হিজবুল্লাহ চিফ অব স্টাফকে লক্ষ্য করে হামলার দাবি ইসরায়েলের
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। আজ রোববারের এই বিমান হামলায় একজন নিহত ও অন্তত ২১ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েল জানিয়েছে, এই হামলার লক্ষ্য ছিলেন হিজবুল্লাহ'র সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান (চিফ অব স্টাফ) হাইতাম আলি তাবাতাবাই।
আজ রোববার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি ও সিএনএন।
সিএনএনকে এক ইসরায়েলি সূত্র জানান, হামলার লক্ষ্য ছিলেন হাইতাম আলি তাবাতাবাই। তিনিই কার্যত হিজবুল্লাহ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা ও সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান।
প্রত্যক্ষদর্শী এএফপির সাংবাদিকরা জানান, হামলার পর আবাসিক ভবনটির এক পাশে একটি বড় গর্ত দেখা যায়। সেখান থেকে ধোঁয়া উড়ছিল। এ ছাড়া, ভবন সংলগ্ন সড়কের ওপর বড়, ভাঙা পাথরের টুকরো পড়ে থাকতে দেখেন।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, হামলায় অন্তত এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। প্রাথমিক হিসাব মতে, ২১ ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে নিহত ব্যক্তি হিজবুল্লাহর সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান কী না, সে বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য জানা যায়নি।
বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলীতে হামলা করে ইসরায়েল। জনবহুল ওই এলাকাটি লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর ঘাঁটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। লেবাননের সরকারি সংবাদমাধ্যম ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি (এনএনএ) জানিয়েছে, এই হামলায় অনেকে আহত হয়েছেন এবং উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নিজেই এই হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, 'কিছুক্ষণ আগে, বৈরুতের কেন্দ্রে আইডিএফ (ইসরায়েলি সেনা) হিজবুল্লাহর সশস্ত্র বাহিনী প্রধানের ওপর হামলা চালিয়েছে। তিনিই সে ব্যক্তি যিনি ওই জঙ্গি সংগঠনকে আবারও অস্ত্রে সজ্জিত ও পুনর্গঠিত করার কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।'
'ইসরায়েল সব সময়, সব জায়গায় তাদের লক্ষ্য পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ', বিবৃতিতে আরও জানানো হয়।
এএফপির সংবাদদাতা ঘটনাস্থল থেকে জানান, হামলায় ১০ তলা ভবনটির চতুর্থ ও পঞ্চম তলা আক্রান্ত হয়। ভবনের সামনে অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে ছিল এবং উদ্ধারকর্মীরা ভেতরে পরিদর্শন কাজে ব্যস্ত ছিলেন।
এনএনএ জানিয়েছে, হারেত হ্রেইক এলাকায় অবস্থিত ভবনটির ওপর তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। এতে আশেপাশে থাকা গাড়ি ও অন্যান্য অবকাঠামোও ক্ষতির শিকার হয়।
গত বছরের ২৭ নভেম্বর যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই করে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ। তবে শুরু থেকেই ভঙ্গুর এই চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে গত এক বছরে প্রায় প্রতিদিনই লেবাননে হামলা চালিয়েছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। আজকের হামলাও তার ব্যতিক্রম নয়।
রোববার দিনের শুরুতে নেতানিয়াহু বলেন, হিজবুল্লাহ যাতে আবার শক্তি অর্জন করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে 'যা যা দরকার' তার সবই ইসরায়েল করবে।
হামলার পর এক জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা চ্যানেল টুয়েলভকে জানান, এই হামলা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রকে আগে থেকে কিছু জানানো হয়নি।
অপর এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, বেশ কয়েকদিন ধরেই ওয়াশিংটনের জানা ছিল যে লেবাননে হামলার মাত্রা বাড়াতে পারে ইসরায়েল।
তবে এসব হামলার 'সময়, অবস্থান বা লক্ষ্যবস্তু' সম্পর্কে তাদেরকে কোনো আগাম তথ্য দেয়নি তেল আবিব।


Comments