প্রিগোশিনের পুরোনো ভিডিও প্রকাশ, মৃত্যু নিয়ে নতুন করে জল্পনা-কল্পনা

২ ভাগনার যোদ্ধার সঙ্গে ইয়েভগেনি প্রিগোশিন (মাঝে)। ফাইল ছবি: রয়টার্স
২ ভাগনার যোদ্ধার সঙ্গে ইয়েভগেনি প্রিগোশিন (মাঝে)। ফাইল ছবি: রয়টার্স

রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাদল ভাগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিনের একটি পুরোনো ভিডিও থেকে নেওয়া ৪০ সেকেন্ডের একটি ক্লিপ নতুন করে জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি করেছে।

আজ রোববার বার্তাসংস্থা রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে।

এই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দেশের কাছে মিথ্যে বলার চেয়ে মৃত্যুবরণ করা শ্রেয়। এছাড়াও তিনি আকাশে উড়োজাহাজ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার কথাও উল্লেখ করেন। যার ফলে, রোববার তার রহস্যময় মৃত্যু নিয়ে অনলাইনে প্রচুর জল্পনা কল্পনার সৃষ্টি হয়।

রুশ উড্ডয়ন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভাগনার গ্রুপের প্রধান একটি ব্যক্তিগত জেট বিমানে ছিলেন, যেটি বুধবার মস্কোর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বিধ্বস্ত হয়। জেট বিমানের ১০ যাত্রীর কেউই বেঁচে নেই বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। ঠিক ২ মাস আগে ইয়েভগেনি রুশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, যা ব্যর্থ হয়।

পশ্চিমা নেতারা সন্দেহ প্রকাশ করেন, ক্রেমলিনের নির্দেশেই প্রিগোশিনকে হত্যা করা হয়েছে। ক্রেমলিন এই দাবি অস্বীকার করে এবং একে 'একেবারেই মিথ্যে' বলে অভিহিত করে।

২৯ এপ্রিল রুশ সামরিক ব্লগার সেমিওন পেগভের কাছে দেওয়া সাক্ষাৎকার থেকে নেওয়া ভিডিও ক্লিপে প্রিগোশিন বলেন, 'রাশিয়া ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে, কারণ যারা প্রকৃত সত্যবাদী ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সুর মেলাতে রাজি নন, তাদেরকে প্রতিরক্ষা সংশ্লিষ্টরা ধীরে ধীরে লাথি দিয়ে বের করে দিচ্ছে।'

'আজ আমরা একটি ক্রান্তিলগ্নে এসে পৌঁছেছি। কেন আমি এত সততা নিয়ে কথা বলছি? কারণ এ দেশে যেসব মানুষ থাকে, তাদের সামনে মিথ্যে বলার কোনো অধিকার আমার নেই। তাদের কাছে মিথ্যা বলতে বাধ্য করার চেয়ে আমি মনে করি আমাকে মেরে ফেলাই শ্রেয়', যোগ করেন ভাগনার নেতা।

তার এই সাক্ষাৎকারের ক্লিপটি ভাগনারের টেলিগ্রাম চ্যানেল 'গ্রে জোনে' প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, 'কিন্তু আমি মিথ্যা বলবো না। আমি সততার সঙ্গে বলতে চাই, বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে রাশিয়া এবং যদি সব কিছু ঠিক করা না হয়, তাহলে উড়োজাহাজটি মধ্য আকাশে ধ্বংস হবে।'

গ্রে জোনে এই ভিডিও প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হাজারো রিপ্লাই এসেছে।

প্রথম মন্তব্যকারী হিসেবে 'আউটপোস্ট' (অনূদিত) এক টেলিগ্রাম ব্যবহারকারী বলেন, 'কিন্তু তিনি জানতেন'।

কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেন, প্রিগোশিন এখনো জীবিত আছেন। একজন বলেন, 'তিনি কফিন থেকে বের হয়ে আসবেন আর স্বয়ং শয়তানও ভিরমি খাবে।'

অনেকে মজার মজার মন্তব্যও করেন। সম্প্রতি প্রিগোশিনের বন্ধু হিসেবে পরিচিত রুশ উড়োজাহাজ বাহিনীর প্রধান জেনারেল সুরোভিকিনকে তার পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। প্রিগোশিনকে বহনকারী উড়োজাহাজ ভূপাতিত হওয়ার ১ দিন আগেই এটি করা হয়।

এক টেলিগ্রাম ব্যবহারকারী বলেন, 'হয়তো প্রিগোশিন ও সুরোভিকিন জ্যামাইকায় বসে অবকাশ যাপন করছেন। পিনা কোলাডার গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে গাঁজা সেবন করছেন।'

কয়েকটি পোস্টে দাবি করা হয়, উড়োজাহাজ ধ্বংসের পুরো ঘটনাই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটেছে।

'এটা যদি না বোঝেন, তাহলে আপনি একটি এককোষী অ্যামিবা', বলেন এক ব্যবহারকারী।

অনেকে আরও উদ্ভট সব জল্পনা-কল্পনার জন্ম দেন।

কেউ বলছেন ফ্রান্স অথবা ইউক্রেন প্রিগোশিনের মৃত্যুর জন্য দায়ী।

এক পোস্টে দাবি করা হয়, মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস ও 'অ্যাংলো স্যাক্সনদের' নির্দেশে ইউক্রেন প্রিগোশিনকে হত্যা করেছে।

'এরকম একজন বীরকে হত্যা করা আমাদের জন্য এটা খুবই অসুবিধাজনক', যোগ করেন এক ব্যবহারকারী।

অপর এক ব্যক্তি ৩টি কান্নার ইমোজি দিয়ে পোস্ট করেন। 

 

Comments

The Daily Star  | English
FY2026 Budget,

How the FY2026 budget can make a difference amid challenges

The FY2026 budget must be more than a mere fiscal statement.

15h ago