কুলাউড়ায় হঠাৎ ডেঙ্গুর প্রকোপ, বেশি আক্রান্ত সীমান্তের গ্রামগুলোতে
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় হঠাৎ করেই ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। গত এক মাসে দুই শতাধিক ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই উপজেলার সীমান্তবর্তী কর্মধা ইউনিয়নের বিভিন্ন খাসিয়া ও গারো পুঞ্জি এবং চা-বাগানের বাসিন্দা।
কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য অনুযায়ী, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরীক্ষাগারে এখন পর্যন্ত ৩০৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪৪ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। অন্যদিকে, উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার এলাকার ক্রিশ্চিয়ান মিশন হাসপাতালে পরীক্ষা করে এক মাসে ১৬০ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। এ ছাড়া অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতাল ও রোগনির্ণয় কেন্দ্রেও অনেকে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এর আগে কুলাউড়া বা পুরো সিলেট বিভাগে কখনো এমন ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যায়নি। আক্রান্ত রোগীরা সম্প্রতি রাজধানী বা অন্য কোথাও ভ্রমণ করেননি। সীমান্তবর্তী কর্মধা ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের ধারণা, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে এডিস মশা ছড়িয়ে পড়তে পারে।'
তিনি জানান, পানজুম এলাকায় কাজ করতে গিয়ে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর কর্মধার বিভিন্ন পুঞ্জিতে চিকিৎসা ক্যাম্প পরিচালনা করা হয়েছে এবং সব পুঞ্জির প্রতিনিধিদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভাও করা হয়েছে।
গতকাল দুপুরে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, ডেঙ্গু রোগীদের জন্য খোলা আলাদা কক্ষে পাঁচজন রোগী ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে চারজনই কর্মধা ইউনিয়নের বাসিন্দা। তারা সবাই খাসিয়া পুঞ্জি বা চা-বাগানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন।
কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সিলভেস্টার পাঠাং বলেন, গত ১০ নভেম্বর পর্যন্ত লুথিজুরি পুঞ্জির জেরবাস (৪০) ও তিতুশ (৪২) নামের দুজন ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। তিনি আরও জানান, তার এলাকার ১২টি খাসিয়া পুঞ্জিতে বাসিন্দাদের অনেকের মধ্যেই ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা গেছে। তার ভাষ্য, 'যদি ব্যাপকভাবে পরীক্ষা করা হয়, সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি হবে।'
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে উপজেলায় ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশি। ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আলাদা ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। সেখানে প্রতিদিনই রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।


Comments