লিটন-মুমিনুলের ব্যাটে লিড নিল বাংলাদেশ

Liton Das
ফিফটির পথে লিটনের শট। ছবি: টুইটার

একের পর এক জুটি, পরিস্থিতির দাবি মেনে ক্রিজে পড়ে থাকার নিবেদন দেখিয়ে ছুটছে বাংলাদেশ। মাহমুদুল হাসান জয়-নাজমুল হোসেন শান্তর পর শতরানের জুটি গড়েছেন মুমিনুল হক ও লিটন দাস। এই দুজনও তুলে  নেন ফিফটি। নিউজিল্যান্ডকে হতাশ করে লিড নিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ। হাতে ৬ উইকেট নিয়ে এই লিড এখন অনেক বড় করার সম্ভাবনাও উঁকি দিচ্ছে জোরালোভাবে। 

মাউন্ট মাঙ্গানুইতে সোমবার সকাল থেকেও দিনটি বাংলাদেশের। প্রথম দুই সেশনে পড়েছে কেবল ২ উইকেট। বাংলাদেশ যোগ করতে পেরেছে ১৩২ রান। ৪ উইকেটে ৩০৭ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের চা-বিরতিতে যায় মুমিনুলরা। চা-বিরতির আগ পর্যন্ত ২১ রানে পিছিয়ে ছিল। চা-বিরতির পর দ্রুত তা তুলে লিড নিয়ে নেয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।   ১২৫ ওভারে নিউজিল্যান্ডের ৩২৮ রান পেরিয়ে যায় বাংলাদেশ। 

৯ রানে বেঁচে গিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল ছিলেন সেঞ্চুরির পথে। কিন্তু তিন অঙ্কের কাছে গিয়ে থামেন তিনি। ২৪৪ বলে মুমিনুলের ৮৮ রানের ইনিংস থামে ট্রেন্ট বোল্টের বলে। ভেতরে ঢোকা বল পেছনের পায়ে লাগিয়ে এলবিডব্ললিউ হন মুমিনুল। তাতে ভেঙ্গে যায় লিটনের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে তার ১৫৮ রানের জুটি। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৫ উইকেটে ৩৬১। ১৬২ বলে ৭৭ রানে অপরাজিত আছেন লিটন। 

লাঞ্চের আগে বেশ মন্থর গতিতে খেলেছিল বাংলাদেশ। লাঞ্চের আগে ২৬ ওভারে খেলে ২ উইকেট হারিয়ে  তুলেছিল ৪৫ রান। লাঞ্চের পরের ২৬ ওভারে কোন উইকেট না হারিয়ে আসে আরও ৮৭ রান।

লাঞ্চের পর নেমে নিউজিল্যান্ড পেসাররা বেশ কিছু আলগা বল দেন, পুরো ফায়দা তুলে নেয় বাংলাদেশ। ক্রিজে নেমেই স্বভাবসুলভ গতিতে দ্রুত রান আনতে থাকেন লিটন। শম্ভুক গতি ভেঙ্গে মুমিনুলও বাড়ান রানের গতি।

জমে উঠে দারুণ জুটি। লিড নেওয়ার অনেক কাছে চলে যায় দল। কিউই পেসারদের মধ্যে এদিনও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সমস্যা তৈরি করে গেছেন নেইল ওয়েগনার। বারবার শর্ট বল দিয়ে ভড়কে দিতে চেয়েছেন। তা সামলে টিকে গেছেন লিটন-মুমিনুল।

শুরু থেকে মন্থর গতিতে খেলতে থাকা বাংলাদেশ অধিনায়ক ১৪৭ বলে বাউন্ডারি মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৫তম ফিফটি স্পর্শ করেন।  ওয়ানডে মেজাজে খেলে মাত্র ৪৫ বলে ৪২ রানে গিয়েছিলেন লিটন। এরপর তার রানের গতি হয়ে যায় কিছুটা মন্থর। খেলতে থাকেন সময় নিয়ে। টেস্টে ১১ নম্বর ফিফটি পান ৯৩ বলে গিয়ে। 

আগের দিনের ২ উইকেটে ১৭৫ রান নিয়ে নেমে আর ৯ রান যোগ করেই আরেক উইকেট হারায় বাংলাদেশ। চোয়ালবদ্ধ দৃঢ়তা দেখানো জয় অবশেষে কাবু হন ওয়েগনারের বলে। অ্যাঙ্গেলে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট লাগিয়ে গালিতে ধরা দেন তিনি। ২২৮ বলে থামে তার ৭৮ রানের ইনিংস।

ক্রিজ আঁকড়ে পড়েছিলেন মুমিনুল, তার সঙ্গে যোগ দিয়ে একই ধরণ নেন মুশফিকও। স্কোরবোর্ড তাই আর নড়ছিল না। প্রথম ঘণ্টায় মাত্র ১ রান করেন মুমিনুল, মুশফিক করেন ৭। মুমিনুল ফিরতে পারতেন ৯ রানেই। তাকে কট বিহাইন্ড বানিয়ে উল্লাস করছিলেন ওয়েগনার। কিন্তু পরে দেখা যায় ওভারস্টেপ করেছেন ওয়েগনার। নো বলে জীবন পেয়ে আরও গুটিয়ে যান মুমিনুল।

মুশফিকও ছিলেন ঝুঁকি না নেওয়ার পরিকল্পনায়। থিতু হতে বাড়তি সময় নিয়েও লাভ হয়নি মুশফিকের। নতুন বল হাতে নিয়েই তাকে ফেরায় নিউজিল্যান্ড। ট্রেন্ট বোল্টের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হন ৫৩ বলে ১২ রান করা মুশফিক।

এরপর মুমিনুলের সঙ্গে মিলে ম্যাচের ছবি বদলে দিতে থাকেন লিটন। বরাবরের মতই নান্দনিকতার ছোঁয়া দেখা যায় তার ব্যাটে। মুমিনুল ছিলেন দৃঢ়তার ছবি হয়ে। শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরি না পেলেও দলকে ভাল অবস্থানে রেখে গেছেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Expatriates' remittance helps Bangladesh make turnaround: Yunus

It is the expatriates who help sustain the country, says the chief adviser

7h ago