প্রযুক্তির সহায়তায় ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনে ভারসাম্য

ধরুন, আপনার কর্মব্যস্ত জীবনে আপনি সপ্তাহে অতিরিক্ত দুঘণ্টা সময় পেলেন। তা দিয়ে কী করবেন ভাবুন। মাত্র দুইটি ঘণ্টাই তো। আরও ভাবতে থাকুন। আপনার কর্মজীবন ও ব্যক্তিজীবনের ভেতর ভারসাম্য আনার জন্য কি আপনার আরেকটু অবসরের প্রয়োজন? কথায় তো আছে—পড়ার সময় পড়া, খেলার সময় খেলা। কিন্তু আপনি আটকে গেছেন এ দুয়ের ফাঁকে। এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসা যত সহজ মনে হয়, ততটা কিন্তু নয়। গবেষণা বলছে, ৮৪ শতাংশের বেশি আমেরিকান প্রতি সপ্তাহে কর্মক্ষেত্রে অন্তত একবারের জন্য হলেও ব্যাপক চাপ অনুভব করেন।

১. ইমেইল ফিল্টার সেট আপ

ইমেইলে আমাদের ইনবক্সে সেসব মেইলই আসার কথা, যেসব প্রয়োজনীয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, আমাদের ইনবক্স ভেসে যায় অপ্রয়োজনীয় মেইলে। এসব পড়া ও ডিলেট করতেই আমাদের অনেকটা সময় নষ্ট হয়। তাই ইমেইল ফিল্টার সেট আপ করে নিন। স্বয়ংক্রিয়ভাবে সাজিয়ে নিতে ব্যবহার করতে পারেন 'ক্লিন ইমেইল' বা 'সেনবক্স' এর মত ইমেইল ম্যানেজার। বেশিরভাগ ইমেইল ম্যানেজারে পাবেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে লেবেল, ফিল্টার ও ফোল্ডার তৈরির সুযোগ। রং-কোড ইমেইল পরিবর্তন করতে আপনাকে সেটিংস ট্যাবে এক্সেস করতে হবে।

২. মিটিং ক্যালেন্ডার তৈরি

২০২২ সালে ডায়ালপ্যাডের করা এক সমীক্ষা থেকে জানা যায়, প্রতি সপ্তাহে মিটিং করতেই ব্যয় হয় ৪-১২ ঘণ্টা। এই মিটিং এর সেটআপের জন্য ইমেইল পাঠানোর মতো ব্যাপার তো আছেই। এভাবে সবাইকে মেইল করে মিটিংয়ের লিংক দেওয়া বা জনে জনে ম্যাসেজ না করে একটি মিটিং ক্যালেন্ডার ব্যবহার করা যায়। এতে সমন্বয় কাজে ব্যয় হওয়া অনেকটা সময় বেঁচে যায়।

কর্মক্ষেত্রে আপনার বস রাজি থাকলে গুগল ক্যালেন্ডারের মতো কিছু ব্যবহার করতে পারেন। সহকর্মীরা কে কখন ব্যস্ত তা দেখার জন্য গুগল ক্যালেন্ডারের নিজস্ব পদ্ধতি আছে।

এরকম আরও দুটি চমৎকার অ্যাপ হলো ক্যালেন্ডলি ও ডুডল। দুটোতেই আপনার কোম্পানির ভেতরে ও বাইরের লোকদের সঙ্গে ইউআরএল শেয়ার করার সুযোগ আছে। ইউআরএল শেয়ারের মাধ্যমে আপনার সঙ্গে অন্যদের মিটিংয়ের সময়সূচি তারা নির্বাচন করে নিতে পারেন।

৩. কম্পিউটারের টক-টু-টাইপ ফাংশন ব্যবহার

স্পিচ বা কণ্ঠ শণাক্তকরণের সফটওয়্যার ব্যবহার করে সহজেই নোট নেওয়া যায়। আরও অনেক কিছুকে সহজ করে দেবে এই সফটওয়্যার। টক-টু-টাইপ ব্যবহার করে ইমেইল ও অন্যান্য ডকুমেন্ট লেখার কাজ করে ফেলতে পারেন। তবে কণ্ঠ শণাক্তকরণের সফটওয়্যার নিখুঁত নয়। মূলত খসড়া-নোট করার জন্য ভালো৷

৪. ব্যবহার করুন নিরাপদ পাসওয়ার্ড ম্যানেজার

প্রতিবার পাসওয়ার্ড রিসেট করতে গেলে আমাদের লেগে যেতে পারে অনেকটা সময়। পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করলে অটোফিল ফাংশনসহ নিরাপদ ও স্বয়ংক্রিয় সাইন ইন করা সম্ভব। যেকোন ব্রাউজারের সঙ্গেই এটি মানানসই।

৫. খাবার অর্ডার করুন

প্রতিদিন খাবার তৈরিতে আপনার যে সময় যায়, তার কিছুটা আপনি নিজের জন্য রাখুন। কয়েকদিনের বাজার একসঙ্গে সেরে ফেললে প্রতিদিন সুপারশপে যেতে হবে না। পরিকল্পনা, কেনাকাটা, প্রস্তুতি ও রান্না মিলে বেশ খানিকটা সময় লেগে যায়। শাকসবজি যদি কেউ কেটে দেয় বা মাছ যদি বাজার থেকে কাটিয়ে আনে ততে সময় বাঁচবে। অথবা হোমমেড প্যাকেটজাত খাবার (যেমন- রুটি/ পরোটা) কিনে রাখতে পারেন। যদিও অনেকে মনে করেন এতে খরচ বেশি হবে, তবে এখন আর সবক্ষেত্রে এটা সত্য নয়। অর্ডার করলেই ডেলিভারিপার্সন চলে আসবে আপনার দরজায়।

সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ টাকা নয়, সময়। ৪৮ শতাংশ আমেরিকান মনে করেন, ব্যক্তিগত আগ্রহের কাজ করার মতো যথেষ্ট সময় তাদের হাতে নেই। তাই এসব অ্যাপ ব্যবহারে বাঁচতে পারে কিছুটা সময়।

গ্রন্থনা: মাহমুদ নেওয়াজ জয়

তথ্যসূত্র:

১. www.forbes.com

২. www.workersright.com

Comments

The Daily Star  | English

One killed as bearing pad of metro rail falls at Farmgate, train operations halted

As a safety measure, metro rail services remain suspended from 12:30pm, Dhaka Mass Transit Company Limited official says

1h ago