অধ্যক্ষকে ‘মারধরের’ অভিযোগ, সংসদ সদস্যের অস্বীকার

প্রতীকী ছবি। এপি ফাইল ফটো

রাজশাহীর রাজশাহী-১ আসনের (তানোর-গোদাগাড়ী) সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে তার কার্যালয়ে কলেজের এক অধ্যক্ষকে 'মারধরের' অভিযোগ উঠেছে।

তবে সংসদ সদস্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলার সময় ওমর ফারুক চৌধুরী দাবি করেন, কলেজের কয়েকজন অধ্যক্ষ গত ৭ জুলাই তার চেম্বারে তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তখন অধ্যক্ষদের মধ্যে ঝগড়া হয় এবং ওই সময় তিনিই তাদের থামান।

তবে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, তিনি গত সোমবার রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের আহত অধ্যক্ষ সেলিম রেজার বাড়িতে তাকে দেখতে যান এবং তখন তার শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখেছেন।

সংসদ সদস্য ক্ষমতাসীন দলের সুনাম নষ্ট করছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এ দিকে, অভিযোগ তদন্তে গতকাল কমিটি গঠন করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ৩ সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেনকে যত দ্রুত সম্ভব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে বলা হয়েছে।

কী ঘটেছিল, সে সম্পর্কে অবগত কয়েকজন ব্যক্তি ডেইলি স্টারকে বলেছেন, সেদিন অন্তত ৭ কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষরা সংসদ সদস্যের সঙ্গে থিম ওমর প্লাজায় তার কার্যালয়ে দেখা করেন।

এক পর্যায়ে ব্যক্তিগত একটি বিষয়ে করা প্রশ্নে সেলিম রেজার উত্তর পছন্দ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে প্রথমে খালি হাতে ও পরে লাঠি দিয়ে তাকে আঘাত করেন সংসদ সদস্য। পরে কক্ষে উপস্থিত অন্যরা সেলিম রেজাকে বাইরে নিয়ে যান।

সূত্র জানায়, ভুক্তভোগীসহ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা সংসদ সদস্যের লোকজনের ভয়ে মুখ বন্ধ রাখেন।

অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ সাঈদ আহমেদ ওইদিন সেলিম রেজার চিকিৎসা করেন। তার চেম্বার রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায়।

সাঈদ আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, অধ্যক্ষের আঘাত গুরুতর।

একই গ্রামের হওয়ায় সেলিম রেজাকে চেনেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

গতকাল একটি জাতীয় পত্রিকায় নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর সেলিম রেজা ফেসবুকে লিখেন, এমপি তাকে মারধর করেননি। আসলে ওইদিন সংসদ সদস্যের সঙ্গে দেখা করা শিক্ষকরা নিজেদের মধ্যে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।

সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী কর্মকাণ্ড ও মন্তব্য এর আগেও একাধিকবার সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়েছে।

২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর তার লোকজন একটি গ্রামের ২টি প্রবেশপথে অবস্থান নেয় এবং গ্রামের মধ্য দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচলে বাধা দিতে শুরু করে। কারণ, স্থানীয়দের অনেকেই ওমর ফারুক চৌধুরীকে ভোট দেননি।

একই বছরের ১৯ আগস্ট ওমর ফারুক চৌধুরীর সামনে একটি কলেজের অধ্যক্ষকে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা লাঞ্ছিত করে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।

ঘটনার বিষয়ে মন্তব্য করার জন্য গতকাল ডেইলি স্টারের অনুরোধে সাড়া দেননি অধ্যক্ষ সেলিম রেজা।

এর আগে তার সঙ্গে দেখা করা এক সাংবাদিক জানিয়েছেন, অধ্যক্ষের চোখ কালো হয়ে গেছে এবং তার ডান হাত, পেট ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন আছে।

ওইদিন এমপির কার্যালয়ে উপস্থিত থাকা গোদাগাড়ী ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ ইমরুল হক ডেইলি স্টারকে বলেন, একটি বিষয় নিয়ে সংসদ সদস্য অধ্যক্ষের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন।

'কিন্তু, মারধরের মতো খারাপ কিছু ঘটেনি,' যোগ করেন তিনি।

ওমর ফারুক চৌধুরী গতকাল বলেন, কিছু মানুষ 'অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের' কারণে তার ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে।

গতকাল রাতে এমপি জানিয়েছেন, তিনি আজ বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন। সেখানে অধ্যক্ষ সেলিম রেজার উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা আছে।

Comments

The Daily Star  | English
July Charter

July Charter: Signing first, implementation decision later

The National Consensus Commission will submit its recommendations on implementing the July Charter after its signing on October 17, as it has yet to finalise the implementation process, commission sources said.

10h ago