‘ওএমএস চালু না হলে একবেলা না খেয়ে থাকতে হবে’

ওএমএস : দোকান চালু না হলে একবেলা না খেয়ে থাকতে হবে
লালমনিরহাট শহরে কলেজ রোডে ওএমএস দোকানে মানুষের ভিড়। ৩০ নভেম্বর, ২০২২।ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) দোকানগুলোয় চাল-আটা বিক্রি আজ বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ হওয়ায় হতাশ লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের কয়েক হাজার দরিদ্র পরিবার।

সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে খাদ্য বিভাগ ওএমএস বন্ধ ঘোষণা করেছে তবে কী কারণে বন্ধ করা হয়েছে তা স্পষ্ট করে বলতে পারছে না জেলা কর্তৃপক্ষ।

খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাটে ২১ ওএমএস ডিলারের মাধ্যমে প্রতিদিন ১৫ মেট্রিক টন চাল ও ৫ মেট্রিক টন আটা এবং কুড়িগ্রামে প্রতিদিন ২৮ ওএমএস ডিলারের মাধ্যমে ২৮ মেট্রিক টন চাল ও ৯ মেট্রিক টন আটা বিক্রি করা হতো।

প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকা আর প্রতি কেজি আটা ২৪ টাকা দরে বিক্রি হতো। ওএমএস দোকানগুলো থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৪ হাজার দরিদ্র পরিবারের লোকজন কম দামে চাল ও আটা কেনার সুযোগ পান।

লালমনিরহাট পৌরসভার শহীদ শাহজাহান কলোনির রিকশাচালক নুরুল ইসলাম (৪৮) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাজারে চাল-আটার দাম অনেক বেশি। ওএমএস দোকান থেকে কম দামে চাল-আটা কিনে সংসার চালাচ্ছিলাম। আজ থেকে ওএমএস বন্ধ হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি।'

'ওএমএস দোকানে চাল-আটা বিক্রি চালু না থাকলে আমাদেরকে একবেলা না খেয়ে থাকতে হবে,' যোগ করেন তিনি।

লালমনিরহাট শহরের লিচুবাগান কলোনি এলাকার দিনমজুর দিলারা বেগম (৪৪) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল সকালে ওএমএস দোকানে চাল কিনতে এসে দেখি দোকান বন্ধ। পরে জানতে পারি দোকান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কম দামে চাল কিনতে না পেরে চরম হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছি।''

তিনি আরও বলেন, 'যে টাকায় ওএমএস দোকান থেকে ৫ কেজি চাল কিনেছিলাম সেই টাকা দিয়ে বাজার থেকে ৩ কেজি চালও কিনতে পারিনি।'

ওএমএস দোকানে প্রতিদিন চাল-আটা বিক্রি চালু রাখার দাবি জানান তিনি।

কুড়িগ্রাম শহরের স্টেশন এলাকার রিকশাচালক আব্দুল খালেক (৫০) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওএমএস দোকান চালু রাখা না হলে বাজার থেকে বেশি দামে চাল-আটা কিনে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়বে।'

লালমনিরহাট শহরে ওএমএস ডিলার আব্দুর রহিম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অনেকেই জানতেন না ওএমএস দোকান আপাতত বন্ধ। তাই তারা সকালে এসে দোকানের সামনে ভিড় করেছিলেন। পরে জানতে পেরে তারা চরম হতাশ হয়ে পড়েন।'

'আগামী ৫ ডিসেম্বর থেকে ওএমএস দোকান আবার চালু করা হবে বলে আমরা খাদ্য কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি,' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'কী কারণে আজ থেকে ওএমএস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে তা আমরা বলতে পারবো না।'

লালমনিরহাট জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক রফিকুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আজ থেকে ওএমএস বন্ধ রাখা হয়েছে। কী কারণে এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা বলতে পারবো না।'

'তবে আগামী ৫ ডিসেম্বর থেকে ওএমএস কার্যক্রম আবার চালু হবে এমন নির্দেশও পাওয়া গেছে,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

'Shoot directly': Hasina’s order and deadly aftermath

Months-long investigation by The Daily Star indicates state forces increased deployment of lethal weapons after the ousted PM authorised their use

1d ago