‘নিকোটিন পাউচ’ কারখানার অনুমোদন বাতিলে আইনি নোটিশ
নারায়ণগঞ্জের মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোনে ফিলিপ মরিস বাংলাদেশ লিমিটেডকে 'নিকোটিন পাউচ' কারখানা স্থাপনের অনুমোদন বাতিল করতে সরকারের কাছে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে এই অনুমোদনকে সংবিধানবিরোধী, বেআইনি ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন বলা হয়েছে।
পাবলিক হেলথ ল'ইয়ার্স নেটওয়ার্ক (পিএইচএলএন), তামাকবিরোধী কর্মী সাইফুদ্দিন আহমেদ, আর্থ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মো. আমিনুল ইসলাম ও প্রত্যাশা অ্যান্টি-ড্রাগ ক্লাবের মহাসচিব হেলাল উদ্দিনের পক্ষে শনিবার ব্যারিস্টার জুয়েল সরকার নোটিশটি পাঠান।
এতে বলা হয়েছে, বেজা (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ) ও বিডা (বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) যেভাবে ফিলিপ মরিসকে 'নিকোটিন পাউচ' উৎপাদন কারখানা স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে, তা সংবিধানবিরোধী ও বেআইনি।
একইসঙ্গে এটি জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া নির্দেশনারও লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
নোটিশ পাঠানো হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর, স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছে।
এ ছাড়া, বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং ফিলিপ মরিস বাংলাদেশ লিমিটেডকেও নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
নোটিশে তুলে ধরা তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমান মতে বাংলাদেশে প্রতি বছর তামাক–সংশ্লিষ্ট রোগে মারা যান প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ। বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির ২০১৯ সালের গবেষণায় দেখা যায়, ২০১৭–১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের কারণে চিকিৎসা ব্যয় ও উৎপাদনশীলতা কমে অর্থনীতির ক্ষতি হয়েছে ৩ হাজার ৫৬০ কোটি টাকার মতো। বিপরীতে ওই সময়ে তামাক খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয় ছিল ২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তামাক ব্যবহার দেশে ক্যানসার, হৃদরোগ, স্ট্রোক ও শ্বাসযন্ত্রের রোগের মতো অসংক্রামক রোগ বাড়াচ্ছে। ধূমপান ও তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (সংশোধিত) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসি–এর অধীনে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ হয়নি।
ব্যারিস্টার জুয়েল সরকার নোটিশে জানান, তামাকপণ্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং সংবিধানের ১৮(১) ও ৩২ অনুচ্ছেদে বর্ণিত জীবন ও স্বাস্থ্যের মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন।
নোটিশে দুই দিনের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। সময়মতো সাড়া না মিললে হাইকোর্টে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।


Comments