ছাত্র-জনতার স্বপ্নের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে: রফিউর রাব্বি

নারায়ণগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আলোক প্রজ্বলন কর্মসূচি। ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার স্বপ্নের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি।

রোববার বিকেলে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার সাড়ে ১১ বছর উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ শহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আলোক প্রজ্বলন কর্মসূচিতে তিনি এই মন্তব্য করেন।

ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি বলেন, 'আমরা স্বাধীনতার ৪৩ বছর পার করে উপলব্ধি হয়েছে তিন থেকে চার বছর ছাড়া রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে দুর্বৃত্ত সরকার। একাত্তরে চেয়েছিলাম এদেশ সকলের হয়ে উঠবে। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের দেশ হবে। এত বছরেও দেশটি সেভাবে হয়ে উঠেনি।'

তিনি বলেন, 'আমরা নির্বাচনী ব্যবস্থার পরিবর্তনের কথা বলছি। এর মানে মানুষ পছন্দের প্রার্থীকে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবে। স্বাধীনতার পর প্রথম নির্বাচনও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। অন্তত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যে নির্বাচন হয়েছে, সেগুলোতে মানুষ নির্দ্বিধায় ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এ ছাড়া আর কখনো পায়নি।'

'শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আশার সঞ্চার হয়েছিল, এখন আমরা দেশটাকে নিজেদের মতো করে পাব। এ দেশ আমাদের হবে। কিন্তু নিশ্চয়তা পাচ্ছি না। বারবার চেয়েছি হয়নি। জনগণের ভোটে, বিনা ভোটে যারাই ক্ষমতায় গেছে, তারাই জনগণের বিপক্ষে কাজ করেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক মাস। এক মাসে সব হয়ে যাবে, এটা আমরা বিশ্বাস করি না। তবে ছাত্র-জনতার স্বপ্নের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দখল দেখছি আমরা, এর বিরুদ্ধে সরকারের শক্ত অবস্থান আশা করি। শেখ হাসিনার ১৬ বছরে পুলিশ বাহিনী কলুষিত হয়েছে। জনগণের বিরুদ্ধে একটি নিকৃষ্ট বাহিনী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। পুলিশ সদস্য আমাদেরই স্বজন। আমাদেরই ভাই, বন্ধু। দেশ গড়তে তাদের লাগবে।'

'বিভিন্ন ধর্মের মানুষ এদেশে রয়েছে। ইসলামের মধ্যেও বিভিন্ন মতে বিশ্বাসী মানুষ রয়েছে। প্রত্যেককে স্ব স্ব বিশ্বাস, ধর্ম নিয়ে থাকতে দিতে হবে। এটা সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। এক মত অন্যমতের টুঁটি চেপে ধরবে, কখনোই এই আকাঙ্ক্ষা করি না। সব মতকে ধারণ করে একসঙ্গে একই স্রোতে অগ্রসর করা একাত্তর এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্পিরিট ছিল। আমরা বৈচিত্র্য নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। হাজার বছরের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। এর জন্য যা যা প্রয়োজন আমরা সবই করব', যোগ করেন তিনি।

রফিউর রাব্বি বলেন, 'সরকারের পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই সংগ্রাম শেষ হয়ে যায় না। বিপ্লবের পর সংস্কৃতির যে বিপ্লব, সেটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশে যেটা কখনো হয়নি। সংস্কৃতির পুনর্জাগরণ যদি ঘটানো না যায়, মানুষের চিন্তার প্রতিফলন যদি সংস্কৃতির মাধ্যমে যদি জাগিয়ে তোলা না যায়, আমরা এদেশকে কোনোভাবে আমাদের মতো করে তুলতে পারব না। দুর্বৃত্তের রয়ে যাবে।'

সেই সময় তিনি সব হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।

কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন খেলাঘর আসরের সাবেক সভাপতি রথীন চক্রবর্তী, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ, সিপিবির জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক দিপু, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা কমিটির সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিমাংশু সাহা, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল প্রমুখ।

Comments

The Daily Star  | English
bangladesh bank buys dollar

BB asks female employees not to wear short sleeves at work

The Bangladesh Bank has issued a dress code for its officials and employees, suggesting female workers refrain from wearing short-sleeved and short-length dresses, and leggings while on duty.

5h ago