রাশিয়াকে দেখে সতর্ক হচ্ছে অনেক দেশ, নিজ দেশে ফেরাচ্ছে স্বর্ণের মজুত

প্রতীকী ছবি

রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে সতর্ক অবস্থান নিচ্ছে অনেক দেশ। নিজেদের অর্থনৈতিকভাবে সুরক্ষিত রাখতে তারা অন্য দেশে মজুত রাখা স্বর্ণ নিজ দেশে ফিরিয়ে নিচ্ছে।

আজ সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সার্বভৌম তহবিল ব্যবস্থাপকদের ওপর চালানো জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।

গত বছর রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর আর্থিক বাজারের পতন সার্বভৌম তহবিল ব্যবস্থাপকদের ব্যাপক ক্ষতির মুখে ফেলেছিল। এতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে, তাই তহবিল ব্যবস্থাপকরা তাদের কৌশল পুনর্বিবেচনা করছে।

সম্প্রকি ইনভেসকো গ্লোবাল সার্বভৌম সম্পদ ব্যবস্থাপনা জরিপে ৮৫টি সার্বভৌম সম্পদ তহবিল ও ৫৭টি কেন্দ্রীয় ব্যাংক অংশ নিয়েছিল। তাদের ৮৫ শতাংশের বেশি মনে করে, মূল্যস্ফীতি গত দশকের তুলনায় আগামী দশকে আরও বেশি হবে।

এমন পরিস্থিতিতে স্বর্ণ ও উদীয়মান বাজারের বন্ডকে ভালো বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু, গত বছর ইউক্রেন আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমারা রাশিয়ার ৬৪০ বিলিয়ন ডলারের স্বর্ণ এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ জব্দ করেছে বলে ধারণা করা হয়। এ কারণে সতর্ক হচ্ছে অনেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

জরিপে দেখা গেছে, পশ্চিমাদের এমন প্রতিক্রিয়ায় বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর 'উল্লেখযোগ্য অংশ' উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় ৬০ শতাংশের মতে, এ ঘটনা স্বর্ণকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। তাদের ৬৮ শতাংশ বলছে, তারা নিজেরাই এখন স্বর্ণ মজুত রাখছে। ২০২০ সালে যা ছিল ৫০ শতাংশ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক রয়টার্সকে জানিয়েছে, 'আমরা লন্ডনে স্বর্ণ মজুত রেখেছিলাম। কিন্তু, আর্থিক নিরাপত্তা ও এই স্বর্ণ নিরাপদ রাখতে নিজ দেশে ফিরিয়ে এনেছি।'

ইনভেসকোর অফিসিয়াল ইনস্টিটিউশনের প্রধান রড রিংরো বলছেন, সব কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন এমনটাই ভাবছে। গত এক বছরে তাদের ধারণা এমন হয়েছে যে, 'আমাদের স্বর্ণ আমার দেশে রাখতে চাই'।

ভূ-রাজনৈতিক উদ্বেগের কারণে কিছু কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ হিসেবে ডলার ছাড়াও অন্যান্য মাধ্যমে আগ্রহী হয়ে উঠছে।

জরিপে অংশ নেওয়া ৭ শতাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করে, ক্রমবর্ধমান মার্কিন ঋণ ডলারের জন্য একটি নেতিবাচক দিক। যদিও তাদের বেশিরভাগ এখনো রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবে ডলারের বিকল্প দেখছেন না। যারা চীনের ইউয়ানকে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখছিলেন তাদের হারও কমেছে, গত বছরের ২৯ শতাংশ থেকে কমে ১৮ শতাংশে নেমে এসেছে।

জরিপে অংশ নেওয়া ১৪২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ মনে করছে, আগামী দশকের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা। আর ৮৩ শতাংশ মনে করছে, আগামী ১২ মাসে মূল্যস্ফীতি সবচেয়ে বড় উদ্বেগের কারণ হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

2h ago