গ্রিসে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, বাংলাদেশিদের দুর্ভোগ

গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে একটি দোকানে নিত্যপণ্য কিনতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিরা। ছবি: মতিউর রহমান মুন্না

অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের মতো গ্রিসেও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এখন সাধারণের সামর্থ্যের বাইরে। লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে আয়ের তুলনায় ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরাও। বিক্রি কমে গেছে বাংলাদেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও।

করোনা মহামারির ধাক্কা সামাল দেওয়ার পর এবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দ্রব্যমূল্যের বাজারের বেসামাল পরিস্থিতি। প্রতিনিয়তই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। ফলে, দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন নিম্ন আয়ের ও কর্মহীন মানুষ।

গত সপ্তাহে প্রকাশিত জেনারেল কনফেডারেশন অব গ্রিক ওয়ার্কার্সের শ্রম ইনস্টিটিউটের নতুন অর্থনৈতিক উন্নয়ন বুলেটিনে গ্রিসে শ্রমিকদের ক্রয় ক্ষমতা ৪০ শতাংশ কমেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে কর্মীদের ক্রয়ক্ষমতা ও তাদের জীবনমানকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করেছে। প্রধানত জ্বালানি ও খাদ্যের মতো মৌলিক জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির কারণে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি তারা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যাদের মাসিক আয় ৭৫০ ইউরোর কম, তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে ৪০ শতাংশ। এ ছাড়া, প্রতি মাসে ১ হাজার ১০০ ইউরো গড় আয়ের পরিবারের ক্রয় ক্ষমতা কমেছে ৯ শতাংশ থেকে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত।

গ্রিসে প্রায় ৩০ হাজার বাংলাদেশি বসবাস করেন। তাদের মধ্যে সিংহভাগই অনিয়মিত। নতুন যারা এসেছেন তাদের অনেকেরই কাগজপত্র নেই। ফলে, তারা শহরে কোনো কাজ করতে পারেন না। তাদের অবস্থাই বেশি নাজুক। এ ছাড়া, যারা পরিবার নিয়ে গ্রিসে রয়েছেন তারাও সংকটে পড়েছেন।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, যে ৪৫ ইউরো দামের চালের বস্তার বর্তমান দাম ৫৫ ইউরো। ১৫ ইউরোর গ্যাস কিনতে হচ্ছে ১৯ থেকে ২০ ইউরো, ৭ ইউরোর ৫ লিটার তেলের বোতল কিনতে হচ্ছে ১১ থেকে ১২ ইউরো দিয়ে।

বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রপথে আমদানি করা পণ্যের দামও বেড়েছে। কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে যে কন্টেইনার খরচ হতো ২ থেকে ৩ হাজার ইউরো, তা এখন ৩ থেকে ৪ গুণ বেড়েছে।

গ্রিসে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী রুবেল আহমদ বলেন, 'বাসা ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল আর বাজার খরচ মিলিয়ে এখন ছোটখাটো ব্যবসা বা চাকরি করে পরিবারের ব্যয় নির্বাহ করা অসম্ভব ব্যাপার। বাচ্চাদের পড়ালেখার খরচসহ সবকিছুর খরচ বেড়েছে।'

বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিসের সহসভাপতি শাহনূর রিপন বলেন, 'ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পর থেকে ভোজ্যতেল থেকে পশুখাদ্য— সবকিছুর দাম বাড়ছে। যারা প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী আছেন তারা হয়তো এতোটা খারাপ পরিস্থিতিতে পড়েননি। কিন্তু যারা নিম্ন আয়ের বা কর্মহীন তারা পড়েছেন বেকায়দায়।'

লেখক: গ্রিসপ্রবাসী সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

Rohingya crisis: Yunus lays out 7-point plan at UN conference

Bangladesh has proposed a seven-point plan for a lasting solution to the Rohingya crisis, urging the international community to adopt a clear roadmap for repatriation and intensify pressure on Myanmar.

4h ago