পোস্টাল ভোটিং

বিদেশে থেকে আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে কীভাবে নিবন্ধন?

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে বিদেশে অবস্থানরত ৩১ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি ভোটার 'পোস্টাল ভোট বিডি' অ্যাপে নিবন্ধন করেছেন। 

আজ মঙ্গলবার দপুর দেড়টার দিকে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের পোস্টাল ভোটিং আপডেট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গত ১৮ নভেম্বর 'পোস্টাল ভোট বিডি' অ্যাপটি উদ্বোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। ওই দিনই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মোট ১৪৮টি নির্দিষ্ট দেশে পোস্টাল ভোটিং নিবন্ধনের সময়সূচি ঘোষণা করে ইসি। 

ইসি থেকে জানা গেছে, ১৯ থেকে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা নিবন্ধন করেছেন। ২৪ থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত উত্তর আমেরিকা, ওশেনিয়ায় দেশগুলোতে বসবাসরত বাংলাদেশিরা নিবন্ধন করতে পারবেন। 

২১ নভেম্বর ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইউরোপ, ৪ থেকে ৮ ডিসেম্বর সৌদি আরব। ৯ থেকে ১৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং ১৪ থেকে ১৮ ডিসেম্বর সৌদি আরব ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের প্রবাসী ভোটাররা নিবন্ধন করতে পারবেন।

কীভাবে পোস্টাল ব্যালটের জন্য নিবন্ধন 

নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় প্রবাসী ভোটার যে দেশ থেকে ভোট দিতে ইচ্ছুক, কেবলমাত্র সেই দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে। 

পোস্টাল ব্যালট প্রাপ্তি এবং ভোট দেওয়ার জন্য গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে পোস্টাল ভোট বিডি মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড ও ইনস্টল করতে হবে।

ব্যবহারকারী বাংলা অথবা ইংরেজি যেকোনো একটি ভাষা নির্বাচন করে আযাপে নিবন্ধনের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও নির্দেশাবলী সম্পর্কে জানতে পারবেন। 

আবেদনকারী ভোটার নিয়ম অনুযায়ী নিবন্ধন করবেন। ওটিপি, লাইভলিনেস ও এনআইডি যাচাইপূর্বক আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।

বিদেশে ব্যালটপ্রাপ্তি নিশ্চিতকল্পে নির্ভুল ঠিকানা দেওয়া আবশ্যক।

পোস্টাল ব্যালটে কীভাবে ভোটগ্রহণ 

পোস্টাল ভোট বিডি মোবাইল অ্যাপে নিবন্ধিত সব ভোটারের কাছে পর্যায়ক্রমে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধিত ভোটাররা তাদের ঠিকানায় নির্বাচন কমিশনের পাঠানো পোস্টাল ব্যালটসহ খাম পাবেন। 

খাম পাওয়ার পরপরই ভোটাররা পোস্টাল ভোট বিডি মোবাইল অ্যাপে লগইন করে খামের ওপর থাকা কিউআর কোডটি স্ক্যান করবেন। এতে তিনি যে ব্যালট পেপারটি হাতে পেয়েছেন তা সিস্টেমে শনাক্ত হবে। 

ভোটাররা নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া বহির্গামী খামে একটি পোস্টাল ব্যালট সংলিত খামের মধ্যে পোস্টাল ব্যালট পেপার, একপাশে ভোট দেওয়ার নির্দেশনা, অপর পাশে একটি ঘোষণাপত্র সংবলিত একটি পৃথক কাগজ এবং একটি ফেরত খাম পাবেন, যেখানে সংশ্লিষ্ট আসনের রিটার্নিং অফিসারের ঠিকানা মুদ্রিত থাকবে।

ব্যালট পেপারে সব প্রতীক মুদ্রিত থাকবে যার প্রতিটি প্রতীকের পাশে ফাঁকা ঘর থাকবে। ভোট দেওয়ার আগে ভোটাররা নির্দেশনাপত্র পড়ে ঘোষণাপত্রে যথাযথভাবে ব্যালট পেপারের ক্রমিক নং, ভোটারের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর উল্লেখ করে সই করবেন। 

