শ্রীলঙ্কাকে বিপদে ফেলে বাংলাদেশকে টপকে গেল পাকিস্তান

শাহিন শাহ আফ্রিদি, হুসাইন তালাত ও আবরার আহমেদ মিলে শ্রীলঙ্কাকে অল্পতে বেঁধে ফেলে লক্ষ্য রাখলেন নাগালের মধ্যে। রান তাড়ায় ভালো শুরুর পর মাঝপথে খেই হারানো পাকিস্তানকে পথের দিশা দিলেন তালাত ও মোহাম্মদ নওয়াজ। সুপার ফোরে দুই ম্যাচ খেলে প্রথম জয়ের স্বাদ পেল সালমান আগার দল।
মঙ্গলবার আবুধাবিতে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচে শেষমেশ সহজে জিতেছে পাকিস্তান। চারিথ আসালাঙ্কার দলের ছুঁড়ে দেওয়া ১৩৪ রানের সাদামাটা লক্ষ্য তারা পেরিয়ে যায় ১২ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে। অথচ এক পর্যায়ে ৮০ রানে ৫ উইকেট খুইয়ে বেশ বিপাকে ছিল তারা। এরপর তালাত ও নওয়াজ ষষ্ঠ উইকেটে গড়েন ৪১ বলে ৫৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি।
নেট রানের রেটের সুবাদে সুপার ফোরের পয়েন্ট তালিকায় বাংলাদেশকে (+০.১২১) টপকে দুইয়ে উঠেছে পাকিস্তান (+০.২২৬)। দুই দলের পয়েন্ট সমান ২ হলেও বাংলাদেশ খেলেছে কেবল এক ম্যাচ। শীর্ষে থাকা ভারতও (+০.৬৮৯) এক ম্যাচে পেয়েছে ২ পয়েন্ট।
সুপার ফোরে দুই ম্যাচেই হারার কারণে খাদের কিনারে পৌঁছে গেছে গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচের সবকটিতে জেতা শ্রীলঙ্কা। আগামীকাল দুবাইতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারত জিতলে বাদ পড়বে টি-টোয়েন্টি সংস্করণের এশিয়া কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। সেক্ষেত্রে পরদিন বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের জয়ী দল আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারতের।
টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শাহিন ও তালাতের তোপে মাত্র ৫৮ রানে ৫ উইকেট পড়ে যায় লঙ্কানদের। ফলে দলটির তিন অঙ্কে পৌঁছানো নিয়ে দেখা দেয় শঙ্কা। এরপর কামিন্দু মেন্ডিসের ফিফটিতে তারা পায় ৮ উইকেটে ১৩৩ রানের পুঁজি। কামিন্দু খেলেন ঠিক ৫০ রানের ইনিংস। ৪৪ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন তিনটি চার ও দুটি ছক্কা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ রান করেন ১৯ বল খেলা আসালাঙ্কা।
পাকিস্তানের পক্ষে বাঁহাতি পেসার শাহিন ৩ উইকেট নেন ২৮ রানে। দুটি করে শিকার ধরেন তালাত ও হারিস রউফ। তালাত ৩ ওভারে ১৮ রান দিলেও রউফ ছিলেন খরুচে। তার ৪ ওভারে আসে ৩৭ রান। ভীষণ আঁটসাঁট থাকেন লেগ স্পিনার আবরার। ১ উইকেট নিতে ৪ ওভারে স্রেফ ৮ রান দেন তিনি।
জবাব দিতে নেমে ৩৩ বলে ৪৫ রানের উদ্বোধনী জুটি মেলে পাকিস্তানের। কিন্তু ভালো শুরুর পর পথ হারায় তারা। স্কোরবোর্ডে আর ১২ রান যোগ হওয়ার মধ্যে ৪ উইকেট তুলে শ্রীলঙ্কা ঘুরে দাঁড়ায়। একই ওভারে তিন বলের মধ্যে অফ স্পিনার মাহিশ থিকশানা আউট করেন দুই ওপেনার সাহিবজাদা ফারহান ও ফখর জামানকে। নিজের পরপর দুই ওভারে লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা বিদায় করেন সাইম আইয়ুব ও সালমানকে।
মোহাম্মদ হারিস কিছুক্ষণ ক্রিজে থেকে সাজঘরে ফিরলে জমে যায় লড়াই। তবে আর কোনো বিপদ ঘটতে দেননি তালাত ও নওয়াজ। ১৮ ওভারে ৫ উইকেটে ১৩৮ রান তুলে জয়ের বন্দরে নোঙর করে পাকিস্তান। নওয়াজ ২৪ বলে তিনটি করে ছক্কা ও চারের সাহায্যে অপরাজিত থাকেন ৩৮ রানে। অষ্টাদশ ওভারে দুশমন্থা চামিরাকেই তিনটি ছক্কা হাঁকিয়ে শেষ করেন খেলা।
বোলিংয়ের পর ব্যাটিংয়েও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার তালাত। তিনি জেতেন ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। দলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ার আগে তিনি ৩০ বলে চারটি চারে ৩২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন।
Comments