৯০ শতাংশ সরকারি কর্মচারী ‘উপেক্ষিত’ জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনে

সংস্কার বিষয়ে সরকারের নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের সঙ্গে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কোনো আলোচনা করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে।  সংস্কার কমিশনে নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের কোনো প্রতিনিধিও রাখা হয়নি। 

এতে সরকারে কাজ করা ৯০ শতাংশের বেশি কর্মচারীকে 'গুরুত্বহীন' ভাবা হচ্ছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।

সরকারি কর্মচারীদের চাকরির ২০টি গ্রেডের মধ্যে নবম ও তদুর্ধ্ব গ্রেডভুক্তদের 'উচ্চ এবং ১০ থেকে ২০ গ্রেডভুক্তদের 'নিম্ন গ্রেডভুক্ত হিসেবে ধরা হয়। 

নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীরা বলছেন, সংস্কার কমিশনে যারা আছেন তাদের সবাই সাবেক ক্যাডার বা ওই পর্যায়ের ব্যক্তি। তাই কমিশন সদস্যদের দৃষ্টিতে শুধু তাদের লেভেলের (ক্যাডার) কর্মচারীদের মতামত গুরুত্বপুর্ণ মনে করছেন। নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। যদিও সরকারি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীরা সবচেয়ে বেশি সম্পৃক্ত থাকেন।

সচিবালয়ের আন্তঃমন্ত্রণালয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনর মুখপাত্র নজরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রতিটি কমিশন জনপ্রশাসন সংস্কারের কথা বললেও প্রজাতন্ত্রের এক-দশমাংশ কর্মচারীর সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, পদোন্নতির সুযোগ বৃদ্ধিসহ গাড়ি-বাড়ির সুবিধাদির কথা বিবেচনা করা হয়। বাকী ৯ ভাগের জন্য স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও তেমন কোনো উন্নতি হয়নি।'

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তবর্তী সরকার গঠনের পর গত বছরের ৩ অক্টোবর জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন হয়। ৩ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা থাকলেও কমিশনের মেয়াদ বাড়িয়ে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে। 

এর মধ্যে ২৬টি ক্যাডারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে সংস্কার কমিশন। কিন্তু নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের কোনো প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক না হওয়ায় নিজেদের উপেক্ষিত মনে করছেন তারা।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও সংস্কার কমিশনের সদস্যসচিব ড. মোখলেস উর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের কাছে সব কর্মচারীই সমান। কর্মচারীদের মতামতের বিষয়টির গুরুত্ব আছে বলে আমি মনে করি, তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে কি না, তা এখনই বলতে পারছি না। এ ব্যপারে কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলব।'

সরকারি কর্মচারীদের সর্বশেষ সমীক্ষা 'স্ট্যাটিসটিকস অব গর্ভমেন্ট সার্ভেন্ট-২০২৩' এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সরকারে ১৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫১৮ জন কর্মরত আছেন। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণীর কর্মচারী আছেন ১ লাখ ৯০ হাজার ৯২৮ জন। এর বাইরে ১২ লাখ ৫২ হাজার ৫৯০ জনের সবাই দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী।

গত ৫ জানুয়ারি 'বৈষম্যবিরোধী গণকর্মচারী (নন ক্যডার)' সংগঠনটি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন জমা দিয়েছে। সংগঠনটির সদস্যসচিব এবং ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রাশেদুল ইসলাম আবেদনে বলেন, সংবিধানে সুযোগের সমতার কথা বলা হলেও নন-ক্যাডার কর্মচারীরা সবসময় বঞ্চিত থাকছে। জনপ্রশাসনে সংস্কারের ক্ষেত্রে  বঞ্চিত এই বিশাল অংশের কর্মচারীর মতামত গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। তাই নন-ক্যাডার কর্মচারীদের মতামত নেওয়ার অনুরোধ রইল।'

Comments

The Daily Star  | English
FY2026 Budget,

How the FY2026 budget can make a difference amid challenges

The FY2026 budget must be more than a mere fiscal statement.

20h ago