ব্লিঙ্কেন-ওয়াং বৈঠক

রাশিয়াকে সহায়তা না করার বিষয়ে চীনকে সতর্কতা

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও চীনের ওয়াং ই। ছবি: রয়টার্স
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও চীনের ওয়াং ই। ছবি: রয়টার্স

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ইউক্রেনের 'বিশেষ সামরিক অভিযানে' রাশিয়াকে 'প্রাণঘাতী অস্ত্র বা উপকরণ দিয়ে সহায়তা' না করতে চীনকে সতর্ক করেছেন।

পাশাপাশি চীনের 'গুপ্তচর' বেলুনের আকাশসীমা লঙ্ঘনের নিন্দা জানিয়েছেন তিনি।

আজ রোববার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, চীনের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র কমিশনের পরিচালক ওয়াং ই ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়।

গতকাল শনিবার জার্মানির মিউনিখে বৈশ্বিক নিরাপত্তা সম্মেলনে চীনের ওয়াং ই'র সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করেন ব্লিঙ্কেন। এর কয়েক ঘণ্টা আগে ওয়াং চীনের বেলুন ভূপাতিত করার জন্য ওয়াশিংটনকে 'হিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত' বলে অভিহিত করেন।

সম্প্রতি ওয়াশিংটন দাবি করে, চীনের 'গুপ্তচর বেলুন' মার্কিন আকাশসীমায় দেখা গেছে। এরপর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে যুদ্ধবিমানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বেলুনটি ভূপাতিত করা হয়। সে সময় থেকেই ২ দেশের মধ্যে সম্পর্কে টানাপড়েন দেখা দিয়েছে।

আজ সকালে এনবিসি নিউজকে ব্লিঙ্কেন বলেন, 'চীন রাশিয়াকে "প্রাণঘাতী সহায়তা" দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খুবই উদ্বেগজনক।'

ব্লিঙ্কেন জানান, তিনি ওয়াংকে বলেছেন যে এ ধরনের কোনো উদ্যোগ 'আমাদের সম্পর্কের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলবে'।

তিনি আরও বলেন, 'চীন অস্ত্রসহ নানান ধরনের প্রাণঘাতী সহায়তা দেওয়ার কথা চিন্তা করছে।' ওয়াশিংটন খুব শিগগির এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবে বলে উল্লেখ করেন ব্লিঙ্কেন।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা চালানোর অল্প সময় আগে রাশিয়া চীনের সঙ্গে 'সীমাহীন' অংশীদারিত্বের চুক্তিতে সই করে। পশ্চিমের সঙ্গে মস্কোর সম্পর্কের অবনতি হলেও বেইজিংয়ের সঙ্গে মস্কোর অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার হয়েছে।

ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পর্কে চীনের প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি পশ্চিমের দেশগুলো গভীর মনোযোগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে। বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেন, এ যুদ্ধে রাশিয়া জয়ী হলে তা তাইওয়ানের প্রতি চীনের আচরণকে বৈধতা দিতে পারে। চীন এখন পর্যন্ত এ যুদ্ধকে 'আগ্রাসন' বলতে অস্বীকার করেছে এবং এর নিন্দাও জানায়নি।

সম্মেলনের এক প্যানেলে বক্তব্য রাখার সময় চীনের ওয়াং আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধ অবসানের আহ্বান জানান। তিনি ইউরোপের নেতাদের 'ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা' করে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার উপদেশ দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, 'অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে কিছু মহল আলোচনায় সাফল্য আসুক, তা চায় না বা খুব শিগগির যুদ্ধের অবসান হোক, তাও চায় না।' তবে তিনি সুনির্দিষ্ট করে জানাননি 'বিশেষ মহল' বলতে কাদের কথা বোঝাচ্ছেন।

এই বৈঠকের মাধ্যমে ২ দেশের সম্পর্কে স্থিতাবস্থা ফিরে আসবে, এটাই ছিল ওয়াশিংটনের প্রত্যাশা। গত আগস্টে তাইওয়ানে তৎকালীন মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফরে গেলে ২ দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

তবে সম্পর্ক স্থিতিশীল হওয়ার বিষয়টি আবারও 'পরীক্ষার' মুখে পড়তে যাচ্ছে। খুব শিগগির পেন্টাগনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা তাইওয়ান সফরে যাচ্ছেন।

মিউনিখে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস বলেন, 'যুদ্ধের শুরু থেকে বেইজিং ও মস্কোর মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে, যা ওয়াশিংটনের জন্য উদ্বেগের বিষয়।'

তিনি আরও বলেন, 'আগামীতে চীন যদি রাশিয়াকে প্রাণঘাতী সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেয়, তবে এর রেশ হিসেবে আসবে আরও আগ্রাসন, হত্যাযজ্ঞ ও নিয়মতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার প্রতি অবজ্ঞা।'

Comments

The Daily Star  | English

'Shoot directly': Hasina’s order and deadly aftermath

Months-long investigation by The Daily Star indicates state forces increased deployment of lethal weapons after the ousted PM authorised their use

16h ago