আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে সংঘর্ষ, ৪ বেসামরিক নিহত

পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তের চামানে একজন নিরাপত্তা কর্মী পাহারা দিচ্ছেন। ছবি: এএফপি

পাকিস্তান–আফগানিস্তান সীমান্তে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে রাতে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে চার বেসামরিকের প্রাণ গেছে। আফগান এক কর্মকর্তা আজ শনিবার এমনটি জানিয়েছেন। অক্টোবরের প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর এটি দুই দেশের মধ্যে নতুন উত্তেজনা।

আফগানিস্তানের দক্ষিণ অঞ্চলের স্পিন বোল্ডাক জেলার গভর্নর আবদুল করিম জাহাদ এএফপিকে জানান, এই ঘটনায় আরও চারজন আহত হয়েছেন। পাকিস্তানের সীমান্ত শহর চামানের স্থানীয় হাসপাতাল জানিয়েছে, সংঘর্ষে সামান্য আঘাত পাওয়া তিনজনকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

অক্টোবরে সংঘর্ষের পর যুদ্ধবিরতি হলেও চামান-স্পিন বোল্ডাক সীমান্তে উসকানিহীন হামলা চালানোর অভিযোগ দুই দেশেরই।

শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, দুঃখজনকভাবে আজ রাতে পাকিস্তান আফগানিস্তানের কান্দাহারের স্পিন বোল্ডাক জেলায় হামলা চালায়। ফলে আফগান বাহিনী পাল্টা জবাব দিতে বাধ্য হয়।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখপাত্র মোশাররফ জায়েদি এক্সে পোস্ট করে লেখেন, আফগান তালেবান সরকার সীমান্ত এলাকায় উসকানিহীন গুলি চালায়। এর জবাবে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী তাৎক্ষণিক, যথাযথ এবং তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়।

সীমান্তের আফগান অংশের বাসিন্দারা এএফপিকে জানান, স্থানীয় সময় রাত প্রায় সাড়ে ১০টার দিকে গোলাগুলি শুরু হয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলে।

কান্দাহার তথ্য বিভাগের প্রধান আলি মোহাম্মদ হাকমাল জানান, পাকিস্তানি বাহিনী 'হালকা ও ভারী অস্ত্র ব্যবহার করে গোলাবর্ষণ' চালায় এবং মর্টারের গোলা গিয়ে পড়ে বেসামরিকদের বাড়িঘরে। 

 ২০২১ সালে তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে।

নিরাপত্তা ইস্যুই এই বিরোধের কেন্দ্রবিন্দু। পাকিস্তানের অভিযোগ—আফগানিস্তান টিটিপির (পাকিস্তানি তালেবান) মতো গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দিচ্ছে, যারা পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে।

তবে তালেবান সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

অক্টোবরে দুই দেশের সংঘর্ষে ৭০ জনেরও বেশি নিহত এবং শত শত মানুষ আহত হন। কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি হলেও দোহা ও ইস্তাম্বুলে একাধিক আলোচনা স্থায়ী সমাধান আনতে ব্যর্থ হয়েছে। এখনো দুই দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীর সীমান্ত বন্ধ রয়েছে।

গত মাসে কাবুল অভিযোগ করে, পাকিস্তানের বিমান হামলায় সীমান্ত এলাকায় ১০ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে নয়জনই শিশু। পাকিস্তান এই অভিযোগ নাকচ করে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২৮ নভেম্বর সতর্ক করে জানায়, দেশের ভেতরে 'বড় ধরনের' হামলার কারণে 'যুদ্ধবিরতি আর কার্যকর নেই'।

এই সপ্তাহে পাকিস্তান জানায়, ত্রাণ সহায়তা পরিবহনের জন্য তারা আংশিকভাবে সীমান্ত খুলে দেবে। জাতিসংঘের সংস্থাগুলো চামান সীমান্ত ব্যবহার করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সাহায্য পাঠানো কবে শুরু হবে তা নিশ্চিত নয়। তবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখপাত্র জায়েদি এএফপিকে বলেন, 'ত্রাণ সহায়তা পাঠানো আলাদা বিষয়' এবং সাম্প্রতিক সংঘর্ষ 'সেই সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করবে না'।

Comments

The Daily Star  | English
Chief Justice Refaat Ahmed July revolution statement

July revolution did not seek to overturn constitution: Chief Justice

Outgoing CJ Refaat says movement aimed to purify constitutional engagement

2h ago