মালদ্বীপ ভ্রমণে যে ৭ জায়গা দেখতে ভুলবেন না

ছবি: সংগৃহীত

অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত দেশ মালদ্বীপ পর্যটনের জন্য সারাবিশ্বে সুপরিচিত। সুন্দর সুন্দর দ্বীপ, মনোমুগ্ধকর সৈকত এবং পাঁচ তারকা রিসোর্ট থাকায় দেশটি বিলাসবহুলভাবে ছুটি কাটানোর জন্য আদর্শ। সাদা বালির সৈকত, স্বচ্ছ পানি এবং নীল আকাশের জন্যও মালদ্বীপের খ্যাতি রয়েছে।

প্রাকৃতিক দৃশ্য ছাড়াও পর্যটকদের জন্য নানা রকম রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতারও ব্যবস্থা আছে দেশটিতে। সঙ্গে আছে সুস্বাদু খাবার। তবে উন্নত নৌ পরিবহন ব্যবস্থা এবং আরও স্বাধীন গেস্টহাউসের আবির্ভাবের ফলে মালদ্বীপ ভ্রমণের খরচও এখন ধীরে ধীরে কমছে। অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই দেশটিতে দর্শনীয় স্থানের কোনো অভাব নেই। তবে যে ৭টি দর্শনীয় স্থান না দেখলে আপনার ভ্রমণ অপূর্ণ থেকে যেতে পারে, সেগুলো হচ্ছে- 

মালে সিটি

মালদ্বীপ ভ্রমণ শুরু করতে পারেন রাজধানী মালে সিটি থেকে। সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য, নীল সমুদ্র এবং তাল গাছের বিশাল সমারোহের কারণে মালে একটি অবশ্য-দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। শহরটি একদিকে ঐতিহাসিক স্থাপত্য এবং অন্যদিকে নীল ও সবুজে আবৃত।

ছবি: সংগৃহীত

মালেতে উপভোগ করার মতো অনেক আকর্ষণীয় জিনিস রয়েছে। মালের রাস্তার দুই পাশের রঙিন বাজারগুলো ঘুরে দেখতে পারেন। এ ছাড়া জাতীয় জাদুঘরে গিয়ে দেশটির সমৃদ্ধ ঐতিহ্য সম্পর্কেও ধারণা পেতে পারেন।

ভাধু আইল্যান্ড

মালদ্বীপের সৈকতগুলো বিশ্বের সবচেয়ে চমকপ্রদ সৈকতগুলোর মধ্যে অন্যতম। স্বচ্ছ নীল পানি ও শ্বাসরুদ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য ভাধু আইল্যান্ডের পরিচিতি ব্যাপক। দ্বীপের পানিতে যখন 'তারার মেলা' বসে, তখন এক ঐশ্বরিক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

ছবি: সংগৃহীত

সমুদ্রের ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন বায়োলুমিনেসেন্স উৎপাদন করে, যার প্রভাবে নীল নিয়ন আলোর মতো সমুদ্রের পানিতে অসংখ্য তারা-সদৃশ বস্তুর উপস্থিতি দেখা যায়। যদিও এ দৃশ্য সচরাচর দেখা যায় না। গ্রীষ্মের শেষ থেকে বছরের শেষ সময় পর্যন্ত এটি দেখার সম্ভাবনা বাড়ে। যদিও তখন এমন দৃশ্য দেখা যাবে, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। যেকোনো প্রাকৃতিক ঘটনার মতোই এই চমকপ্রদ দৃশ্যটি পুরোপুরি উপভোগ করার জন্য একটু ভাগ্যের প্রয়োজন! 

ইথা আন্ডারসি রেস্টুরেন্ট

মালদ্বীপের স্থানীয় ভাষায় 'ইথা' অর্থ 'মুক্তার মা'। এখানকার মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্যের বর্ণনা দিতে এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়। এই রেস্তোরাঁটি হিলটন মালদ্বীপ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পার অংশ। নিরিবিলি সময় কাটানোর জন্য এটি একটি আদর্শ স্থান।

ছবি: সংগৃহীত

রেস্তোরাঁটিতে মাত্র ১৪ জন অতিথির বসার স্থান আছে এবং এটি সমুদ্র পৃষ্ঠের পাঁচ মিটার নিচে অবস্থিত। ছাদের ঢালটি টানেলের মতো, যার ফলে দর্শনার্থীরা তাদের চারপাশের প্রবাল প্রাচীরের প্যানোরমিক দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। মালে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সি প্লেনে করে এখানে আসতে হয়। পশ্চিমা ও এশীয় খাবার পাওয়া যায় এখানে, তবে খাবারের দাম স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। ১২০ ডলারের নিচে কোনো খাবার পাওয়া যাবে না রেস্তোরাঁটিতে।

