রাজশাহীতে আদিবাসী পরিবারের ওপর হামলা ও বিতাড়নের অভিযোগ

নওহাটা পৌরসভার বাঘসারা পুল এলাকার অন্তত ৭টি আদিবাসী পরিবারকে বাড়িছাড়া করা হয়েছে। ছবি: স্টার
নওহাটা পৌরসভার বাঘসারা পুল এলাকার অন্তত ৭টি আদিবাসী পরিবারকে বাড়িছাড়া করা হয়েছে। ছবি: স্টার

রাজশাহীর পবা উপজেলায় কয়েকটি আদিবাসী পরিবারকে মারধর, লুটপাট ও বিতাড়নের অভিযোগ উঠেছে। 

হামলার পর ওই পরিবারগুলো গৃহহীন হয়ে পড়েছে এবং এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

উপজেলার নওহাটা পৌরসভার বাঘসারা পুল এলাকায় গত বুধবার এ হামলার ঘটনা ঘটে।

পবা থানা পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে বলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাগসারা গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খালের পাশে ১২টি আদিবাসী পরিবার দীর্ঘ ৫-৬ বছর ধরে টিন, বেড়া দিয়ে বাড়ি বানিয়ে বসবাস করে আসছিলেন।

তাদের অভিযোগ, গত বুধবার এলাকার প্রভাবশালী কয়েকজন তাদের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।

আদিবাসী গ্রাম প্রধান শ্যামল মুর্মু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হামলাকারীরা প্রথমে মালতি মার্ডিকে মারাত্মকভাবে আহত করে। এরপর তারা আমার ভাতিজা রিপন হেমরম, তার বাবা হরি হেমরম, মা সুমিতা কিসকু, বোন রঙ্গিলা হেমরম ও স্ত্রী রিনা হাঁসদার ওপর আক্রমণ চালায়।'

তিনি আরও বলেন, 'তারা ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে, নগদ টাকা ও মালপত্র লুট করে। এরপর আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়।'

তিনি জানান, তারা গত প্রায় ৫ দিন ধরে বাড়িছাড়া এবং ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন।

তাদের অভিযোগ, স্থানীয় বাবলু ও খাজার নেতৃত্বে কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দিনভর এ হামলা চালায়।

শ্যামল মুর্মু জানান, ১২টি পরিবারের মধ্যে ৭টি পরিবার ইতোমধ্যে এলাকা ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি বা অন্য কোথাও আশ্রয় নিয়েছে। 
সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে, বেশিরভাগ বাড়ি পরিত্যক্ত ও ভাঙচুর। ঘরগুলোতে কেউ নেই।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, ওই জমিটি পাউবো মালিকানাধীন। 

পাউবো রাজশাহীর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা বেলাল উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতি ছাড়া কেউ সেখানে চাষাবাদ বা বসবাস করতে পারে না।'

অভিযুক্ত মোহাম্মদ বাবলুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তারা অন্য গ্রাম থেকে এসে এখানে বাড়ি বানিয়েছে। ৩০ জুলাই আমি আমার জমিতে কাজ করতে গেলে শ্যামল আমাকে আক্রমণ করে। এরপরই গ্রামবাসী সেটা মানতে না পেরে তার ওপর হামলা করে।'

জমিটি পাউবোর কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এটা পাউবোর জমি ঠিক আছে। কিন্তু আমরা অনেক বছর ধরে এখানে চাষাবাদ করছি।'

ওসি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, 'উভয় পক্ষ থেকেই অভিযোগ পাওয়া গেছে। এখনো কোনো মামলা হয়নি। প্রাথমিক তদন্তে ভাঙচুরের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এক আদিবাসী ব্যক্তি প্রথমে আক্রমণ করে, এরপরই পরিস্থিতির অবনতি ঘটে বলে জানা গেছে।'

'ঘটনাটি আমরা আরও তদন্ত করছি এবং দোষীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে,' বলেন তিনি।
 

Comments

The Daily Star  | English
A bitter brew: Climate change and the decline of Sylhet’s tea gardens

A bitter brew: Climate change and the decline of Sylhet’s tea gardens

Projections by the United Nations Food and Agriculture Organization (FAO) indicate that tea cultivation areas could shrink by 2050.

7h ago