‘আ. লীগ এবার দিনের বেলায় ভোট ডাকাতির আয়োজন করেছে’

ছবি: স্টার

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, 'এবার রাতে নয়, দিনের বেলায় ভোট ডাকাতির আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ। এই কারণে তারা আরপিও সংশোধন করেছে। যাতে ভোট ডাকাতি জায়েজ হয়।'

এদিকে আন্দোলন-সংগ্রাম দমন করতে অত্যাবশকীয় পরিষেবা আইন ও ডিজিটাল থেকে সাইবার নিরাপত্তা আইনসহ নানা রকমের আইনি পরিবর্তন তারা করছে এবং করতে থাকবে।

আজ শুক্রবার সকালে নারায়ণগঞ্জ শহরে আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

দলটির 'গণতন্ত্রের সংগ্রাম ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ৩১ দফা' শীর্ষক আলোচনায় বিএনপিসহ কয়েকটি বিরোধী রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।

বর্তমান সরকার নিজের গদি টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশকে বাজি ধরেছে মন্তব্য করে সভায় সাকি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী আবার যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন। অন্যদের নিষেধ করে নিজেই আটলান্টিক পাড়ি দিচ্ছেন। এই মুহূর্তে এত বেশি বিদেশ সফর কতটা দেশের পররাষ্ট্র নীতির স্বার্থে আর কতটা নিজের গদি টিকিয়ে রাখার স্বার্থে তা মানুষ বুঝে গেছে। এই সরকার নিজের গদি টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশকে নিয়ে বাজি ধরছে।'

মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সম্পাদক ও পরিচালককে 'ফরমায়েশি' সাজা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সবকিছু নিপীড়নমূলক হলেও মানুষের শেষ ভরসা থাকে আদালত। এ সরকার পুরো আদালতকে রাজনৈতিক বিরোধীদের দমনের হাতিয়ার করে রেখেছে।'

জোনায়েদ সাকি বলেন, 'একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ রাষ্ট্র তার নাগরিকদের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে বলা হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার পর বাহাত্তর সালের সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান শাসন ব্যবস্থা একটা ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থায় রূপ নিয়েছে। যেখানে প্রধানমন্ত্রীকে সার্বিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এটা পরিবর্তন করে আমরা ৩১ দফা কর্মসূচিতে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রস্তাব বলছি।'

এ ব্যবস্থার পরিবর্তন না হলে নির্বাচন হয়তো অনুষ্ঠিত হবে, কিন্তু মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা হবে না বলে মন্তব্য করেন এ রাজনৈতিক নেতা।

মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ গড়তে বিদ্যমান 'ফ্যাসিজমের' বিরুদ্ধে সব বিরোধী রাজনৈতিক দলকে সম্মিলিতভাবে আন্দোলনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।

সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন দেশে জনগণ ভোটাধিকার হারিয়েছে। জনবিরোধী এ সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে ভয় পায়। জনগণ ভোট দিতে পারলে তাদের হাতে-গোনা কয়েকটা ছাড়া অধিকাংশ আসনে জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। এটা তারাও জানে।'

বিদ্যমান প্রশাসনিক কাঠামোতে সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়া সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, 'দেশের ৩৯টি রাজনৈতিক দল ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সঠিক গণতান্ত্রিক অবস্থা ফেরাতে এক দফার উপর গণঅভ্যুত্থানের ডাক দিয়েছে। এ দাবি মেনে নিলে কোনো সংঘাতের প্রয়োজন নেই। কিন্তু সরকার এতে কর্ণপাত না করে আবারও পাতানো ও একদলীয় নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে। সুষ্ঠু নির্বাচন আওয়ামী লীগের অধীনে যে হতে পারে না তা ২০১৪ ও ১৮ সালে প্রমাণিত হয়েছে।'

গণসংহতির জেলা কমিটির সমন্বয়কারী তরিকুল সুজনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন জেএসডির জেলা সভাপতি খলিলুর রহমান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হোসেন, সুশাসনের জন্য নাগরিকের সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল, সমগীত সংস্কৃতি প্রাঙ্গণের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অমল আকাশ।

Comments

The Daily Star  | English

US halts new student visa interviews

The State Department prepares to expand social media vetting of foreign students.

9h ago