যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় যে ৩৯ দেশ, কোন ক্যাটাগরিতে কে
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন একটি ঘোষণাপত্রে সই করে পূর্ণ ও আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা দেশের সংখ্যা ১৯ থেকে বাড়িয়ে ৩৯ করেছেন।
বুধবার হোয়াইট হাউসের বরাতে সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
হোয়াইট হাউস জানায়, জাতীয় নিরাপত্তা ও যাত্রী যাচাই এবং তথ্য বিনিময়ে ঘাটতির কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা
নতুন ঘোষণাপত্র অনুযায়ী, সাতটি দেশের ওপর পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
দেশগুলো হলো—লাওস, সিয়েরা লিওন, বুরকিনা ফাসো, মালি, নাইজার, দক্ষিণ সুদান ও সিরিয়া।
এর মধ্যে লাওস ও সিয়েরা লিওন আগে আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল।
এর আগে, চলতি বছরের জুনে পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত হয়—আফগানিস্তান, মিয়ানমার, শাদ, রিপাবলিক অব কঙ্গো, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, এরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন।
এ ছাড়া ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ইস্যু করা ভ্রমণনথি বহনকারীদের ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তবে, আগেও ফিলিস্তিনিদের ক্ষেত্রে সরাসরি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও ব্যবসা, কাজ, ভ্রমণ বা শিক্ষার উদ্দেশ্যে তাদের যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার অনুমোদন পাওয়ার বিষয়টি কার্যত অসম্ভবই ছিল।
নতুন সংযোজনের ফলে পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা দেশের সংখ্যা দাঁড়াল ২০টিতে।
আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা
আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নতুন করে আরও ১৫টি দেশ যুক্ত করা হয়েছে। এসব দেশের বেশিরভাগই সাব-সাহারান আফ্রিকার।
দেশগুলো হলো—অ্যাঙ্গোলা, বেনিন, আইভরি কোস্ট, গ্যাবন, গাম্বিয়া, মালাউই, মৌরিতানিয়া, নাইজেরিয়া, সেনেগাল, তানজানিয়া, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ে।
এ ছাড়া ক্যারিবীয় অঞ্চলের অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, ডমিনিকা এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ টোঙ্গার ওপরও আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এর আগে থেকেই বুরুন্ডি, কিউবা, টোগো ও ভেনেজুয়েলা আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল।
তবে তুর্কমেনিস্তানের নাগরিকদের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বর্তমানে মোট ১৯টি দেশ আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার কারণ
হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া অনেক দেশের ক্ষেত্রে 'যাত্রী যাচাই, নিরাপত্তা পর্যালোচনা ও তথ্য বিনিময়ে গুরুতর ঘাটতি' রয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এসব দেশে দুর্নীতি হার ব্যাপক। এছাড়াও রয়েছে ভুয়া নাগরিক নথি ব্যবহারের অভিযোগও।
দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অপরাধসংক্রান্ত রেকর্ড আদান–প্রদানে ঘাটতি আছে।
পাশাপাশি কিছু দেশে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবস্থান করার হার বেশি। আর কিছু দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভিসা বাতিল হওয়া নাগরিকদের ফেরত নিতে অস্বীকৃতি জানায়।
এই নিষেধাজ্ঞা পর্যটক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়িক ভ্রমণকারী এবং যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসে আগ্রহীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
তবে যাদের ইতোমধ্যে বৈধ ভিসা রয়েছে, যারা যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা, কূটনীতিক কিংবা নির্দিষ্ট ক্রীড়া ভিসার আওতায় পড়েন তারা নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবেন।
জাতীয় স্বার্থে প্রয়োজন হলে বিশেষ ছাড় দেওয়ার সুযোগও থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার জানিয়েছে, নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাগুলো ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা মোট ৩৯ দেশ
আফগানিস্তান, মিয়ানমার, শাদ, রিপাবলিক অব কঙ্গো, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, এরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, ইয়েমেন, বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান, ভেনিজুয়েলা, বুরকিনা ফাসো, মালি, নাইজার, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, বেনিন, আইভরি কোস্ট, ডমিনিকা, গ্যাবন, গাম্বিয়া, মালাউই, মৌরিতানিয়া, নাইজেরিয়া, সেনেগাল, তানজানিয়া, টোঙ্গা, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ে।


Comments