ওয়ার্ক ফ্রম হোম জঘন্য ও অনৈতিক: ইলন মাস্ক

ওয়ার্ক ফ্রম হোম জঘন্য ও অনৈতিক: ইলন মাস্ক
ইলন মাস্ক। ছবি: রয়টার্স

ওয়ার্ক ফ্রম হোম বা ঘরে বসে অফিস করাকে অত্যন্ত 'জঘন্য' ও 'অনৈতিক' বলে অভিহিত করেছেন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক। 

করোনা মহামারির সময় মূলত ঘরে বসে কাজ করার ধারণা জনপ্রিয়তা পায়। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মানুষের মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রায় সব কোম্পানিই কর্মীদেরকে ঘরে বসে কাজ করার অনুমতি দেয়। 

দীর্ঘ ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে এভাবে কাজ করতে করতে অনেক কর্মীই এখন এই ধরনের জীবনে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। কিন্তু মহামারির প্রভাব কমে আসার পর থেকেই ইলন মাস্ক কর্মীদেরকে অফিসে এসে কাজ করার জন্য চাপ দিতে শুরু করেন। 

অনেক দিন ধরেই ঘরে বসে কাজ করার তীব্র সমালোচনা করে আসছেন তিনি। সম্প্রতি মার্কিন গণমাধ্যম সিএনবিসির সঙ্গে এক স্বাক্ষাৎকারে নিজের ক্ষোভ যেন উগরে দিয়েছেন এই প্রযুক্তি উদ্যোক্তা। 

উল্লখ্য, মাস্ক টেসলা ছাড়াও স্পেসএক্স, নিউরালিংক, টুইটার ও দ্য বোরিং কোম্পানির মালিক অথবা প্রতিষ্ঠাতা। এসব প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার কর্মী কাজ করছেন। ফলে ঘরে বসে কাজ করার ক্ষেত্রে মাস্কের মনোভাবের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। 

বিশ্বের অন্যতম ধনী এই প্রযুক্তি উদ্যোক্তা সিলিকন ভ্যালির প্রযুক্তি কর্মীদেরকে 'লা-লা-ল্যান্ডের ল্যাপটপ ক্লাসের' সঙ্গে তুলনা করেছেন। 

মাস্ক জানান, তিনি বিশ্বাস করেন অফিসে বসে কাজ করলে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়। 

তিনি মনে করেন, করোনা মহামারি শেষ হওয়ার পরও যেসব কর্মীরা সহকর্মীদের সঙ্গে বসে অফিস করতে চান না, তাদের 'নৈতিকতার উচ্চ আসন থেকে নেমে আসা উচিত' এবং সবাই যেভাবে জীবনযাপন করছে, তাদেরও সেভাবেই বাঁচা উচিত।

কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া ঘরে বসে কাজ করার সুযোগ বন্ধ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন মাস্ক। 

'আপনি ঘরে বসে কাজ করতে চান, কিন্তু যেসব কর্মীরা গাড়ি তৈরি করছে, তাদেরকে আবার ফ্যাক্টরিতে আসতে বলছেন। আপনি ঘরে থাকতে চান, কিন্তু যারা রেস্টুরেন্টে খাবার তৈরি করে এবং যারা খাবার আপনার বাসায় পৌঁছে দেয়, তাদেরকে কাজের জন্য বাইরে আসতে বলেন। কেন? তারা ঘরে বসে কাজ করতে পারে না? এটা কেমন কথা? যারা আপনার বাসার কোনা কিছু নষ্ট হয়ে গেলে ঠিক করতে আসে? তারা বাসায় বসে কাজ করতে পারবে না, কিন্তু আপনি চান আপনি করবেন। এটা কী নৈতিকভাবে উচিত? এটা গড়বড়ে ব্যাপার।'

পুরো ব্যাপারটিকে অনৈতিক মনে করেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মাস্ক সরাসরি হ্যাঁ সূচক জবাব দেন। 

মাস্ক বলেন, 'এটা উৎপাদনশীলতার ব্যাপার, এটা নৈতিকতারও ব্যাপার। মানুষের সত্যিই এমন ফালতু নৈতিক অবস্থান থেকে সরে আসা উচিত। কারণ, তারা নিজেরা ঘরে বসে কাজ করতে চায়, কিন্তু অন্য সবাইকে কাজের জন্য ঘর থেকে বের করতে চায়। এটা ভুল।'

করোনা মহামারি শেষ হওয়ার পর কোম্পানিগুলো যখন কর্মীদেরকে অফিসে ফেরার আদেশ দেয়, তখন অনেক কর্মী সেই আদেশ মানতে অপারগতা প্রকাশ করে। অনেকেই অফিসে না আসে বাসায় বসেই কাজ অব্যাহত রাখতে চেয়েছিলেন। কর্মীদের এসব আচরণে বড় বড় প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময় হতাশা প্রকাশ করেছেন। 

মাস্ক অনেক আগে থেকেই কর্মক্ষেত্র থেকে দূরে বসে কাজ করার ঘোর বিরোধী। 

গত নভেম্বর মাসে টুইটার কেনার পরপরই মাস্ক প্রতিষ্ঠানটির সব কর্মীর ঘরে বসে কাজ করার সুযোগ বাতিল করে তাদেরকে দ্রুত অফিসে ফেরার নির্দেশ দেন। মাস্ক তখন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যারা অফিসে এসে কাজ করতে চান না, তাদেরকে ছাঁটাই করা হবে। টুইটারের কর্মীদেরকে মাস্ক বলেছেন, কারও যদি নিতান্তই বাসায় বসে অফিস করার প্রয়োজন হয়, তাহলে তিনি নিজে সেটি অনুমোদন দেবেন। কিন্তু তার অনুমোদনের বাইরে কেউ ঘরে বসে অফিস করতে পারবে না। 

 

সূত্র: সিএনবিসি
গ্রন্থনা: আহমেদ হিমেল

 

Comments

The Daily Star  | English

Audits expose hidden bad loans at 6 Islamic banks

Asset quality reviews by international auditors KPMG and Ernst & Young have revealed that six Shariah-based banks in Bangladesh are in a dire financial state, with non-performing loans (NPLs) skyrocketing four times greater than previously reported.

6h ago