পদোন্নতিতে কোটা প্রসঙ্গ: জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ৬৪ ডিসির প্রতিবাদ

সচিবালয়। ছবি: সংগৃহীত

উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন নতুন নিয়ম চালুর যে প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে, তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশের সবগুলো জেলা প্রশাসনে কর্মরত কর্মকর্তাসহ জেলা প্রশাসকরা (ডিসি)।

এর পাশাপাশি বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকেও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

আজ বুধবার এ সংক্রান্ত প্রতিবাদলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। ৬৪ জেলার ডিসিরা পৃথক কার্যবিবরণী পাঠিয়েছেন।

এসব প্রতিবাদলিপির অনুলিপি দ্য ডেইলি স্টারের সংগ্রহে রয়েছে।

বর্তমানে দেশে ২৬টি ক্যাডার সার্ভিস আছে। এসব সার্ভিসের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে উপসচিব পদোন্নতির সময় ৭৫ শতাংশ প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তা এবং ২৫ শতাংশ অন্যান্য ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে নেওয়া হয়।

গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পদোন্নতির এই হার ৫০:৫০ করার জন্য সুপারিশ করা হবে।

বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়।

গতকাল রাতেই ঢাকায় বিশেষ বৈঠক করে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন নেতারা। বুধবার প্রায় সব জেলাতেই এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ডিসিদের পক্ষ থেকে পাঠানো প্রতিবাদপত্রে বলা হয়েছে, উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সংস্কার কমিশন যে ধরণের সুপারিশ করার চিন্তা করছে, তা বাস্তবতা বিবর্জিত। এ ধরণের উদ্যোগ কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, 'দেশের সর্বোচ্চ আদালতে মীমাংসিত একটি বিষয় নিয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের আনুষ্ঠানিক লিখিত প্রতিবেদন সরকারের নিকট জমা দেওয়ার আগেই আকস্মিকভাবে এই ধরণের ঘোষণা অনভিপ্রেত, আপত্তিকর ও রাষ্ট্রব্যবস্থাকে দুর্বল করার শামিল।'

'আইসিএস, সিএসপি ও বাংলাদেশের বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার মেধাভিত্তিক সেই আমলাতন্ত্রের মূলধারা' উল্লেখ করে এতে বলা হয়েছে, 'রাষ্ট্রে প্রশাসন ক্যাডারের কার্যপরিধির সঙ্গে নীতি নির্ধারণের নিবিড় সম্পর্ক। প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে অন্য ক্যাডারের বড় পার্থক্য হলো, প্রশাসন ক্যাডারের কাজের ধরণ সামগ্রিক বিষয়কে ধারণ করে। যেখানে অন্যান্য ক্যাডারের কাজের ধরণ বিশেষায়িত।'

এতে আরও বলা হয়, 'প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা মাঠ প্রশাসনে সামগ্রিক কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারনী জায়গা সচিবালয়ে আসেন। ফলে তারা মাঠের বাস্তবতা, অর্জিত জ্ঞান ও অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারক তথা রাজনীতিকদের সহায়তা করতে পারেন। যা রাজনীতি ও আমলাতন্ত্রে যোগসূত্র তৈরি করে। এ কারণে মাঠ প্রশাসনে কর্মরতরাই এই কাজের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত।'

বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবাদলিপিতে সই করেছেন সংগঠনটির সভাপতি ড. মো. আনোয়ার উল্ল্যাহ্‌ এবং মহাসচিব মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।

৬৪ জেলার ডিসিরা তাদের স্ব স্ব জেলার পক্ষ থেকে পাঠানো কার্যবিবরণীতে সই করেছেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

BNP holds meeting with Yunus

Four BNP leaders, led by Khandaker Mosharraf Hossain, reached Yunus' official residence at 7:33pm

1h ago