‘একটি অগ্নিকাণ্ডে ৮ অগ্নিনির্বাপক কর্মীর মৃত্যু আগে কখনো হয়নি’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৮ জন অগ্নিনির্বাপক কর্মীর মৃত্যুর এমন ঘটনা আগে কোনোদিন ঘটেনি বলে মন্তব্য করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।

আজ রোববার দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'প্রায় ২৫ বছর ধরে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কাজ করছি। এত বছরে কখনও এক দুর্ঘটনায় এত মৃত্যু প্রত্যক্ষ করেনি। আমার জানা মতে, এর আগে কখনো একটি ঘটনায় এত অগ্নিনির্বাপক কর্মীর মৃত্যু হয়নি।'

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় অগ্নিকাণ্ডের শুরু হওয়ার প্রায় ১৭ ঘণ্টা পেড়িয়ে গেলেও এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন, কিছুক্ষণ পরপর হচ্ছে বিস্ফোরণ।

গতকাল রাতে আগুন নেভানোর চেষ্টা করার সময় অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা একটি কন্টেইনারের কাছাকাছি থাকা অবস্থায় সেটি বিস্ফোরিত হয়।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের মোট ৮ জন কর্মী মারা গেছেন। এ ছাড়াও, গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও অন্তত ১৫ জন।

তাদের মধ্যে কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মী গাউসুল আজম ও সীতাকুণ্ডু স্টেশনের রবিউলকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে আনা হয়েছে। গাউসুলের শরীরের ৮০ শতাংশ এবং রবিউলের ৫০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মো. শাজাহান শিকদার বলেন, কন্টেইনারে রাসায়নিক পদার্থ থাকার বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসকে অবহিত করা হয়নি।

আগুন নেভাতে সেখানে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট।

এর পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ২৫০ জন সদস্য সেখানে উদ্ধার অভিযানে কাজ করছে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, 'আগুন নেভাতে ঢাকা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ১৪ সদস্যের বিশেষ দল হ্যাজম্যাট সীতাকুণ্ডু গিয়েছে। এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন সহকারী পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মনির হোসেন। তারা ইতোমধ্যে সেখানে কাজ শুরু করেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না এলেও আয়ত্ত্বের মধ্যে আছে। নতুন করে আগুন আর বাড়ছে না।'

এর আগে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি জানিয়েছিলেন, ভেতরে কিছুক্ষণ পরপর বিস্ফোরণ হচ্ছে।

এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪০ জনের মরদেহ এসেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

চমেক হাসপাতাল পুলিশ আউটপোস্টের এএসআই আলাউদ্দিন এ তথ্য জানান।

দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে স্থান সংকুলান হচ্ছে না। ফলে, গাইনি ওয়ার্ডকে বার্ন ইউনিট ঘোষণা করা হয়েছে।

বার্ন ইউনিটের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে স্থান সংকুলান না হওয়ায় গাইনি ওয়ার্ডকে (৩১ নম্বর) বার্ন ইউনিটে রূপান্তর করা হয়েছে। ২টি ওয়ার্ডে বর্তমানে মোট ৪৭ জন দগ্ধ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English
FY2026 Budget,

How the FY2026 budget can make a difference amid challenges

The FY2026 budget must be more than a mere fiscal statement.

16h ago