খাগড়াছড়িতে সহিংসতার ঘটনায় পুলিশের ৩ মামলা

খাগড়াছড়ি ও গুইমারা উপজেলায় সহিংসতার ঘটনায় তিনটি মামলা করেছে পুলিশ। এর মধ্যে গুইমারা থানায় ২টি ও খাগড়াছড়ি সদর থানায় একটি মামলা করা হয়।
গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গুইমারা উপজেলায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সহিংসতায় ৩ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। নিহতদের পরিবার মামলা করতে রাজি না হওয়ায় পুলিশ বাদী হয়ে এ মামলা করেন।'
এছাড়া, সরকারি কাজে বাধা, সরকারি কর্মচারীদের আহত করা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ২৫০-৩০০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেছে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে, ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সরকারি কাজে বাধা দিয়ে সহিংসতার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আনুমানিক ৭০০-৮০০ জনের বিরুদ্ধে খাগড়াছড়ি সদর থানায় মামলা করেছে পুলিশ।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুই থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। বর্তমানে জেলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থায় আছে। গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত আছে।'
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা ও গুইমারা উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও আজ বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়িতে যানবাহন ও লোকজনের চলাচল ছিল স্বাভাবিক।
বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ি সাপ্তাহিক হাট-বাজারে কিছু লোকজন দেখা গেছে।
কবে নাগাদ ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, 'পরিদর্শন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হয়েছে। তারপরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি মনে করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক তাহলে ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হবে।'
গুইমারা উপজেলায় এক পাহাড়ি স্কুলশিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে গত ২৩ সেপ্টেম্বর। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শয়ন শীল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর এর প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশের পর সড়ক অবরোধের ডাক দেওয়া হয়।
অবরোধ শুরু হলে গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে খাগড়াছড়ির গুইমারার রামেসু বাজার। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে অবরোধকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সে সময় গুলিতে তিনজন নিহত হন এবং সেনাবাহিনীর মেজরসহ আহত হন অন্তত ২০ জন।
মঙ্গলবার সিভিল সার্জনের কাছে জমা দেওয়া কিশোরীর ডাক্তারি প্রতিবেদনে জমা দেওয়া রির্পোটে ধর্ষনের আলামত পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি সিভিল সার্জন ছাবের আহম্মেদ বলেন, "কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের দেওয়া প্রতিবেদনে ১০টি সূচকের সব কটিতে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি। তারপরও এটি আদালতের বিষয়। আদালত সত্য মিথ্যা যাচাই করবে। ওই কিশোরীকে ২৩ তারিখ রাতে ভর্তি করা হয় এবং ২৪ তারিখ সেম্বল নেওয়া হয়।
তিনি আরো বলেন, গতকাল রাতে রিপোর্ট পাওয়ার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপারের কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হয়েছে।
কিশোরীর পিতা বলেন, এ বিষয়ে তিনি কোন কথা বলতে চান না। তিনি আদালতে কথা বলবেন। তার মেয়ে এখনো ছোট ভবিষ্যত রয়েছে। তার জানা মতে রির্পোট প্রকাশ হওয়ার কথা নয়। কিভাবে তার মেয়ের ছবিসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করা হচ্ছে এ বিষয়ে তিনি জানতে চান।
Comments