রোগীদের করোনা উপসর্গ, কিট না থাকায় নোয়াখালীতে হচ্ছে না পরীক্ষা

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ঢাকা-চট্টগ্রামসহ সারা দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জেলা শহরগুলোতে করোনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিলেও কিট না থাকায় নোয়াখালীতে সম্ভব হচ্ছে না করোনা পরীক্ষা।

করোনা পরীক্ষা করা যাচ্ছে না ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ও নোয়াখালী সরকারি মেডিকেল কলেজ ল্যাবে।

রোগীদের শরীরে করোনার বিভিন্ন উপসর্গ থাকলেও জেনারেল হাসপালে কিট না থাকায় ও মেডিকেল কলেজ ল্যাবে আরটিপিসিআর মেশিন নষ্ট থাকায় করোনা পরীক্ষা বন্ধ আছে।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী ও নোয়াখালী সরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আনিছুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

আজ সোমবার দুপুরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, করোনা উপসর্গ যেমন, সর্দি, কাশি, শরীর ব্যাথা, মাথাব্যাথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে কয়েকজন রোগী বহির্বিভাগে আসেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের সর্দি-কাশি ও নিউমোনিয়ার ব্যবস্থাপত্র লিখে ও স্বাস্থ্যবিধির উপদেশ দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছেন। 

সদর উপজেলার ইসলামগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা শাহনাজ বেগম (৫৫) সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভোগার ৫ দিন পর আজ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হাসপাতালে থেকে প্যারাসিটামল ও হিস্টাসিন লিখে দিয়েছে। বাইরে থেকে কিছু ওষুধ কেনার জন্য বলেছে।'

জেনারেল হাসপাতালের বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. সালাহ উদ্দিন আনাস ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চলতি মাসের শুরু থেকে সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, শরীর ও মাথাব্যাথায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট।'

তিনি বলেন, 'কিন্তু জেনারেল হাসপাতালে কিট না থাকায় পরীক্ষা করা যাচ্ছে না। রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপদেশ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।' 

এবার করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে নোয়াখালীতে যথাসময়ে করোনা শনাক্ত শুরু করা যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। 

এর আগে, করোনা মহামারি চলাকালে জেলার ৯ উপজেলার রোগীদের করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা হতো নোয়াখালী সরকারি মেডিকেল কলেজ ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, 'আমাদের নির্দেশ দিলে এবং কিট সরবরাহ করা হলে আমরা করোনা পরীক্ষা শুরু করব।' 

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, 'হাসপাতালে করোনার র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন্ট টেস্ট কিট না থাকায় করোনা পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। ১০ হাজার কিটের চাহিদাপত্র স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হবে। কিট পেলে করোনা পরীক্ষা শুরু হবে।'

নোয়াখালী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আনিসুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ল্যাবে স্থাপিত আরটিপিসিআর মেশিনটি অকেজো হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ার ফলে এমন হয়েছে। নোয়াখালীসহ ১৯টি মেডিকেল কলেজে করোনা পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। মেশিন সার্ভিসিং করার জন্য টেকনিশিয়ান পাঠানোর জন্য অধিদপ্তরে চিঠি লেখা হয়েছে।'

জানতে চাইলে নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মরিয়ম সিমি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জেনারেল হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন্ট টেস্ট কিট সংকট হয়েছে। এ কারণে নোয়াখালী জেলায় করোনা পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। কিট পেলে পরীক্ষা শুরু হবে। জেলার ৯ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের প্রস্তত থাকার নিদের্শ দেওয়া হয়েছে।' 

Comments

The Daily Star  | English

Officials for polls duty: BNP to oppose hiring from select entities

Party will ask EC not to pick people from certain organisations known to be close to a right-wing party

9h ago