বিপিএলকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে কঠোর হচ্ছে বিসিবি

'প্রতিরোধই সবচেয়ে বড় প্রতিকার', আসন্ন বিপিএলকে সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত করতে এই নীতিতে এগোচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমন মন্তব্য করেছেন নতুন গঠিত বিসিবি ইন্টেগ্রিটি ইউনিটের চেয়ারম্যান অ্যালেক্স মার্শাল।

তিনি জানান, ইন্টেগ্রিটি ইউনিটের (পূর্বের এন্টি-করাপশন ইউনিট) কর্মকর্তাদের বেতন কাঠামো পরিবর্তন করা হয়েছে। আগে যেসব কর্মকর্তা ফ্র্যাঞ্চাইজি অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করতেন, তাদের পারিশ্রমিক দিত ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলিই।

'এসিইউতে কাজ করা কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির আর কোনোধরনের আর্থিক কিংবা ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকবে না,' বলেন মার্শাল।

একই সঙ্গে সম্ভাব্য সন্দেহভাজন কিছু কর্মকর্তার দিকেও নজর রাখা হচ্ছে।

গত মাসের বিপিএল খেলোয়াড় নিলাম থেকে ৯ জন ক্রিকেটারকে বাদ দেওয়া হয়। গত ১২ বছরে এমন ঘটনা প্রথম। মার্শাল পর্যালোচিত ৯০০ পৃষ্ঠার একটি বিস্তৃত রিপোর্টের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, যেখানে আগের আসরগুলোতে অনিয়ম ও ফিক্সিং–সংক্রান্ত অভিযোগের বিবরণ রয়েছে।

বিসিবির আইনজীবী ও ইন্টেগ্রিটি ইউনিটের জেনারেল কাউন্সেল ব্যারিস্টার মহীন এম রহমান জানান, '৯০০ পৃষ্ঠার রিপোর্ট কোনো প্রবন্ধ নয়। সেখানে সাক্ষাৎকার, রিপোর্টসহ প্রমাণ আছে।'

বাদ দেওয়া খেলোয়াড়েরা অন্য ঘরোয়া টুর্নামেন্ট, যেমন সদ্য সমাপ্ত এনসিএল, খেলতে পারলেও বিপিএল থেকে বাদ পড়ায় প্রশ্ন উঠেছে। ইন্টেগ্রিটি ইউনিটের ব্যাখ্যা, বিষয়টি এখনও 'লাইভ ইনভেস্টিগেশন' এবং দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাই বিপিএলে বাদ দেওয়াটা আপাতত 'সেফটি মেজার'।

মার্শাল আরও জানান, ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও অ্যান্টি-করাপশন কোড ভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে।

তার মতে, খেলোয়াড় ও ম্যাচ কর্মকর্তাদের নির্দিষ্ট এলাকা পিএমওএ এবং দলীয় হোটেলগুলো দুর্নীতির সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা।

তিনি বলেন, 'লাইভ ইনভেস্টিগেশনে ইতিমধ্যেই দেখছি, গত বছরসহ আগের বছরগুলোতেও পিএমওএর নিয়ম ভঙ্গ হয়েছে। ভেতরের লোকজন বাইরে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, যা ভেতরের তথ্য পাচার এবং দুর্নীতির ঝুঁকি বাড়ায়। হোটেল পরিবেশও স্পর্শকাতর, কারণ নৈমিত্তিক আলাপ–আলোচনা বা অনানুষ্ঠানিক বৈঠক থেকেই অনিয়মের সূত্র তৈরি হয়।'

মার্শাল জানান, তিনি শিগগিরই ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পাশাপাশি সন্দেহভাজন কর্মকর্তাদের দূরে রাখতে আইসিসিও সহায়তা করছে।

বিসিবির কর্মকর্তারা বলেন, তারা 'বিশেষায়িত আইন' প্রণয়নের পথে এগোচ্ছে এবং ক্রিকেটে দুর্নীতি যেন ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়, সে বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

Comments