তুর্কমেনিস্তানের জালে ৭ গোল দিয়ে বাছাই শেষ করল বাংলাদেশ

এএফসি নারী এশিয়ান কাপের টিকিট আগেই নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশের। তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি তাই তাদের জন্য ছিল স্রেফ নিয়মরক্ষার। তবে হালকাভাবে না দেখে কোচ পিটার বাটলার সেরা একাদশ রাখলেন অপরিবর্তিত। ধারাবাহিকতা রেখে ঋতুপর্ণা চাকমা-শামসুন্নাহার জুনিয়ররাও জ্বলে উঠলেন। ফলে আরেকটি বিশাল জয়ের উল্লাসে মাতল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
শনিবার মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে বাছাইপর্বের 'সি' গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে ৭-০ গোলে জিতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। সবগুলো গোলই আসে প্রথমার্ধে। দ্বিতীয়ার্ধে আর ব্যবধান বাড়াতে পারেনি বাটলারের শিষ্যরা।
তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে জোড়া গোল করেন শামসুন্নাহার জুনিয়র ও ঋতুপর্ণা। একবার করে জাল খুঁজে নেন স্বপ্না রানী, মনিকা চাকমা ও তহুরা খাতুন।
এই জয়ে 'সি' গ্রুপের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থেকে বাছাই শেষ করল বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ খেলে তাদের অর্জন পূর্ণ ৯ পয়েন্ট। প্রথম ম্যাচে বাহরাইনকেও ৭-০ গোলে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল তারা। আর গত বুধবার স্বাগতিক মিয়ানমারের বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতে তারা তৈরি করে ইতিহাস। প্রথমবারের মতো নারী এশিয়ান কাপের মূলপর্বে ঠাঁই করে নেয় বাংলাদেশ।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১৩ ধাপ পিছিয়ে থাকা প্রতিপক্ষের বিপরীতে ম্যাচ শুরুর স্রেফ ২১ মিনিটের মধ্যেই ৬-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। গোল উৎসবের সূচনা ঘটে তৃতীয় মিনিটে। ডি-বক্সের বাইরে থেকে চোখ ধাঁধানো জোরাল শটে লক্ষ্যভেদ করেন স্বপ্না।
তিন মিনিট পর তুর্কমেনিস্তানের গোলরক্ষক আইশা আমানবেরদিয়েভা বল বিপদমুক্ত করতে পারেননি। ডি-বক্সের ভেতরে জটলার মধ্যে আলগা বল পেয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। ত্রয়োদশ মিনিটে দলকে বাংলাদেশকে আসনে বসিয়ে দেন তিনি। বামদিক থেকে শামসুন্নাহার সিনিয়রের ক্রসের নাগাল পাননি গোলরক্ষক। দূরের পোস্টে থাকা শামসুন্নাহার জুনিয়র অনায়াসে ফাঁকা জাল কাঁপান।
তিন মিনিট পর গোল করেন মনিকা। বল পেয়ে প্রথম ছোঁয়ায় ডি-বক্সে ঢুকে বাম পায়ের বুলেট গতির শটে নিশানা ভেদ করেন তিনি। পরের মিনিটে গোলদাতাদের তালিকায় নাম লেখান ঋতুপর্ণা। তার দূরপাল্লার শট আইশার হাত ফসকে জালে জড়ায়। এরপর গোলরক্ষক পরিবর্তন করে তুর্কমেনিস্তান। মাঠে নামেন এলনুরা মাকসিউতোভা। তবে বাংলাদেশের গোলের উল্লাস থামাতে পারেননি তিনি।
২১তম মিনিটে বল বিপদমুক্ত করতে পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মাকসিউতোভা। তবে গড়বড় পাকিয়ে ফেলেন শট নিতে। ছুটে বলের দখল নিয়ে বামদিক থেকে ক্রস করেন ঋতুপর্ণা। টোকা মেরে অরক্ষিত জালে বল পাঠিয়ে দেন তহুরা।
৩৫তম মিনিটে ঋতুপর্ণার শট ক্রসবারে বাধা পায়। পাঁচ মিনিট পর অবশ্য আর হতাশ হতে হয়নি তাকে। ডানদিকে মনিকার কর্নার থেকে ডি-বক্সের ঠিক বাইরে বল পান তিনি। তার বাঁ পায়ের ট্রেডমার্ক বাঁকানো শটে গ্লাভস ছোঁয়ালেও আটকাতে পারেননি গোলরক্ষক। সপ্তমবারের মতো গোল পাওয়ার আনন্দে উদ্বেল হয় বাংলাদেশ।
প্রথমার্ধেই জয় একরকম নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় বিরতির পর বেশ কিছু পরিবর্তন আনেন বাটলার। রুপনা চাকমা, ঋতুপর্ণা ও শিউলি আজিমকে তুলে স্বর্ণা রানী মন্ডল, উমেহলা মারমা ও হালিমা আক্তারকে নামান তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে গোলের জন্য মরিয়া ছিল না বাংলাদেশ। তাদের আক্রমণের ধারও কমে যায়। যদিও বেশ কয়েকবার সম্ভাবনা জাগায় দলটি। মনিকা ও মারিয়া মান্দাদের কয়েকটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
পরবর্তীতে স্বপ্নাকে তুলে শাহেদা আক্তার রিপা ও শামসুন্নাহার জুনিয়রের বদলে মোসাম্মৎ সুলতানাকে নামান বাটলার। তবে ব্যবধান আর বাড়েনি। তাতে যদিও বাংলাদেশের উদযাপনের আনন্দে বিন্দুমাত্র কমতি হয়নি।
Comments