পয়েন্ট ঠিক না করেই ট্রেন চলার সিগন্যাল, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন পর্যটক এক্সপ্রেসের যাত্রীরা
চট্টগ্রামের ষোলশহর রেল জংশনে পয়েন্ট সেট না করে পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন পরিচালনা করা হয়েছে। ভুল সিগন্যালে ট্রেন চললেও গতি কম থাকায় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।
এ ঘটনায় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন ট্রেনটি যাত্রীরা। কিন্তু রেললাইনের একটি পয়েন্ট (লাইন বদলের যন্ত্র) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঘটনাটি গতকাল শুক্রবার রাতে ঘটলেও জানাজানি হয় আজ শনিবার দিনে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, গতকাল রাত ১০টার পর পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি ষোলশহর স্টেশনের ২ নম্বর লাইন ব্যবহার করে ক্রস করে। দায়িত্বে থাকা স্টেশন মাস্টার সেসময় ট্রেন চালককে চলাচলের সিগন্যাল দেন।
কিন্তু তখন ২ নম্বর মূল লাইনের জন্য পয়েন্ট ঠিকভাবে সেট করা ছিল না, ঠিক ছিল ১ নম্বর লুপ লাইনের জন্য। এতে, পয়েন্ট প্রস্তুত না থাকা সত্ত্বেও ট্রেনটি মূল লাইনে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়, যদিও লুপ লাইনের পয়েন্ট ভেঙে পড়ে।
রেলওয়ের পরিভাষায় এ ঘটনাকে 'বাস্টিং' বলা হয়।
রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, ধীরগতির কারণে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। তবে তারা সতর্ক করেছেন যে, যদি ট্রেনের গতি বেশি হতো, ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।
ষোলশহর স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. আরিফ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পয়েন্ট ঠিকভাবে সেট আছে কি না, তা যাচাই না করেই দায়িত্বে থাকা সহকারী স্টেশন মাস্টার ভুল সিগন্যাল দিয়েছেন। এ কারণে বাস্টিং হয়, যা ঝুঁকিপূর্ণ।'
তিনি জানান, আজ সকালে দায়িত্বে এসে তারা বিষয়টি দেখেন এবং পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।
অভিযুক্ত সহকারী স্টেশন মাস্টার মাইন উদ্দিন মামুন অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ বিষয়ে স্টেশন মাস্টারের সঙ্গে কথা বলুন।'
তবে ষোলশহর স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তাকে (ডিটিও) পাঠানো বার্তায় মাইন উদ্দিন মামুনসহ দুজন পি ম্যানের দায়িত্বকালীন 'বাস্টিংয়ের' বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।
রেলওয়ে চট্টগ্রামের সিগন্যাল বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মুরাদ বলেন, 'পয়েন্ট ঠিকভাবে সেট না করে ট্রেন চালালে সাধারণত এ ধরনের ঘটনা ঘটে। এতে পয়েন্টের যন্ত্রাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পয়েন্ট মেরামতের জন্য মেকানিক পাঠানো হয়েছে। বিকল্প লাইন থাকায় বর্তমানে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।'
যোগাযোগ করা হলে রেলওয়ে চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিছুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিষয়টি তদন্তে ঘটনাস্থলে একজন ট্রেন কন্ট্রোলারকে পাঠানো হয়েছে।'
'ষোলশহর স্টেশন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গোপনের চেষ্টা করেছে। বিধি অনুযায়ী জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হবে,' বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি কক্সবাজার-ঢাকা রুটে চলাচল করে। এতে ৮০০ অধিক যাত্রী আসন রয়েছে।


Comments