'ক্লু পেয়েও ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ রাখা হয়েছে'

ছবি: সংগৃহীত

সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক ও নিহত ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বী বলেছেন, হত্যাকাণ্ডের তদন্ত না হওয়ার বা বিচার বন্ধ হয়ে যাওয়ার পেছনের কারণগুলোর সঙ্গে সরকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা, সরকার দলের ব্যক্তিরা জড়িত। তারা বিচার বন্ধ করে রেখেছেন। কেউ সরকার বিরোধী হলে অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে তার বিচার সম্পন্ন হয়।

গতকাল বুধবার রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার বিচার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের মাসিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, 'সাগর-রুনি, তনুর ক্ষেত্রে তারা বলছে, হত্যার ক্লু পাচ্ছে না। তাই বিচার এগিয়ে নেওয়া  যাচ্ছে না। আর ত্বকীর ক্ষেত্রে হচ্ছে বিপরীত। ক্লু পেয়েও তারা সেখানে বিচার বন্ধ করে রেখেছে। তাই ক্লু পাওয়া বা না পাওয়া কোন বিষয় না। প্রশ্ন হচ্ছে, সে সরকার দলের না সরকার বিরোধী। সরকার দলের হলে সরকারের ছত্রছায়ায় থাকবে, তাকে বিচারের আওতায় আসতে হবে না।'

রফিউর রাব্বী আরও বলেন,  'আমরা চাইব এ সরকার একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করুক। এটা হচ্ছে আমাদের সর্বপ্রথম চাওয়া। এরপর বেঁচে থাকার অধিকার, বিচার পাওয়ার অধিকার, খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা। একটি গণতান্ত্রিক সরকার ছাড়া এসব হয় না। আমরা ত্বকীসহ সাগর-রুনি, তনু হত্যার বিচার চাই।  নারায়ণগঞ্জে আশি^ক, চঞ্চলসহ যেসব হত্যা সংগঠিত হয়েছে, সব হত্যার বিচার চাই।'

নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্য সচিব হালিম আজাদ বলেন, 'আমরা বার বার বলে এসেছি, র‌্যাবের তথ্য অনুযায়ী আজেমেরী ওসমানকে গ্রেপ্তার করতে হবে এবং তাকে হত্যার নির্দেশদাতা শামিম ওসমানকে গ্রেপ্তার করতে হবে। কিন্তু উল্টো বিচার বন্ধ করে রাখা হয়েছে। সরকার দলীয় এমপির সংশ্লিষ্টতার কারণে বিচার বন্ধ হয়ে আছে।'

২০১৩ সালের ৬ মার্চ বিকেলে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী নারায়ণগঞ্জ শহরের শায়েস্তা খান সড়কের বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। পরে ৮ মার্চ সকালে চাড়ারগোপে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে তার মরদেহ পাওয়া যায়।

ত্বকী হত্যা মামলার আসামিদের মধ্যে ৮ জন পলাতক। আর ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে ২ আসামি ইউসুফ হোসেন লিটন ও সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

নিখোঁজের একদিন পর ও মরদেহ উদ্ধারের একদিন আগে ৭ মার্চ এ লেভেল পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছিল। ত্বকী পদার্থবিজ্ঞানে ৩০০ নম্বরের মধ্যে ২৯৭ পেয়েছিল, যা সারাদেশে সর্বোচ্চ। এছাড়া ও লেভেল পরীক্ষাতেও সে পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়ন পরীক্ষাতে দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিল।

হত্যাকাণ্ডের ৯ বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত এ মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি।

Comments

The Daily Star  | English
Yunus, Charter, and Our Future

Yunus, Charter, and Our Future

Can the vision for 'New Bangladesh' ignore the poor, farmers, workers, youth, women, or employment and climate crises?

8h ago