করা হবে, সেটি ব্যবহারকারী তার সুবিধা অনুযায়ী কাস্টোমাইজও করে নিতে পারেন। চাইলে 'পজ' ফিচার ব্যবহারের মাধ্যমে সাময়িকভাবে অ্যাড ব্লকার স্থগিত রাখাও সম্ভব।

ভিপিএন (ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক)

নর্ড ভিপিএনের অ্যাড ব্লকার বেশ কার্যকর সমাধান। ছবি: সংগৃহীত
নর্ড ভিপিএনের অ্যাড ব্লকার বেশ কার্যকর সমাধান। ছবি: সংগৃহীত

কম্পিউটার এবং রিমোট সার্ভারের মধ্যে ভিপিএন একটি সম্পূর্ণ 'এনক্রিপ্টেড টানেল' তৈরি করে। এতে করে ব্যবহারকারীর প্রকৃত অবস্থান গোপন থাকে এবং ইন্টারনেটে তার কার্যক্রমের কোনো হদিস বের করাটা আইএসপি, অর্থাৎ ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের পক্ষে সম্ভব হয় না। শুধু তাই নয়, অনাকাঙ্ক্ষিত সব বিজ্ঞাপনের আগমন রুখে দিতেও ভিপিএন বেশ ভালো ভূমিকা রাখতে পারে। অ্যাড ব্লকিং সুবিধা রয়েছে, এমন কয়েকটি ভিপিএন হচ্ছে– নর্ড ভিপিএন, সার্ফ শার্ক, এক্সপ্রেস ভিপিএন, সাইবার গোস্ট।

ইউটিউব ভিডিও ডাউনলোডার

ভিডিও ডাউনলোডার হতে পারে ভালো সমাধান। ছবি: সংগৃহীত
ভিডিও ডাউনলোডার হতে পারে ভালো সমাধান। ছবি: সংগৃহীত

আপাতদৃষ্টিতে এই সমাধানটি অনেকের কাছেই 'মাথাব্যথা হলে মাথা কেটে ফেলা'র মতো মনে হতে পারে। তবে ইউটিউব ভিডিও ডাউনলোড করে নিলে বিজ্ঞাপনের ঝক্কি পোহানোর কোনো সম্ভাবনা যে থাকে না, সেটিও সম্পূর্ণ সত্য। ইউটিউব ভিডিও ডাউনলোডারগুলোর মধ্যে ভিডমেট সবচেয়ে জনপ্রিয়। ভিডিও একবার ডাউনলোড করে নিয়ে সেটি অফলাইনেও উপভোগ করার জন্যও এই কৌশলটি কাজে লাগানো যায়। তবে কেউ যদি অনলাইনে থেকেই বিজ্ঞাপনবিহীন কনটেন্ট গ্রহণ করতে চান, তবে উপরের অন্য কৌশলগুলোই বেশি প্রযোজ্য হবে।

ইউটিউব প্রিমিয়াম

বাংলাদেশে এখনো চালু না হলেও দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ইউটিউব প্রিমিয়াম। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে এখনো চালু না হলেও দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ইউটিউব প্রিমিয়াম। ছবি: সংগৃহীত

সবচেয়ে সোজাসাপ্টা ও কার্যকর সমাধান হচ্ছে ইউটিউব প্রিমিয়ামের সাবস্ক্রিপশন নিয়ে নেয়া। একক বা একাধিক অ্যাকাউন্টের জন্য ইউটিউব প্রিমিয়াম সাবস্ক্রাইব করা যায়। এতে করে শুধু যে বিজ্ঞাপনের বেড়াজাল থেকে মুক্তি মেলে, তাই নয়– প্রিমিয়াম ভিডিও, কনটেন্ট ও ইউটিউব মিউজিকের সুবিধাও পাওয়া যায়। ইউটিউব প্রিমিয়ামের 'ফ্যামিলি প্ল্যান' এক্ষেত্রে একটি বিচক্ষণ সমাধান হতে পারে। যেকোনো ডিভাইস– যেমন মোবাইল ফোন, টেলিভিশন বা কম্পিউটারে এই ইউটিউব প্রিমিয়াম প্রযোজ্য।  তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে, বাংলাদেশে এখনো এ সেবা চালু হয়নি। তবে ভিপিএনের মাধ্যমে এ সেবা ব্যবহার করা সম্ভব। 

গ্রন্থনায়: অনিন্দিতা চৌধুরী

তথ্যসূত্র: অনলাইন টেক টিপস, গেটঅ্যাডব্লক, পিসিম্যাগ, অ্যান্ড্রয়েডঅথোরিটি

 

Comments

The Daily Star  | English

Dozens of zombie firms still trading as if nothing is wrong

Nearly four dozen companies have been languishing in the junk category of the Dhaka Stock Exchange (DSE) for at least five years, yet their shares continue to trade on the country’s main market and sometimes even appear among the top gainers. 

2h ago