নোমানের ৮ উইকেট, অবশেষে ঘরের মাঠে টেস্ট জিতল পাকিস্তান

ছবি: পিসিবি

নোমান আলীর ডেলিভারি ব্লক করতে গেলেন শোয়েব বশির। তার ব্যাটে লেগে বল চলে গেল সিলি পয়েন্টে। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে অসাধারণ ক্যাচ নিলেন আবদুল্লাহ শফিক। উল্লাসে মেতে উঠল গোটা পাকিস্তান শিবির। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে সমতায় ফিরল তারা। শুধু তাই নয়, এই সংস্করণে নিজেদের মাটিতে সাড়ে তিন বছরের বেশি সময় ও সব মিলিয়ে ১১ টেস্ট পর জয়ের স্বাদ পেল দলটি।

শুক্রবার চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে হয়ে গেছে মুলতান টেস্টের ফয়সালা। বাঁহাতি স্পিনার নোমানের ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে ইংলিশদের দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৪৪ রানে গুটিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান। একই ভেন্যুতে প্রথম টেস্টে ইনিংস ও ৪৭ রানে হারের ধাক্কা সামলে তারা জিতেছে ১৫২ রানের ব্যবধানে। নোমান ৮ উইকেট নেন ৪৬ রান খরচায়।

ঘরের মাঠে শেষবার পাকিস্তান টেস্ট জিতেছিল ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। রাওয়ালপিন্ডিতে সেবার তাদের প্রতিপক্ষ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর নিজেদের আঙিনায় টানা ১১ ম্যাচ জয়হীন ছিল তারা। চারটি ড্র করলেও হেরেছিল বাকি সাতটিতে। সেই ধারায় এবার ছেদ পড়ল।

১৬ টেস্টের ক্যারিয়ারে এবারই প্রথম কোনো ম্যাচে ১০ উইকেট নিলেন নোমান। দুই ইনিংস মিলিয়ে তিনি ১৪৭ রানে ১১ উইকেট পান। ম্যাচসেরার পুরস্কার অবশ্য জেতেন অফ স্পিনার সাজিদ খান। তিনি প্রথম ইনিংসে ১১১ রানে ৭ উইকেটসহ মোট ৯ উইকেট শিকার করেন ২০৪ রানের বিনিময়ে। অর্থাৎ পাকিস্তানের দুই স্পিনার মিলেই নেন ইংল্যান্ডের ২০ উইকেটের সবকটি। টেস্টে দুই বোলার মিলে প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট শিকারের এটি সপ্তম ঘটনা।

একই পিচে হয়েছিল আগের টেস্ট। কার্যত নবম দিনের পিচ ছিল এদিন। ফলে টার্ন মিলেছে প্রচুর। সেটা কাজে লাগান নোমান ও সাজিদ। তাদের কার্যকর বোলিংয়ের বিপরীতে কোনো জবাব ছিল না ইংলিশ ব্যাটারদের।

পাকিস্তানি অধিনায়ক শান মাসুদের জন্যও বিশাল স্বস্তি হয়ে এলো এই জয়। তার নেতৃত্বে এর আগে ছয় টেস্ট খেলে প্রতিটিতেই হেরেছিল দলটি। গত ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়া সফরে ৩-০ ব্যবধানে ও আগস্ট-সেপ্টেম্বরে নিজেদের মাঠে বাংলাদেশের কাছে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয় পাকিস্তান। এরপর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিব্রতকর ইনিংস হারের অভিজ্ঞতা মেলে তাদের। এবার মাসুদের দলনেতা হিসেবে হারের বৃত্তে বন্দি থাকার ইতি ঘটল।

২৯৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ২৬১ রান। পাকিস্তানের চাহিদা ছিল ৮ উইকেটের। এদিন বেন স্টোকসের দল ব্যাট করতে পারে কেবল ২২.৩ ওভার। তারা আর ১০৮ রান যোগ করতেই বাকি উইকেটগুলো হারিয়ে ফেলে। ফলে দেড় দিনের বেশি সময় বাকি থাকতে চলে আসে টেস্টের ফল।

দিনের দ্বিতীয় ওভারেই সফরকারীদের ইনিংসে আঘাত হানেন সাজিদ। অলি পোপকে ফিরতি ক্যাচে সাজঘরে পাঠান তিনি। এরপর দলটিকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন নোমান একাই। আগের টেস্টের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান জো রুট ও ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান হ্যারি ব্রুককে ক্রিজে জেঁকে বসার আগে ফেলেন এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে। তারা রিভিউ নিলেও লাভ হয়নি। চার ওভারের মধ্যে দুজন সাজঘরে ফেরেন।

জেমি স্মিথ দ্রুত আউট হলে একশর নিচে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে ফেলে ইংল্যান্ড। সেই বিপদ থেকে তাদের আর বের হওয়ার উপায় ছিল না। অধিনায়ক স্টোকস আক্রমণাত্মক খেলে ৪ চারে সর্বোচ্চ ৩৭ রান করেন ৩৬ বলে। তিনি থামেন স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়ে। ব্রাইডন কার্স ৩ ছক্কায় ৩২ বলে করেন ২৭ রান। স্লিপে তার ক্যাচ নেন আগা সালমান। শেষে পরপর দুই বলে জ্যাক লিচ ও বশির বিদায় নিলে ৩৩.৩ ওভারেই ইংলিশরা অলআউট হয়ে যায়।

রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হবে আগামী ২৪ অক্টোবর।

Comments

The Daily Star  | English

Foreign debt repayment surges 25%

Bangladesh’s repayment of foreign loans surged in the first 10 months while the inflow of loans from bilateral and multilateral lenders continued to fall, according to provisional data from the Economic Relations Division (ERD) released yesterday.

3h ago