‘আ. লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে সাবেক বিএনপি নেতাকে মারধর

সাবেক বিএনপি নেতা মুকুলকে মারধরের পর তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় সাবেক এক বিএনপি নেতাকে 'আওয়ামী লীগের দোসর' আখ্যা দিয়ে মারধর ও জামাকাপড় ছিঁড়ে লাঞ্ছিতের ঘটনা ঘটেছে।

আজ রোববার দুপুরে উপজেলার হরিপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী দ্য ডেইলি স্টারকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মারধরের শিকার আতাউর রহমান মুকুল (৬৮) বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যন ও মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি।

তার দাবি, চাঁদা না পেয়ে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার নির্দেশে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে যাওয়া মুকুলকে মারধর ও লাঞ্ছিত করার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি প্রাইভেটকার থেকে টেনে নামিয়ে মাটিতে ফেলে মারধর করা হচ্ছে তাকে। মারধরের সময় মুকুল 'আওয়ামী লীগের দোসর' বলতে শোনা যায় কাউকে। তার পরনের পাঞ্জাবি ও পায়জামা ছিঁড়ে ফেলা হয়।

ওসি লিয়াকত বলেন, 'কয়েকদিন আগে হরিপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রে একটি কাজ পায় এমএস দেওয়ান এন্টারপ্রাইজ। ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে দুপুরে বিদ্যুৎকেন্দ্রে যান আতাউর রহমান মুকুল। তখন তাকে স্থানীয় কয়েকজন মারধর ও হেনস্তা করেন।'

ওসি আরও বলেন, 'যারা হামলা করেছে তারা স্থানীয় বিএনপি নেতা বজলুর রহমানের অনুসারী। ঠিকাদারি কাজটি পেতে তারাও দরপত্র দিয়েছিলেন।'

মারধরের শিকার মুকুল স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি ঠিকাদারি কাজ করি। বিদ্যুৎকেন্দ্রের এই কাজটি আমি করার দায়িত্ব পেয়েছি। আজ আমি সেখানে যাওয়ার পরপর আমার ওপর হামলা হয়। গাড়ি থেকে টেনেহিচড়ে নামিয়ে আমাকে মারধর করে জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলা হয়।'

অভিযুক্ত বজলুর রহমানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বজলুর রহমানের সঙ্গে আমার কখনোই খারাপ সম্পর্ক ছিল না। আমরা একসঙ্গে জেলও খাটছি। কিন্তু তিনি আমার ওপর এভাবে হামলা করাবে, ধারণাও করতে পারিনি।'

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বজলুর রহমান ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছিল এমএস দেওয়ান এন্টারপ্রাইজ।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, চাঁদা না দিলে কোনো কাজ করতে পারবে না বলেও গত ২৩ জুন বিএনপি নেতা বজলুর রহমান ও তার অনুসারীরা হুমকি দেয়।

হামলার আশঙ্কা থেকে পুলিশকে জানিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বলে জানান আতাউর রহমান মুকুল। ঘটনার সময় সেখানে চারজন পুলিশ সদস্যও উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আল মেহেদী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নিরাপত্তাজনিত শঙ্কার কারণে আগেই ঘটনাস্থলে স্থানীয় ফাঁড়ির পুলিশ পাঠানো হয়। কিন্তু পুলিশ পৌঁছানোর দুয়েক মিনিটের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে যায়। তাৎক্ষনিক পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে নিরাপত্তা হেফাজতে নেন।'

অভিযুক্ত বজলুর রহমান পার্শ্ববর্তী সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি। তার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে একটি গণমাধ্যমে তিনি দাবি করেছেন, ঠিকাদারি কাজটি যে প্রতিষ্ঠান পেয়েছে তার মালিক স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা। ওই আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষ নিয়ে ঠিকাদারি কাজ করতে আসায় 'ক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতা' মুকুলকে মারধর করেছেন।

এই ঘটনার সঙ্গে তার বা তার ঘনিষ্ঠ কোনো ব্যক্তির জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

ওসি লিয়াকত জানান, মারধরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ ইতোমধ্যে অভিযান শুরু করেছে।

Comments

The Daily Star  | English

SC Secretariat Ordinance: Judges may hold executive posts

Lower court judges will be able to hold executive positions in the law ministry as well as state entities even after the establishment of a Supreme Court secretariat aimed at keeping the judiciary free from the executive’s influence, says a draft ordinance.

3h ago