‘২০০৪ সালের বন্যাতেও একদিনে এতো পানি আসতে দেখিনি’

২০০৪ সালে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। তবে সুনামগঞ্জে এবারের বন্যার ভয়াবহতা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

আজ শুক্রবার সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, সুরমার পানি সকালে বিপৎসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, ২০২০ সালে বন্যায় সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সুরমার পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল।

গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জের উজানে ভারতের মেঘালয়-চেরাপুঞ্জিতে ৬৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সুনামগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ১৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি ও ঢলের পানি সুনামগঞ্জ শহরের সবচাইতে উঁচু স্থানেও উঠেছে। শহরের কেন্দ্রে পৌর বিপণিতেও পানি।

পৌর বিপণির দোকান মালিক সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '২০০৪ সালেও একদিনে এতো পানি আসতে দেখিনি। সুনামগঞ্জের মানুষ গত প্রায় ২০ বছরে এমন ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি দেখেননি।'

ছবি: সংগৃহীত

শহরের উকিলপাড়ার বাসিন্দা মোনাজ্জির আলী মামুন ডেইলি স্টারকে বললেন, 'শত বছর ধরে এখানে থাকি। এর আগে কখনো ঘরে হাঁটু পানি হয়নি।'

একই মহল্লার আলিমাবাগ মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা ওসমান গণি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মসজিদের নিচ তলায় হাঁটু পানি। মুসুল্লিরা ২ তলায় নামাজ আদায় করেছেন।'

শহরের তেঘরিয়ার বাসিন্দা সেলিম আহমদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এর আগে আমার ঘরে কখনো পানি উঠেনি। পশ্চিম তেঘরিয়া বা বড়পাড়ার অনেক ঘরে বুক সমান পানি। শহরের হাজার-হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।'

সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী দ্য বলেছেন, 'আগামী ১০ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে দেখা গেছে, একইভাবে ৪ দিন বৃষ্টি হবে। সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতিও হতে পারে।'

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহতা অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বন্যা তথ্য কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ছাতকে ১৭, দোয়ারাবাজারে ১৬ ও সুনামগঞ্জ সদরে ১০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'ঘরে থাকার অনুপযোগী সবাইকেই আশ্রয়কেন্দ্রে আনা, শুকনো খাবারসহ সাময়িক খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সবার সহযোগিতা চাই।'

Comments

The Daily Star  | English
Rohingya children

Education at Rohingya camps in disarray

The funding shortfall stems largely from a drastic reduction in humanitarian aid by the US

9h ago