হোয়েল সাবমেরিন

মালদ্বীপের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার মধ্যে একটি হচ্ছে হোয়েল সাবমেরিনে করে সমুদ্রের তলদেশ উপভোগ করা। সাবমেরিনটি দেখতে অনেকটা তিমির মতো, তাই এর নাম হোয়েল সাবমেরিন। এটি একটি অবিস্মরণীয় রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা।

ছবি: সংগৃহীত

হোয়েল সাবমেরিনে করে সমুদ্রের তলেদেশে গেলে আপনি মালদ্বীপের বিচিত্র ও রঙিন জলজ প্রাণীদের সাক্ষাৎ পাবেন। হলুদ বক্সফিশ, নীল স্ন্যাপার, লায়নফিশ, কচ্ছপ এবং হাঙরও দেখতে পারবেন। মালদ্বীপে অনেকে ডাইভ করেন। আপনি যদি ডাইভ করতে না চান, তাহলে সমুদ্রের নিচের জীবন দেখতে হোয়েল সাবমেরিনই সবচেয়ে ভালো বিকল্প।

গ্র্যান্ড ফ্রাইডে মসজিদ

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী মালের গ্র্যান্ড ফ্রাইডে মসজিদ বিশ্বের অন্যতম বড় মসজিদ। প্রায় ৫ হাজার মানুষ একসঙ্গে এখানে নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদটির বহিঃসজ্জায় ব্যবহৃত চমৎকার মার্বেল এবং বিশাল সোনালী গম্বুজের জন্য প্রতি বছর বহু পর্যটক এবং তীর্থযাত্রী এখানে আসেন। মসজিদটি মালের ইসলামী কেন্দ্রের অংশ এবং শহরের প্রধান জেটির কাছে অবস্থিত, তাই পানি থেকেই এটি দেখা যায়। যেকোনো দিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মসজিদটি পরিদর্শন করা যাবে।

ব্যানানা রিফ

ছবি: সংগৃহীত

এই প্রবাল প্রাচীরটিকে উপর থেকে দেখতে কলার মতো লাগে, তাই এর নাম দেওয়া হয়েছে ব্যানানা রিফ। মালের উত্তরাংশে এই প্রবাল প্রাচীরটি অবস্থিত। শুধু মালদ্বীপেই নয়, সারাবিশ্বের মধ্যেই সম্ভবত এটি অন্যতম সেরা ডাইভিং স্পট। বিভিন্ন রঙের নান্দনিক প্রবাল ও কোরাল দেখা যায় এখানে, সেইসঙ্গে আছে সমৃদ্ধ সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র এবং বেশ কয়েকটি পাথরখণ্ড ও গুহা। আপনি যদি সমুদ্রের নিচে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা পেতে চান, তাহলে ব্যানানা রিফ সেরা জায়গা। ডাইভিংয়ের জন্যও এটি খুবই রোমাঞ্চকর একটি জায়গা, কারণ এখানে প্রায়ই হাঙর ও ব্যারাকুডার দেখা পাওয়া যায়!

ফুলহাদু আইল্যান্ড

ছবি: সংগৃহীত

স্বচ্ছ হ্রদ, সাদা বালুর সৈকত, তাল গাছ এবং শান্ত পরিবেশের জন্য ফুলহাদু আইল্যান্ড মালদ্বীপের অন্যতম জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। এই দ্বীপটি বিশ্বের অন্যতম দুর্গম দ্বীপ। এখানে কোনো জনবসতিও নেই। এই দ্বীপে অবস্থানের সময় স্নোরকেলিং, স্কুবা ডাইভিং, ডলফিন ও কচ্ছপ দেখে সময় কাটাতে পারেন।

অনুবাদ করেছেন আহমেদ হিমেল

 

Comments

The Daily Star  | English
Trend of Provision Shortfall in the banking sector

Provision shortfall at banks widens six times

The provision shortfall in the banking sector has increased more than six times to Tk 170,655 crore over the past year, Bangladesh Bank data show, exposing the fragile financial health of commercial lenders due mainly to large-scale scams and irregularities during the previous regime.

9h ago