আ. লীগ ও অঙ্গসংগঠনের কেউ এনসিপির কোনো পদে থাকতে পারবে না: সারজিস
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের কেউ এনসিপির কোনো পদে থাকতে পারবে না।
তিনি আরও বলেছেন, 'আমরা হয় জনগণের হয়ে সরকারি দল হিসেবে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করব, না হয় শক্তিশালী বিরোধী দল হব। জাতীয় পার্টির মতো পোষা বিরোধী দল হতে আমরা আসিনি।'
আজ শুক্রবার রাজধানীর শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে এনসিপির ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) এবং ঢাকা জেলা শাখার সমন্বয় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সভায় সারজিস বলেন, 'আমরা জেলা ও মহানগরের আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া শুরু করতে যাচ্ছি। আমরা প্রত্যাশা করছি আজ থেকে তিন দিনের মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে কমিটি ঘোষণা করতে পারব। ১৫ নভেম্বরের মধ্যে জেলা ও মহানগরের আহ্বায়ক কমিটি আমাদের করতে হবে।'
'৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে ওয়ার্ড, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন কিংবা মহানগর, থানায় এনসিপির আহবায়ক কমিটি থাকতে হবে। যদি আমরা এটা করতে পারি তাহলে আগামী সংসদ নির্বাচনে এনসিপি দেশের শক্তিশালী দুটি রাজনৈতিক দলের একটি হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে,' বলেন তিনি।
এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, বাংলামটরের অফিসে বসে কোনো কমিটি দেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, 'স্পষ্ট করে বলি সবার সঙ্গে সবার যোগাযোগ হবে না, কিন্তু যার সঙ্গে যার যোগাযোগ হবে, তা কোনোভাবে ব্যহত করার সুযোগ নেই। সেন্ট্রাল কমিটি দায়িত্ব নিয়ে মহানগরের আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করবে। যেকোনো সিচুয়েশনে মহানগরের আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব পার্টির সদস্যসচিব ও আহ্বায়কের সঙ্গে যাবতীয় যোগাযোগ রক্ষা করবেন। একইভাবে থানার আহ্বায়ক মহানগরের আহ্বায়ককে পাবেন। এটার নিশ্চয়তা মহানগরের আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবকে দিতে হবে।'
সারজিস বলেন, 'আমাদের ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্রশক্তিতে যাদের বয়স ২৫, তারা কাজ করবে। যাদের বয়স ২৫ থেকে ৩৫ তারা জাতীয় যুবশক্তিতে থাকবেন। আমরা এনসিপির জেলা, উপজেলা, মহানগর, থানা কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে যাদের চাই তাদের বয়স ৩০ এর বেশি হওয়া উচিত। আমাদের যুব সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে, আমাদের ছাত্র সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে।'
'প্রতিটি জেনারেশনকে যেন আমরা কানেক্ট করতে পারি, সেটা যেন আমাদের পলিসিতে থাকে,' বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের পদে ছিল এমন কেউ এনসিপির কোনো আহ্বায়ক কমিটিতে আসতে পারবে না। অভ্যুত্থান ও জুলাই বিরোধী অনলাইন-অফলাইন অবস্থান ছিল—এমন কেউ এনসিপির কোনো আহ্বায়ক কমিটিতে আসতে পারবে না।'
'অনেকে আছেন যারা তাদের জায়গা থেকে খুবই অ্যাকটিভ, কিন্তু ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে, তাদেরকে এনসিপির কোনো কমিটিতে আমরা জায়গা দেবো না। তবে, আমি আহ্বান করব, আমরা যেন নিজে সামনে আগাতে গিয়ে অন্যকে পেছন থেকে টেনে না ধরি। আমাদের এনসিপিতে অন্য রাজনৈতিক দলের ভালো মানুষদের জন্য দরজা খোলা,' বলেন তিনি।
সারজিস আরও বলেন, 'তবে কেউ যদি মনে করেন এনসিপিতে এসে নিজ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করবেন বা প্রত্যাশা পূরণ করবেন, তাহলে হয় আগের জায়গায় ফিরে যান কিংবা এনসিপি থেকে দূরে থাকুন। এনসিপি তার আদর্শকে সামনে রেখে চলবে। আমরা বিশ্বাস করি আগামীতে আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে প্রতি মাসে অন্তত একটি কর্মশালার আয়োজন করব। জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষাকে সামনে ধারণ করে এগিয়ে চলে এনসিপি এখন থেকে দুই বছর পরে বাংলাদেশের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত, গ্রহণযোগ্য ও প্রত্যাশিত রাজনৈতিক দল হবে।'


Comments