চট্টগ্রামের সড়কে আসছে ‘স্মার্ট ট্রাফিক ব্যবস্থা’
নগরীর যানজট কমাতে স্মার্ট ট্রাফিক ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) প্রস্তুতে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)।
গত বৃহস্পতিবার চসিক সচিব আশরাফুল আমিন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে এ কমিটি গঠিত হয়।
'চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকার জন্য স্মার্ট ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নয়ন' শীর্ষক প্রকল্পটির লক্ষ্য চট্টগ্রামের যানজট হ্রাস ও আধুনিক নগর পরিবহন নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা।
চসিক সূত্র জানায়, গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মোড়ে নিরাপত্তা, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, নজরদারি এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য স্মার্ট ট্রাফিক ব্যবস্থা অত্যাবশ্যক।
কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে চসিকর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু সাদাত মোহাম্মদ তায়েবকে। সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী (ইলেকট্রিক্যাল) শাফকাত বিন আমিন। সদস্য হিসেবে আছেন নির্বাহী প্রকৌশলী (ইলেকট্রিক্যাল) আনোয়ার জাহান ও ফখরুল ইসলাম।
শাফকাত বিন আমিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চট্টগ্রামে আধুনিক ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু করা 'সময়ের দাবি' হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর আগে চসিক একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাইলট প্রকল্প নিয়েছিল। তবে গত বছরের ৫ আগস্টের পর আর কোনো অগ্রগতি হয়নি।'
তিনি আরও বলেন, 'এখন আমরা আবার কাজ শুরু করব। এ প্রকল্পটির লক্ষ্য হবে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং বিভিন্ন মোড়ে যানজট কমানো।'
চট্টগ্রাম মহানগরের কাজীর দেউড়ি, চকবাজার, আগ্রাবাদ, বহদ্দারহাট, ষোলশহর, ২ নম্বর গেট, নিউ মার্কেট, জামালখান, গোল পাহাড়, পাঁচলাইশ, মুরাদপুর ও প্রবর্তক মোড়সহ বিভিন্ন মোড়ে দৈনিক যানজট লেগেই থাকে।
এ নিয়ে ফখরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা এ মোড়গুলোকে ডিজিটাল ট্রাফিক ব্যবস্থার আওতায় আনব। যাতে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় এবং যানজট কমে।'
অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শাফকাত বলেন, 'প্রকল্পটি ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করবে না। আমরা ব্যবস্থাটি চালু করার পর পরিচালনার জন্য ট্রাফিক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করব।'
কমিটিকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চসিক মেয়রের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ট্রাফিক সিগন্যাল আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন চসিক মেয়র শাহাদাত হোসেন।
দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'যানজট কমানো ও আধুনিক নগর পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সিগন্যাল বাতি অপরিহার্য। আমরা পুরো শহরকে আধুনিক সিগন্যাল বাতিরর আওতায় আনব। তবে ট্রাফিক বিভাগকে এগুলো তদারকি করতে হবে।'
এ উদ্যোগ সড়কের যাত্রী ও ট্রাফিক কর্মকর্তাদের জন্য বড় ধরনের সুবিধা বয়ে আনবে বলে মনে করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (ট্রাফিক–দক্ষিণ) এর উপকমিশনার লিয়াকত আলী।
দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'ম্যানুয়ালি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত কঠিন। প্রকল্পটি আরও আগেই চালু হওয়া উচিত ছিল। আমরা এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। চসিক যদি ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করে, তবে এটি ভালো ফল দেবে।'
প্রকল্পটি যথাসম্ভব দ্রুত, বিশেষ করে ব্যস্ততম কিছু মোড়ে দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান তিনি।


Comments