ঝড় তুললেন নারাইন, লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিলেন মঈন

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

ব্যাট হাতে শুরুতেই তাণ্ডব তুলে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন সুনীল নারাইন। তাতে সহজেই ইমারত গড়তে পারতেন বাকি ব্যাটাররা। কিন্তু মিডল অর্ডার ব্যাটাররা কিছুই করতে পারলেন না। ২৬ রানের ব্যবধানে ৫ উইকেট হারিয়ে উল্টো চাপে পড়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। সেখান থেকে লেজের ব্যাটার আবু হায়দার রনিকে নিয়ে লড়াইটা চালান মঈন আলী। তাতেই লড়াইয়ের পুঁজি মিলেছে কুমিল্লার।

শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ফাইনালে ফরচুন বরিশালকে ১৫২ রানের লক্ষ্য দিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫১ রান তোলে ইমরুল কায়েসের দল।

অথচ এদিন শুরুতে ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিতই দিয়েছিল কুমিল্লা। কোয়ালিফায়ারের মতো এদিনও শুরুতে ঝড় তোলেন নারাইন। কিন্তু কার্যত তাকে সঙ্গ দিতে পারলেন না কেউ। টপ অর্ডার বাকি ব্যাটাররা ব্যর্থ। ব্যর্থ মিডল অর্ডারও। শেষ দিকে মঈন ব্যর্থ হলে হয়তো একশ রান পার করাই কষ্টকর হয়ে যেতে পারতো দলটির। 

বল হাতে কুমিল্লার বরিশালের শুরুটা করেন মুজিব। আসর জুড়ে বেশ কিপটে বোলিং করেছেন এ স্পিনার। এদিনের শুরুটাও তেমনই ছিল। প্রথম তিন বলে আসে দুই রান। কিন্তু এরপরেই বিধ্বংসী রূপে আবির্ভাব হন নারাইন। টানা তিনটি বাউন্ডারি মারেন। যার দুটিই ছক্কা। পরের ওভারেও একই চিত্র। টানা না হলেও দুটি ছক্কা ও একটি চার মারেন এ ক্যারিবিয়ান। ফলে দুই ওভারেই রান আসে ৩৬।

তৃতীয় ওভারে বল হাতে নিয়ে রানের ঊর্ধ্ব গতিতে লাগাম টানেন বরিশাল অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। প্রথম পাঁচ বলে দেন চার রান। আর শেষ বলে লিটনকে বোল্ড করে ব্রেক থ্রুও এনে দেন বরিশাল অধিনায়ক। তাতে ম্যাচে ফেরে দলটি। পরের ওভারে বল হাতে নিয়ে সে ধারা ধরে রাখেন ডোয়াইন ব্রাভোও।

কিন্তু এর পরের ওভারে সাকিবের উপরও চড়াও হন নারাইন। তিনটি বাউন্ডারি মারেন তিনি। একটি মারেন মাহমুদুল হাসান জয়ও। আবারও হুহু করে বাড়তে থাকে দলীয় স্কোর। সে ওভারে সাকিব খরচ করেন ১৮ রান। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ছন্দে থাকা মেহেদী হাসান রানাকে আনেন অধিনায়ক। তবে রানাকেও ছাড় দেননি নারাইন। প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান। তবে পরের বলেই পাল্টা আঘাত হানেন রানা। লংঅন সীমানায় তাকে নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচে পরিণত করেন। স্বস্তি নামে বরিশাল শিবিরে। তবে পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেটে ৭৩ রান তোলে কুমিল্লা।

তবে নিজের কাজটা ঠিকই করেন যান নারাইন। মাত্র ২১ বলে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেওয়া এ ব্যাটার আজও খেলেন ৫৭ রানের ইনিংস। ২৩ বলের ইনিংসটি ৫টি করে চার ও ছক্কায় সাজান এ ক্যারিবিয়ান তারকা। 

তবে নারাইনের এনে দেওয়া ছন্দটা ধরে রাখতে পারেনি কুমিল্লা। ভুল বোঝাবোঝির খেসারৎ দিয়ে রানআউট হন জয়। টিকতে পারেননি দু প্লেসিও। মুজিবের বলে তার হাতেই ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন। ব্রাভোর বলে পুল করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের হাতে ধরা পড়েন অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। আর আরিফুল হক তো বলই বুঝতে পারেননি। মুজিবের শার্প টার্নে বোল্ড হয়ে যান। ফলে ২৬ রানের ব্যবধানে ৫টি উইকেট হারিয়ে হঠাৎ চাপে পড়ে দলটি।

এরপর রনিকে নিয়ে দলের হাল ধরেন মঈন। রানের গতি অবশ্য সে অর্থে বাড়াতে পারেননি। পরের ৩৩ বলে বাউন্ডারি আসে মাত্র একটি। তবে স্কোরবোর্ডে ৫৪ রান যোগ করেন তারা। শুরুতে দেখে শুনে খেললেও শেষ দিকে হাত খুলতে শুরু করেছিলেন। তবে বড় ক্ষতি করার আগেই দারুণ থ্রোতে তাকে রানআউটের ফাঁদে ফেলেন সাকিব।

শেষ পর্যন্ত ৩২ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলেন মঈন। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ২৭ বলে ১টি করে চার ও ছক্কায় ১৯ রান করেন রনি। বরিশালের পক্ষে ২৭ রানের খরচায় ২টি উইকেট পান মুজিব। ৩১ রানের বিনিময়ে ২টি শিকার শফিকুল ইসলামেরও।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ২০ ওভারে ১৫১/৯ (নারাইন ৫৭, লিটন ৪, জয় ৮, দু প্লেসি ৪, ইমরুল ১২, মঈন ৩৮, আরিফুল ০, হায়দার ১৯, শহিদুল ০, তানভির ০*, মোস্তাফিজ ০*; মুজিব ২/২৭, শফিকুল ২/৩১, সাকিব ১/৩০, ব্রাভো ১/২৬, রানা ১/৩৪)

Comments

The Daily Star  | English

Dozens of zombie firms still trading as if nothing is wrong

Nearly four dozen companies have been languishing in the junk category of the Dhaka Stock Exchange (DSE) for at least five years, yet their shares continue to trade on the country’s main market and sometimes even appear among the top gainers. 

3h ago