নিরক্ষর অথবা অক্ষম ব্যক্তি অন্য একজন বৈধ ভোটারের সাহায্যে ঘোষণাপত্রের সংশ্লিষ্ট অংশ পুরণের পর সত্যয়ন করে সই করবেন। এই ঘোষণাপত্র বাঁ সত্যয়নপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ছাড়া ব্যালট পেপারটি বৈধ হিসেবে গণ্য হবে না। আর প্রতীক বরাদ্দ সম্পন্ন হলে অ্যাপের মাধ্যমে অথবা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে ভোটাররা জানতে পারবেন।

ভোট দেওয়ার জন্য ভোটাররা অ্যাপে লগইন করে সংশ্লিষ্ট আসনের প্রার্থীদের তালিকা দেখতে পাবেন এবং নির্দেশিকাতে প্রদত্ত পদ্ধতিতে ব্যালট পেপারে মুদ্রিত প্রতীকের পাশে ফাঁকা ঘরে টিক বাঁ কিংবা ক্রস চিহ্ন দেবেন। ভোট দেওয়ার পদ্ধতির ভিডিও টিউটোরিয়াল বা ডিজিটাল কন্টেন্ট থাকবে অ্যাপে।

পোস্টাল ব্যালট পেপারে ভোটার ভোট চিহ্নিত করার পর শুধুমাত্র ব্যালট পেপারটি ছোট খামে রেখে খামটি বন্ধ করবেন। এরপর এই ব্যালট পেপার সংবলিত খামটি এবং সই করা ঘোষণপত্রটি রিটার্নিং অফিসারের ঠিকানা মুদ্রিত খামে প্রবেশ করিয়ে বন্ধ করতে হবে। এরপর খামটি ডাকযোগে দ্রুত পাঠাতে হবে। 

উভয় খামই সেলফ অ্যাডহেসিভযুক্ত থাকবে। ফলে সেলফ অ্যাডহেসিভ অংশের উপরিভাগের টেপটি খুলে নিলেই খাম বন্ধ হবে। খামটি পাঠানোর জন্য কোনো ডাক মাশুল প্রেরককে দিতে হবে না। পোস্টাল ভোট গণনা শুরু করার আগ পর্যন্ত প্রাপ্ত পোস্টাল ব্যালট পেপারগুলোই কেবল গণনার আওতায় আসবে। 

নির্বাচন কমিশন থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে পোস্টাল ব্যালট ভোটারের কাছে পাঠানোর পর থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ফেরত আসা পর্যন্ত সমগ্র প্রক্রিয়াটি বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যালটের অবস্থান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা যাবে।

পোস্টাল ব্যালট পেপার গণনার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি গণনাকক্ষ প্রস্তুত করা হবে। পোস্টাল ভোট গণনার সময় প্রার্থী, নির্বাচনি এজেন্ট, প্রার্থীর প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, পর্যবেক্ষকরা অন্যান্য কেন্দ্রের মতো একই নীতিমালা অনুসরণ করে উপস্থিত থাকতে পারবেন। 

পোস্টাল ব্যালট পেপার গণনা শেষ হলে অন্যান্য সাধারণ কেন্দ্রের মতো পোস্টাল ব্যালটের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের পাঠানো সাধারণ ভোটকেন্দ্রের ফলাফলের পাশাপাশি পোস্টাল ব্যালটে প্রাপ্ত ভোটের হিসাব ঘোষণা ও অন্যান্য কেন্দ্রের ফলের সঙ্গে এক করে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করবেন। পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে প্রাপ্ত ভোটের হিসাব এক না করে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা যাবে না।

Comments

The Daily Star  | English

Victory day today: A nation born out of blood and grit

The tide of war had turned by mid-December in 1971. The promise of freedom was no longer a dream. It had hardened into tangible certainty.

7h ago