চট্টগ্রামে ১৮ মিটার পর্যন্ত নেমেছে পানির স্তর, বাড়ছে লবণাক্ততা ও আয়রন

প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের উপকূলীয় উপজেলাগুলোতে দিনদিন ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এতে সুপেয় পানির সংকট তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে সীতাকুণ্ড, কর্ণফুলী, আনোয়ারা, সন্দ্বীপ এবং বাঁশখালীর মতো উপকূলীয় এলাকায় অগভীর নলকূপে এখন আর পানি পাওয়া যাচ্ছে না বললেই চলে। যেসব গভীর নলকূপে পানি মিলছে, তাতেও লবণাক্ততা ও আয়রনের পরিমাণ সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, পানিতে লবণাক্ততার সহনীয় মাত্রা প্রতি লিটারে সর্বোচ্চ ৬০০ মিলিগ্রাম এবং আয়রনের মাত্রা সর্বোচ্চ ১ মিলিগ্রাম। কিন্তু চট্টগ্রামের উপকূলীয় কিছু এলাকায় গভীর নলকূপের পানিতে লবণাক্ততা পাওয়া যাচ্ছে ৩০০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত। আর আয়রন পাওয়া গেছে সর্বোচ্চ ১৬ মিলিগ্রাম।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত এক দশকে এই পাঁচ উপজেলায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর গড়ে ৩ থেকে ১৮ মিটার পর্যন্ত নিচে নেমে গেছে।

কর্ণফুলী উপজেলার জুলধা এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম জানান, তার বাড়িতে ও মুরগির খামারে লাগানো অগভীর নলকূপে এখন আর পানি ওঠে না। বাধ্য হয়ে যে সাবমার্সিবল পাম্প লাগিয়েছেন তাতে যে পানি ওঠে সেটা লবণাক্ত ও আয়রনযুক্ত।

বাঁশখালীর কালিপুর এলাকার বাসিন্দা খোরশেদ আলম জানান, বাঁশখালীতে সুপেয় পানির সংকট দীর্ঘদিনের। অগভীর নলকূপের পানিতে আয়রনের পাশাপাশি লবণাক্ততা রয়েছে। সম্প্রতি সাবমার্সিবল পাম্পের ব্যবহার বাড়লেও ভালো মানের পানি মিলছে না। নতুন পাম্পগুলোতে এখন ফিল্টার বসাতে হচ্ছে, এতে খরচও বাড়ছে।

গত ছয় অর্থবছরে চট্টগ্রাম জেলায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ২৭ হাজার ২২২টি সাবমার্সিবল পাম্প বরাদ্দ দিয়েছে।

সীতাকুণ্ডের কুমিরা এলাকার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, 'এলাকার ভারি শিল্পকারখানাগুলো গভীর নলকূপ দিয়ে বিপুল পরিমাণ পানি তুলে নেওয়ায় সাধারণ মানুষ অগভীর নলকূপে আর পানি পাচ্ছে না। এখন সুপেয় পানির জন্য ১০০০ থেকে ১২০০ ফুট গভীরে বোরিং করতে হচ্ছে।'

একই চিত্র দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপেও। এখানকার রহমতপুর, আজিমপুর, হরিশপুরসহ বেশিরভাগ এলাকায় গভীর নলকূপ ছাড়া সুপেয় পানি পাওয়া যায় না। সন্দ্বীপের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রবিন সরকার জানান, এখানে পানির স্তর খুব বেশি না নামলেও অগভীর নলকূপে আয়রন ও লবণাক্ততার সমস্যা প্রকট। তাই ১০০০ থেকে ১২০০ ফুট গভীরে যেতে হচ্ছে।

কর্ণফুলী উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী নাজিম উদ্দিন বলেন, 'চট্টগ্রাম জেলার মধ্যে কর্ণফুলীর পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। অগভীর নলকূপে পানি তো পাওয়া যায়ই না, গভীর নলকূপের পানিতেও কোথাও কোথাও সহনীয় মাত্রার চেয়ে ১৫ গুণ বেশি আয়রন পাওয়া যাচ্ছে। এই পানি ব্যবহারের অনুপযোগী।'

Comments

The Daily Star  | English

Sugar, edible oil imports surge as dollar supply improves

Bangladesh’s imports of key essential commodities rose in the first quarter of fiscal year 2025-26 (FY26), supported by improved availability of foreign exchange and lower prices in the international market.

5h ago