নেতানিয়াহু যুদ্ধ নয়, শান্তিকে বেশি ভয় পান: হারেৎজ সম্পাদকীয়

ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে ট্রাম্পকে পাশে রেখে বক্তব্য দিচ্ছেন নেতানিয়াহু। ছবি: এএফপি
ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে ট্রাম্পকে পাশে রেখে বক্তব্য দিচ্ছেন নেতানিয়াহু। ছবি: এএফপি

শতবর্ষী সমাজতান্ত্রিক ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজের সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুদ্ধ নয় শান্তিকে বেশি ভয় পান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উচিত নেতানিয়াহুকে চাপে রাখা।

বুধবার প্রকাশিত এই সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়—ট্রাম্প মনে করেন যুদ্ধের মাধ্যমে ইসরায়েল আজ যে বাস্তবতায় উপনীত হয়েছে তা কাজে লাগিয়ে তারা প্রতিবেশীদের সঙ্গে নতুন রাজনৈতিক আলোচনা শুরু করতে পারে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও মনে করেন—শুধু যুদ্ধই শেষ হয়নি, সংঘাত ও মৃত্যুর মিছিলও থেমেছে। তার মতে, এটি ইসরায়েল ও মধ্যপ্রাচ্যের স্বর্ণযুগ হতে চলেছে।

ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে ট্রাম্প বলেন, 'আমাদের সাহায্য নিয়ে ইসরায়েল যে বিজয় পেয়েছে তা অর্জন করতে তাদেরকে অস্ত্র ব্যবহার করতে হতো।' তিনি চান, এখন সেই বিজয়কে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে হবে। সেই বিজয়কে পুরো মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করতে হবে।

নেসেটে বক্তব্য দিচ্ছেন ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
নেসেটে বক্তব্য দিচ্ছেন ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশ্যে ট্রাম্পের বার্তা—এত এত মানুষের যন্ত্রণা, মৃত্যু ও কষ্টের পর এখন সময় নিজেদের গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেওয়া। অর্থনৈতিক উন্নয়ন, আত্মমর্যাদা, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার দিকে গাজাবাসীদের মনোযোগ দিতে হবে।

যুদ্ধ জয়ের তুলনায় ট্রাম্প শান্তি ও পুনর্গঠনের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তিনি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির জন্য ইসরায়েল-ফিলিস্তিন নিয়ে যেকোনো প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

হারেৎজ মনে করে, ট্রাম্প যদি শান্তির প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন তাহলে তাকে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। যখন শান্তিপূর্ণ পন্থায় ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবি করা হয় তখন তা ট্রাম্পের মতো যারা নতুন মধ্যপ্রাচ্যের স্বপ্ন দেখেন তাদেরও জোরালো দাবি হওয়া উচিত। অথচ, নেসেটে ট্রাম্পের বক্তৃতার সময় 'ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দাও' দাবি নিয়ে দাঁড়ানো দুই আইনপ্রণেতাকে সরিয়ে দেওয়া হলো।

নেসেটে বক্তৃতার পর ট্রাম্প চলে যান মিশরের শার্ম আল-শেখে। সেখানে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ও ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে তার দেখা হয়।

ভারতে ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। ফাইল ছবি: এএফপি
ভারতে ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। ফাইল ছবি: এএফপি

বাস্তবতা হচ্ছে—মিশরে ট্রাম্প মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে করমর্দন করেন। তিনি ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষকে আলোচনার টেবিলে এনেছেন। এর মাধ্যমে বলা যেতে পারে, ট্রাম্পের কাছে হামাসের পরাজয় মানে ফিলিস্তিনিদের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের স্বীকৃতি।

ধর্মীয় ছুটির কথা বলে সেই সম্মেলনে যোগ দেননি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এটা একটা অজুহাত মাত্র। কেননা, ইসরায়েলের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধকে যতটা না ভয় পান এর তুলনায় বেশি ভয় পান শান্তিকে। ট্রাম্প যে ঐতিহাসিক মুহূর্তের কথা বলছেন নেতানিয়াহু তা প্রত্যাখ্যান করছেন। আশঙ্কা—তিনি হয়ত উগ্রপন্থি জোট সঙ্গীদের বিরাগভাজন হবেন।

Comments

The Daily Star  | English

Victory day today: A nation born out of blood and grit

The tide of war had turned by mid-December in 1971. The promise of freedom was no longer a dream. It had hardened into tangible certainty.

7h ago